আবার এক জটিল অস্ত্রপ্রচারে নজির সৃষ্টি করলো বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল
২রা জুন, বালুরঘাটঃ যখন বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রসূতি মায়েদের সঙ্গে খারাপ ব্যাবহার ও মা এবং শিশু মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হবার ঘটনা সামনে এসেছে, তখন ঠিক উল্টো চিত্র ফুটে উঠলো বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে। পর পর দুটি মাকে মৃত্যুর সামনে থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এলো এই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ রঞ্জন কুমার মুস্তাফি। তিনি গত প্রায় এক মাসে জটিল অস্ত্রপ্রচার করে দুই দুইটি মায়ের জীবন বাঁচালেন। দুইটি ক্ষেত্রেই পেটের ব্যাথা নিয়ে রুগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, শুরুতে গ্যাস্টিক বা অন্য সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা হলেও পরে ডাঃ রঞ্জন কুমার মুস্তাফি চিহ্নিত করে অন্য সমস্যার কথা। গতকাল একি ভাবেই বালুরঘাট হাসপাতালে আসা হিলির দীপা বর্মণের চিকিৎসা হয় প্রথমে গ্যাস্টিক সমস্যা নিয়ে।পরে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রঞ্জন কুমার মুস্তাফি চিহ্নিত করে মহিলার পেটে ব্যাপক রক্তপাতে সমস্যার সুত্রপাত, দেহে রক্তশূন্যতাই রুগীপ্রায় মৃত্যুসজ্জায়। তড়িঘড়ি তাকে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলে দেখা যায়, মহিলার পেটে দুইমাসের দুই যমজ সন্তানের ভ্রূণ তৈরি হয়েছে, যা জরায়ুতে গর্ভসঞ্চার না হয়ে তা টিউবের মধ্যেই বড় হতে শুরু করে, দুইটি সন্তান ক্রমেই আবারে বড় হবার কারনে পেটের ব্যাথায় কাতর হয়েছিলেন মা দীপা বর্মণ, কিন্তু একটা সময় ভ্রূণের আকার বড় হবার কারনে ফেটে যায় টিউবটি, যারফলে ব্যাপক হারে রক্তপাত ঘটে মহিলার পেটে, দেখাদেয় মহিলার শরীরে রক্ত শূণ্যতার। অস্ত্রপ্রচারে দেখা যায় প্রায় দুইলিটার রক্ত জমা হয়ে আছে ঐ মহিমার পেটে। দেওয়া হয় চার ইউনিট রক্ত। অবশেষে প্রায় কয়েক ঘন্টার এই জটিল অস্ত্রপ্রচারে স্বাভাবিক হয় মহিলার জীবন। ঘটনায় খুসির হাওয়া দীপা বর্মণের পরিবারে। পেশায় কৃ্ষক স্বামী গোপাল বর্মণ আমাদের জানান প্রথমে তার স্ত্রীর প্রচন্ড পেটের ব্যাথা অনুভব করায় গ্যাস্টিক সমস্যার চিকিৎসা করা হলেও কোন কাজ হয়না। পরে বালুরঘাট হাসপাতালের ডাক্তার বাবু ও নার্সদের সহযোগিতা ও প্রচেষ্টায় তার স্ত্রী আবার নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে আমাদের জানান বালুরঘাট হাসপাতাল সারা রাজ্যে একটা নজীর তৈরি করেছে, দুই একটা ঘটনা অনেক সময় অন্য রকম হলেও একের পর এক জটিল অস্ত্র প্রচারের মতো ঘটনায় বহু রূগী তার জীবন ফিরে পেয়েছে, আগে এই সহ অস্ত্রপ্রচারের জন্য রুগীকে হয়তো বাইরে যেতে হতো এখন তার প্রযোজন হয়না। যার ফলে রুগীকে বিনামূল্যে এই বালুরঘাট হাসপাতালের সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল পরিষেবা দিচ্ছে। কমেছে মানুষদের হয়রানি।