৯৫% সফল মিশন চন্দ্রযান ২, আশার কথা শোনালেন বিজ্ঞানীরা
৭ই সেপ্টেম্বর, বেঙ্গালুরুঃ ইসরোর অন্দরমহলে এখন চূড়ান্ত হতাশা। এতদিনকার গবেষণা জলে গেল! এত চেষ্টার পরও চাঁদের পিঠে নামতে পারল না বিক্রম। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ২.১ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পেরেছিল ইসরো। তারপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মুষড়ে পড়ে গোটা দেশ। কিন্তু চন্দ্রযান ২ অভিযানকে কি সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলা যায়? একেবারেই না। এমনই মত বিশেষজ্ঞদের। বিক্রমের কী হল, তা এখনও জানা যাচ্ছে না, তা ঠিক। কিন্তু দু’দিন পর মিললেও মিলতে পারে সুখবর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একশো শতাংশের মধ্যে ৯৫ শতাংশই সফল অভিযান। কারণ, বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে গেলেও এখনও অরবিটারটি অক্ষতই রয়েছে। চাঁদের কক্ষপথে সফলভাবেই প্রদক্ষিণ করছে সেটি। মুন মিশনের মেয়াদ একবছর। বিজ্ঞানীদের আশা, আগামী এই একটা বছর চন্দ্রযান ২ থেকে একগুচ্ছ ছবি আসবে ইসরোর গবেষণা কেন্দ্রে। মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাবে সেগুলি। সেই ছবিতে ধরা পড়তে পারে ল্যান্ডার বিক্রমের শেষ পরিণতি। আদতেও কি সেটি ধ্বংস হয়েছে? নাকি সংযোগ বিছিন্ন অবস্থাতেও নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিক্রম? জানা যাবে তাও। যদি ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান নষ্ট হয়ে গিয়েও থাকে, তাতে মাত্র ৫ শতাংশ ক্ষতি হতে পারে। অভিযানের বাকি ৯৫ শতাংশ সফল বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
চন্দ্রযান ২ নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই চড়ছিল উত্তেজনার পারদ। রাত ৯টা নাগাদই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পৌঁছে গিয়েছিলেন ইসরোর সদর দপ্তরে। রাত যত বাড়ছিল, তত বাড়ছিল টেনশন। শেষমেশ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মাত্র পনেরো মিনিট পরেই ইতিহাস গড়তে চলেছিল ভারত। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও যখন কোনও সংকেত এসে পৌঁছল না সকলের মুখেই ঘনাল ছায়া। ISRO টেলিমেট্রি, ট্র্যাকিং এবং কমান্ড নেটওয়ার্ক কেন্দ্রের পর্দায় দেখা যাচ্ছিল গোটা অভিযানটি। সেখানেই দেখা যায়, বিক্রম তার নির্ধারিত পথ থেকে কিছুটা বিচ্যুত হওয়ার পর যোগাযোগটি হারিয়ে যায়। অর্থাৎ অবতরণ সফল হয়েছে নাকি বিফল তার কোনওটাই বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে হয়তো কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাওয়া যেতেও পারে সুখবর। আপাতত সেই আশায় সময় গুনছে গোটা ভারত।