বারান্দা আর লোনা জল / কলমের শুভা গাঙ্গুলী
বারান্দা
আর লোনা জল / কলমের শুভা গাঙ্গুলী
আজ ধূলিধুসরিত অনাদরে অর্পিত
বারান্দার কোণে,
অহংকার , বিনয় , মমতা, হিংস্রতা সব মিলেমিশে একাকার ,
রোজ সকালে কাজের মাসী
সাফ করতে এসে,
এক কোনে রাখা
জডোসডো হয়ে বসে থাকা মেহগনি কাঠের খাট বিছানা ,ড্রেসিং টেবিল,
তাদের বকাবকি করে,
অবগুণ্ঠিত তারা
মুখ চুন করেই থাকে,
তবু গালাগালি শুনতেই হয়,
বিস্তর বকাবকি করে এদের সবাইকে
কেন যে পড়ে আছিস তোরা?
কিসের মায়ায়?
কি জ্বালা এদের নিয়ে,
আসল কারণ টা তা নয়,
রোজ রোজ জল জমে বারান্দায়,
কেউ জানে না , কেমন করে হয়,
বিজ্ঞানের বিচিত্র সূত্রে
দুনিয়ায় কোনো কিছুই নিঃশেষ হয় না।
রূপ পরিবর্তন হয় মাত্র।
দেউড়ির পাশে বড়ো বারান্দা,
নাচ গান হয় সকাল সন্ধ্যা ,
বেনারস হতে রূপসী বাইজি আসে,
সুন্দরী তারা সু দেহিনী সব ,
তাদের দেখলে ওঠে কলরব,
রোজ রাতে তারা মজলিসে এসে বসে,
রাজা বাবু যিনি তাঁর ও তো আছে স্পেশাল একজন যান তারই কাছে,
তাঁর যিনি রানী একলা ঘরেতে থাকেন ,
সুন্দরী তিনি অপরূপ দেহ ,
কে বা সেটা দেখে যায়ই না তো কেহ,
রাজা কবে আর রাণীর খবর রাখেন।
সবই কি তাহলে অবিনশ্বর?
আয়নায় প্রতিবিম্বিত এক অনিন্দ্যসুন্দর মুখ,
ভালোবাসা, প্রেম
তাহলে তাকে নিশ্চিত মৃত্যুর
হাতে সঁপে দিয়ে
কি করে চলে গেলো?
সেই অকৃতজ্ঞ বংশীবাদক
সারারাত খোলা আকাশের নীচে
তাকে প্রতিক্ষায় রেখে,
তারপর,
গুদামঘরের চারদেওয়ালে
মৃত্যুর অপেক্ষায় বন্দী?
অনেকেই জানে না অনেক দূরে
জমিদারের পুরোণো বাগানবাডীতে
কুয়োর ভেতর থেকে পচা গলা
একটা লাশ
যার পরিচয় জানা যায় নি,
ঘর মোছার মাসী অনেক কম্প্লেন করেছে রোজ বারান্দায় এত জল
কেন আসে,
অবশেষে আরকিটেক্ট মেজকর্তার সেজছেলে,
অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর,
কনক্লুশনে জানালে,
স্যালাইন ওয়াটার ,সোর্স আননোন ,ফার্নিচার নষ্ট করে দেয়,
বাড়ীর ভিত সেটাও।