চৌধুরী বাড়ির ঘট বিসর্জ্জন — লেখিকার নাম- বাবিয়া নন্দী
উপন্যাসের নাম-চৌধুরী বাড়ির ঘট বিসর্জ্জন
লেখিকার নাম- বাবিয়া নন্দী
পর্ব-৩ (তৃতীয় পর্ব)
ধারাবাহিক।
চৌধুরী বাড়িতে তো রথের আগে থেকেই পূজোর আয়োজন কি হবে,কিভাবে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হবে,মায়ের পূজো বলে কথা,সেখানে কি ত্রুটি হলে চলে নাকি!তাই যুগ যুগ ধরে ওই রথের খুঁটি পোতার সময় থেকেই পূর্বপুরুষের আমল থেকে হৈ হৈ চৈ চৈ শুরু হয়।আর তা থামে কোজাগরী লক্ষী পূজো উতরোলে।তবেই সকলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।আজও তার ব্যতিক্রম হোতে দেন না শশীভূষন বাবু।আমরা সকলেই জানি পতিতাপল্লীর মাটি ছাড়া দেবী দূর্গার পূজা হওয়া দুঃসাধ্য। আর এই বাড়ির প্রথানুযায়ী চলে আসছে সূদুর “বেনারসের বাঈজি বাড়ি” অর্থাৎ সেখানকার পতিতা পল্লীর মাটিই মুলত লাগে পরিবারিক দূর্গাপূজায়।সকল পরিবারের কথা জানা নেই।তবে এই পরিবারে এমনটাই হয়ে আসছে দীর্ঘ কাল যাবৎ।যিনি এই পরিবারে দুর্গা পূজা প্রথম শুরু করেন,তাঁর আমল থেকেই এই নিয়মের কোনো নড়চড় হয় না।আর এই কাজ টা বরাবর করে থাকে বিমল বিশ্বাস এর একমাত্র পুত্র রাজেশ বিশ্বাস।কিন্তু কোনো কারণবশতঃ সে অনুপস্থিত থাকার ফলে এখন কে যে এই দায়িত্ব টা যথাবিধি পালন করবে তা নিয়ে চৌধুরী পরিবারের মধ্যে একটা অনভিপ্রেত বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়।অবশেষে,শশীভূষন বাবুর কনিষ্ঠ পুত্র সত্যই এই দায়ভার বহন করবে বলে স্থির করেন ও সকলকে তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্ত জানান।প্রথমে সকলেই গররাজী থাকলেও এ ছাড়া কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে শশীভূষন ছেলেকে কাজটি করার সম্মতি প্রদান করেন।সত্য ছোটোবেলা থেকেই ভীষণ সাহসী ও Adventurers প্রকৃতির।তাই সে তার পিতার পদধূলি মাথায় নিয়ে বললেন,বাবা,বেনারস যখন যাচ্ছি তখন সেখানে আমার এক বন্ধুর বাড়ি।কিছুদিন কাটিয়েই নয় আসা যাবে।আর এখন তো সবে আষাঢ় মাস।হাতে ঢের সময় রয়েছে।শশীভূষন প্রত্যুত্তরে বললেন-“দ্যাখো বাবা সতু,তুমি ছেলেমানুষ,দায়ওত্ব যখন নিয়েছো,তখন আমার মান রেখো।অর্থাৎ অধিক বিলম্ব যেন না হয়। ঠিকমতোন রথের আগেই আশা রাখছি বাড়ি ফিরে আসবে।”
ক্রমশ(চলবে) বাবিয়া।