শিরোনামহীন ————- রূপালী মুখার্জি
শিরোনামহীন
রূপালী মুখার্জি
দু হাতে আলোর অঞ্জলি নিয়ে শারদীয়ার আকাশ খিলখিলিয়ে, কাশফুল মাথা নাড়ে চামর দুলিয়ে,সদ্যফোঁটা শিউলি ফুল উঠোনময়, তবুও কোথাও যেন খামতি, হারিয়ে গেছে দামাল উচ্ছাস,এ বছর কেউ তর্পণ করেনি গঙ্গার ঘাটে,গঙ্গা নিঃশব্দে কেঁদে চলে চাঁদের জোছনার কাছে,মন খুঁজে চলে পুরোনো কিছু সোনা গলানো দিনের ছবির, স্মৃতি রা পাতা খুলে আঁকতে বসে আশ্বিনের সকাল। গগন পটুয়া একমনে মায়ের চোখ এঁকে চলে,সে চোখে কেবলি বিষাদ ঝরে ঝরে পড়ে,মনে হয় একরাশ শ্রাবন আঁচল পেতে বসে আছে,। এখনও কি নীলকন্ঠ পাখি ঠাকুর দালানে এসে বসে,আমি তার ঝরে পড়া পালকে মায়ের কান্না দেখেছি।ঢাকের বায়না নিতে এসে ঢাকি ফিরে গেছে তার না খেতে পাওয়া গ্ৰামে,তার চোখে ছিল নদীর কান্না,ডুকরে উঠেছিল মা মাগো সব শেষ কইরে দিওনা গো,ছেলে পিলান গুলো মইরে যাবে যে,।মনে পড়ে সেই কবেকার বেলুন ওয়ালার কথা,খুশির মনছোপানো আনন্দের গল্প,শিশুমন জানালার শার্সি ধরে চেয়ে থাকে, খেলার মাঠ ডেকে ডেকে ফিরে যায়।কত কত মৃত্যুর মিছিল অমৃত লোকে, তোমার খেরোরখাতায় তার হিসেব নিকেষ, তোমার বুকে যে ক্ষত সে তো আমাদের ই সৃষ্টি,মন শুধু মন কে বলে। আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণ তলে,। আবার হাসুক মাগো নিরন্ন মুখ, ভোরের শিশির মেখে,বাড়িয়ে দিও তোমার হাত,এ ক্ষত মুছে দিতে, আবার জাগুক শহরের অলিগলি,চেনা ছন্দের পথে,ট্রেন ছুটে যাক গভীর রাতে, নামহীন নদীর সাঁকো তে চেপে, আবার খুলুক স্কুলের দরজা,ছোট্ট পায়ের রাঙা ধুলো মেখে,ভরুক বাতাস চেনা কাশফুলে,অপু দুর্গার বিষ্ময়ে, আবার কবি তুমি লেখো শিরদাঁড়া সোজা করে,,এ বছর আমরা সবাই ঘরে,লহো অঞ্জলি মনে মনে।।।।