ঘেঁ টে ‘ঘ’ প্র জা ত ন্ত্র দুলাল কাটারী

ঘেঁ টে ‘ঘ’
প্র জা ত ন্ত্র
দুলাল কাটারী
প্রায় সকল মানুষই মাঝেমধ্যে বলে বসেন ‘আমাদের ছোটোবেলা ছিলো বেশ অন্য রকম।’ এর কারণ হতে পারে সত্যিই তাদের ছোটোবেলা অন্য করমই ছিলো; এবং সেটি যুগের বিবর্তনে এমন রূপ নিয়েছে যে তার মধ্যে আর নিজের ছোটোবেলাকে খুঁজে পাচ্ছেনা না।
অথবা এটাও হতে পারে যে ঐ মানুষটি তার ছোটোবেলা শেষ করে ফেলেছেন নিজেই।অর্থাৎ বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ফেলেছেন। নিজের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক চাহিদা গুলো এমন মাথাচাড়া দিয়েছে তার নিজের অন্তরেই যে,সে আর ছোটোবেলা খোঁজর মতো সময় পায় না বা খোঁজার তাগিদও অনুভব করে না।
এবিষয়ে বলতে চাইছি তার কারণ আমাদের ছোটো বেলার প্রজাতন্ত্র দিবসের উজ্জ্বলময় দিন গুলিকে অবশ্যই স্মরন না করে পারছি না আজকের দিনে।সকলে সকাল সকাল স্কুলে গিয়ে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে, ফুল ছিটিয়ে, মালা পড়িয়ে দেশপ্রেমিকদের স্মরন করা, সারাদিনের অনুষ্ঠানে থাকতো নানান দেশপ্রেমিকের মহৎ কাজের বিবরণ,এতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দেশপ্রেমের অনুপ্রেরণা জাগরিত হতো। সবশেষে সমাপ্তি সংগীতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করা এবং মিষ্টিমুখ করে বাড়ি ফেরা।এইসবই মনে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করছে। হয়তো এবছর করোনার জন্য এইসব কিছুই কিছুটা ফিকে মেজাজে হলেও হয়েছে। কিন্তু সেই সঙ্গে দিল্লির কৃষক আন্দোলনকে ঘিরে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলিও টিভি পর্দায় ভেসে উঠছে বারবার। পৃথিবীর বৃহত্তম প্রজাতান্ত্রিক দেশ তার প্রজাতন্ত্র দিবসে এরূপ নজিরবিহীন ঘটনার স্বাক্ষী মনে হয় ইতিহাসে আর কোনো দিন হয় নি।
যাইহোক এবারের প্রজাতন্ত্র কিন্তু ভাবিয়ে তুলছে সবাইকেই। সমাজের উুঁচু তলা থেকে নিচু তলা;বৃদ্ধ থেকে মধ্য বয়সী ;বাচ্চারাও কিন্তু বাদ রইলো না।
হতে পারে ইন্টারনেট,মুঠোফোনের যুগে সকলেই সব খবর পেয়ে যাচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি। অল্প বয়সী ছেলেমেয়ে যারা একটা সুষ্ঠু প্রজাতান্ত্রিক দিবসের মধ্য দিয়ে অনুপ্রাণিত হতেই পারতো কিন্তু তাদেরকেও যেন ভাবিয়ে তুলেছে সমকালীন ভারতীয় সমাজ তথা রাজনৈতিক পরিস্থিতি। তাহলে তারা তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে এই গৌরবান্বিত দিনের পরিচয়ে কোনো দৃষ্টিকোণ উপস্থাপন করবে ভবিষ্যতে সেটা কিন্তু ভাবার বিষয়।
সবচেয়ে বড়ো কথা হলো এই রকম একটা মহিমান্বিত দিনে উশৃংখলা সৃষ্টির পিছনে দায়ী কে?
তাহলে কি কেউ সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার অধিকারে সত্যিসত্যিই হস্তক্ষেপ করলো? নাকি গান্ধির দেশের মানুষ শান্তি পথে আন্দোলনের গুরুত্ব হারিয়ে ফেললো? এটা হতে পারে কি আন্দোলনকারীরা ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে দিতে অধৈর্য্য হয়ে পড়লো? তা যদি নাই হয় তাহলে কি মানুষ দিকভ্রান্ত হয়ে পড়লো? এই দিকভ্রান্তদের দিশা কেই-বা দেখালো? এই দিশাহারা উশৃংখলদের আসল পরিচয়ই বা কি?
নাকি আমরা একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত বাঙালী তথা ভারতীয় হিসেবে বেশি করে সামাজিক রাজনৈতিক চিন্তা নিয়ে মেতে উঠলাম যার জন্য আমরা শান্তি পাচ্ছি না কিছুতেই?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *