ভাঙ্গা সেঁতু ————– সুমিতা মুখোপাধ্যায়
ভাঙ্গা সেঁতু
সুমিতা মুখোপাধ্যায়
কিছু কিছু দিন
মানুষের একা থাকার অধিকার হরণ করে নেয়,
মুখর করে তোলে,বাইরে ,ভিতরে।
জঠিল শেকড় ছড়িয়ে বৃক্ষ -জীবন, একাকী।
একা
একা
অরণ্য গভীরে ভীষণ
এক অদ্ভুত একাকী জীবন।
প্রাগৈতিহাসিক পাথরের গায়ে লেপ্টে থাকা শাওলার মতো বুকের
পাঁজরে লেখা হয় শ্রান্তিহীন
হাজারো বেদনার আখ্যান।
বিবাগী বাষ্পের মত উবে যায় দেহগত সুখ,
বড়ই ক্ষণস্থায়ী
জানি, তবু বহতা নদীর কাছে
অনাদরে ঝরতে থাকা শুকনো পাতার ঘূর্ণের কাছে
ঘামে ভেজা বুকের মায়াঘ্রাণের কাছে
মাটির অন্তর্গত প্রেমের কাছে আমার ঋণ।
নদীর বুকে আঁকা পূর্ণিমার চাঁদ রূপালি ঢেউ
তার আপন হয়েছে কি কখনো, অক্ষয় কিছু?
হয়নি জানি,তা হবার নয়।
প্রতিটি জীবিত মানুষই বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হয়ে বাঁচে
নিজস্ব জগতে,
অচেনা আঁধার এক
আনমনা রাতের গল্প লিখে যায় কবোষ্ণ জলে,জানি …
প্রবল বর্ষণে বালিভরাক্রান্ত এ মাটি আর শেকড় ভালোবাসা
অবিরাম আলগা হওয়ার গান গেয়ে যায় …
মরণের মতো এক অতলান্ত ঘুমে
তলিয়ে যাবার আগে
একমুঠো আবির রোদ্দুর
সুষুম্নাকাণ্ডের গভীরে
এক অনির্বচনীয় শিহরণ জানিয়ে দেয়
আমার মৃত্যুর দরবেশে
আমি এক পিরামিড।
এবার আমার যাওয়ার সময় এসেছে
খুব সহজেই যন্ত্রনা চিবিয়ে খেতে শিখে গেছি।