শেষ নিঃশ্বাস শিখা গুহ রায়
শেষ নিঃশ্বাস
শিখা গুহ রায়
দিন শেষে খুব একলা
রাস্তার ধারে আলো জ্বলা খুঁটির মত
ফিকে হয়ে যাওয়া সকল অপেক্ষা!
সেই মানুষ এখনও এলো না।
কড়ার গায়ে খুন্তিটা
আজ একটু বেশি রকম নড়ছে।
ফ্যান গালতে গিয়ে
পা-টা পুড়ে গেল।
দগদগে ঘা নিয়ে
জানালার দিকে মুখ করে
মাদুরে বসে আর ভাবে
সামনের ইতিহাস।
প্রতিটা পাতা খোলা চোখের সামনে
ঘড়িতে টিকটিক শব্দ,
কলে জল পড়ছে টুপটুপ।
পাশের বাড়ির পাঁচিল থেকে
লাফিয়ে নামল
একটা গোঁফওয়ালা বেড়াল।
মুখে তার হিজিবিজি বিরক্তি
একগুঁয়ে জীবন
যতক্ষণ মানুষটার মুখ দেখা না হচ্ছে
নড়বে না পণ করেছে।
এখন বয়স হয়েছে
কেবলই ঘর ভুল করছে।
খুট খুট করে শব্দ করে
দরজার ছিটকিনি খোলে আবার লাগায়।
হঠাৎ চাপা গলিটা ধরে
দরজায় ছেলেটা দাঁড়িয়ে,
কড়া নেড়ে বলছে, “এসে গেছি
দড়জা খুলো দেখ আমি এসেছি।”
কিন্তু আর দরজা খুলা হয় না
অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর
রাগে ক্ষোভে লাথি দিয়ে দরজা ভেঙে
ঘরে ঢুকে প্রথমেই চোখ পড়ে
মাদুরে পড়ে থাকা নিথর দেহে।
হায় সেইতো এলে সব শেষ করে
অর্ধগলিত লাশের সামনে
নিজেও শেষ নিঃশ্বাস ছাড়লো ছেলেটি।