#পুনর্জন্ম কলমে : গীতালি ৬. আরোগ্য healing :
#পুনর্জন্ম
কলমে : গীতালি
৬. আরোগ্য healing :
“একক বা স্বতন্ত্র আত্মা কখনও ভঙ্গুর হয় না এবং দ্রবণীয় হয় না, জ্বলে না বা ভাঙে না। সে চিরন্তন এবং চিরপরিব্যাপ্ত থাকে। সে অপরিবর্তনীয় এবং সনাতন”—- ভাগবত গীতা ২.২৪
পুনর্দেহধারণের দ্বিতীয় স্তর হল আত্মার আরোগ্য লাভ। এই সময় আত্মা তার পূর্ব জীবন থেকে কিছু দুঃখ, শোকাবহ অভিজ্ঞতা, কোনো অনুশোচনাময় স্মৃতি ইত্যাদির মধ্য দিয়ে যায়… একে বলা হয় ‘আলোর ঝর্ণা’ ( shower of light )। এটি আত্মার মূল রূপের স্পন্দনকে পুনর্নবীকরণ করে ও পুনর্জাগ্রত করে। কিন্তু এও ঠিক যে সকল আত্মারই এই আলোর ঝর্ণার প্রয়োজন হয় না। এই স্তরে পূর্ব জীবনের সকল সম্পর্ক থেকে আত্মা বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করে, এবং পরের জীবনে যাত্রার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। এটিই হল আত্মার দেহান্তরে যাত্রাকালীন আরোগ্যলাভ পর্ব।……..
“যেমনভাবে আত্মা দেহের অভ্যন্তরে চলমান হয়, তার শৈশব থেকে যৌবন, যৌবন থেকে বার্ধক্য পর্যন্ত, তেমন করেই মৃত্যুর পরে আত্মা অন্য দেহে প্রবিষ্ট হয়। ভাগবত গীতা – ২: ১৩
আমাদের আত্মা নিজেই পছন্দ করে নেয়, কেমনভাবে তারা পূর্ব জীবনের পর্যালোচনা করবে। বিবিধ পটভূমিকাদীপ্ত যে জীবন থেকে তারা সদ্য মুক্ত হয়েছে, সেই জীবনকে তারা কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চায়, তা তারা নির্বাচন করতে পারে।
এই স্তরে, যে সকল আত্মার পূর্ব জীবনে নানাপ্রকার অপরাধের ইতিহাস রয়েছে, তারা তাদের পথপ্রদর্শকদের দ্বারা বিশ্লেষিত হয় এবং নতুন পথের পথিক হয়ে সত্বর নতুন দেহে প্রবিষ্ট হতে চায়।
বিশেষত এই প্রক্রিয়া খুব দ্রুত সফল হয় কারণ এই ধরণের আত্মারা নিজেরাই সংশোধিত হওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়.. কর্মকেই একমাত্র পথ বলে মানে।
এই কাজের পথিকৃৎ যারা, তারা পরোক্ষভাবে আরও বেশি পর্যালোচনার দিকে মন দেয় বুদ্ধিমান পথপ্রদর্শক বয়স্কদের (elders and wise ones) সঙ্গে পরামর্শ করে। এই বুদ্ধিমান আত্মাদেরকে বর্ণনা করা হয়েছে দয়ালু ও স্নেহশীল রূপে। তারা কখনোই কঠোর বিচারক নন।
যে প্রতিক্রিয়া আত্মা লাভ করে, তা বেশিরভাগ তার উদ্দেশ্যমূলক পছন্দের এবং তার ক্রিয়াকর্ম অনুযায়ী হয়। এক্ষেত্রে তার উদ্দেশ্য কখনোই বিচার্য হয় না এবং নিন্দার্হ হয় না। এটি তার প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়ার আরম্ভ।………..( চলবে)