প্রণাম “সুকুমার রায়” ©শ্বেতা ব্যানার্জী

প্রণাম “সুকুমার রায়”

©শ্বেতা ব্যানার্জী

পৃথিবীতে সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো ব্ল্যাকহোল, এই ব্ল্যাকহোল থিওরি নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই,যতটা মাথা ব্যথা এই মায়াময় ফেসবুকে ছোটগল্প লেখা। হ্যাঁ একটা মিল আছে কৃষ্ণগহ্বরে ‘র সাথে, সেটা মস্তিষ্কের গহ্বর থেকেও কোনো আলোর বিচ্ছুরণ আমারও হয়না।

তবে যেকথা বলছি… ছোট্ গল্প, না, গল্পকে ছুটিয়ে মারার ইচ্ছে আমার কোনদিনই নেই কারণ আমি গল্প লিখতে পারিনা। তবুও গল্প আমাকে দেখলেই ছুটতে থাকে। যত বলি ওরে থাম,থাম, কে শোনে সে-কথা।
আমি পিছনে পিছনে দৌড়াই আর বলতে থাকি “পাকড়ো, পাকড়ো,পাকাড় কে লা দো” আমার হিন্দি শুনে সে আরও জোর দৌড়….
আমিও আর পারছিলাম না,এক জায়গায় থমকে বসে পড়ে হাঁফাতে থাকি,তখনই মেদের গুতোয় মেদিনী’র কম্পমান অবস্থা, এমতো অবস্থায় শুনি টুকিইইই…
কইরে বিচ্চু? আমি এখানে—
আমি তাকিয়ে দেখি মগডালে, বলি বাবা নেমে আয়..চারটাকা’র লজেঞ্চুস কিনে দেবোই দেবো।
সে বলে উহু,আবদার! এখন এসব লজেঞ্চুসে চলেনা। এখন সবাই পিৎজ্জা,বার্গার,হটডগে..
তাই-ই বুঝি! তা.. আমি বাপু বাপ জন্মে এদের নাম
শুনিনি, খাওয়া তো দূরস্থান।
শোন নি!! ফুঃ…
তুমি আবার গল্প লিখতে চাও!? শোনো, তুমি যখন অসাধারণ কিছু লিখতে পারো না,তখন
আধুনিক মনস্ক গল্প লেখার চেষ্টা করো,
সেটা …কিভাবে!!
শুদ্ধ বাংলা একদম নয়, মিশেল বাংলা।
নিজের মাতৃভাষা ভুলে! ভুলবে কেন! ভুষি মেশাবে। যত ভুষি মানে ফাইবার, তত হজমের সহায়ক।
সে কিরকম শুনি,
ধরো তুমি গেছো দীঘা, তুমি লিখবে এখন আমি গোয়ায়। জাস্ট ব্রেকফাস্ট সারলাম, এরপর জিমে যাবো, আজ ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে মিট করবো অরুনেশের সাথে, তার আগে স্পা তে, ভুলেও সেলুন লিখবে না, স্যাঁলো লিখবে, আধুনিক হতে হবে কথাবার্তায়, কলমে,
ও বাব্বা, এতো পুরো মিথ্যে, হ্যাঁ….
রুমালের থেকে বেড়ালের কথা “কবি সুকুমার রায় “কবে বলে গেছেন —-
উনি কত বড় মাপের ভবিষ্যদ্বক্তা ছিলেন বলো,
আর তুমি এখনও রুমালের খুঁট ধরে!!
আমি বললাম বুঝলাম, বুঝলাম, কিছু আধুনিক উচ্চারণে ইংরেজি, কিছু আধুনিক ভাবধারা, কিছু
হিন্দেজি।
একদম, একদম, এইতো বুদ্ধি খুলছে,
হঠাৎ শুনি,ম্যাঁও…..
আরে!! এখানেও সেই ” হ য ব র ল”, আমি বললাম
তুমি তো চরিত্র ছিলে বইয়ের, তবে এখানে কী করে!
কী করে মানে! সারাজীবন বইয়ের পাতায় থাকবো
তোমরা কি আমাকে নিয়ে কিছু ভাবছ, রুমাল থেকে লেখক বেড়াল করে কবেই মুক্তি দিলেন, আর তোমরা কারো মুখোশ খুলে বলো ঝোলা থেকে বেড়াল বেরুলো, তারপর প্রথম রাতেই বেড়াল মারতে হয়। আরও অনেক কিছু….
তবে জেনে রাখো এখন আমার নাম চন্দ্রবিন্দু নয়।
বিসর্গ (ঃ), মানে তোমাদের এখনকার এই জীবনযাত্রার বিন্দুবিসর্গ কিছু বুঝতে না পেরে
নিজের নামই পাল্টে নিয়েছি।
আমি মনে মনে ভাবছি ঘাট হয়েছে, এই গল্প লেখার সাধ ‘কে চিরতরে অপাঠ্য করে ছাড়বো।
হঠাৎ দেখি কাঁঠাল পাতা চিবতে চিবতে হাজির এক রামছাগল, বললো কি হলো, আমার কথা ভাবছ বুঝি।
খামোখা তোমার কথা ভাব্বো কেন?
না…আসলে তোমার আর আমার বুদ্ধির বহর তো
প্রায় সমান–
আর মানুষও এখন আমার মতন সবকিছুই একবার চিবিয়ে দেখে নিচ্ছে,
“ব্যাকরণ সিং বি এ খাদ্যবিশারদ” হয়ে ওঠার তাগিদ নিয়ে। আমি চোখ কটমট করে তাকাতেই, শুনি কে যেন বলে উঠলো ঝগড়া নয়, এখানে সময়ের দাম খুব। মাগ্যিগণ্ডা’র বাজারে খুব হিসেব করে সময় খরচ করো।
আমি তখন ভাবলাম সত্যিই তো, কেন মিথ্যে সময় অপচয় করি গল্প লেখার ঝোঁকে!
উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে ‘শব্দের ডি এন এ টেস্ট’ করার কি দরকার!?.
তার চেয়ে ভালো একের নামতা মুখস্থ করি,যেটা সহজ হবে….।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *