হোটেলে চূড়ান্ত হেনস্থা ৪ যুবতীদের, কাঠগড়ায় পুলিশ
২রা মে, দিনাজপুর ডেইলি ডেস্কঃ দল বেঁধে গিয়েছিলেন দীঘা। পরিকল্পনা ছিল জমিয়ে ছুটি কাঁটানোর। তবে তা পরিণত হল তিক্ত অভিজ্ঞতায়। পুলিশের সাহায্য চেয়েও কাজে আসেনি বলে অভিযোগ। তড়িঘড়ি সফর কাটছাঁট করে শহরে ফিরে এসেছেন তাঁরা। কলকাতা ও হাওড়া পুলিশের পদস্থ আধিকারিকের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর অফিসেও অভিযোগ জমা করেছেন শহরের চার যুবতী। ছুটি কাটাতে সম্প্রতি দীঘা গিয়েছিলেন ত্রিশ ছুঁই ছুঁই চার যুবতী। গত শুক্রবার উঠেছিলেন নিউ দীঘার হোটেল আশাতে। রুমের এসি নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা। একইসঙ্গে বাথরুমের সাবান নিয়েও সমস্যা ছিল। তবে অভিযোগ পছন্দ হয়নি হোটেল কর্মীদের। ওই যুবতীদের অভিযোগ, ‘সন্ধ্যার পর অচেনা লোকেরা এসে বিরক্ত করছিল। কেউ দেশলাই বাক্স চাইছিল। প্রথমে পাত্তা দেইনি। তবে রাতে বাইরে থেকে দরজায় ধাক্কা মারা হয়। ভয় পেয়ে টেবিল ও চেয়ার দিয়ে দরজা আটকে রেখেছিলাম। গোটা রাত প্রায় না ঘুমিয়ে কাটাই।’
পরের দিন সকালে হোটেলের ম্যানেজারের কাছে অভিযোগ করেন ওই যুবতীরা। তবে গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিতে চাননি ম্যানেজার। অন্য এক হোটেল থেকে যুবতীদের বন্ধু্রা এলে, তাঁদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার এবং ধাক্কা দিয়ে হোটেল থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকী CCTV ফুটেজ দেখতে চাইলেও তা দেখানো হয়নি। বচসার সময় ফোনে রেকর্ড করা শুরু করলে, তা ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং যুবতীকে পেটে লাথি মারা হয় বলেও অভিযোগ।
অভিযোগ নিয়ে দীঘা পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিলেন ওই চার যুবতী। তবে সেখানে সহযোগিতার পরিবর্তে অভিযোগ না জানানোর জন্য চাপ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তাঁদের। নাম না জানা গেলেও, থানার এক পুলিশ আধিকারিক তাঁদের জানান, রাজ্যে আইনজীবীদের কর্মবিরতির জেরে বিচারকের সামনে বয়ান রেকর্ডে সময় লাগবে। অভিযোগ জানালে ততদিন দীঘাতেই থাকতে হবে ওই যুবতীদের।
গোটা ঘটনায় বিধ্বস্ত যুবতীরা শনিবারই ফিরে আসেন। ‘আমাদের অভিজ্ঞতা এতটাই খারাপ ছিল যে, দ্রুত ফিরে এসেছি। আমার মুখে এখনও ক্ষত রয়েছে, পেটে ব্যথা রয়েছে।’
দীঘার হোটেল আশার মালিক আশিস প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগই খারিজ করেছেন। তাঁর মতে, ‘সমস্যা ছিল। তবে ওরা বাড়িয়ে বলছে। আমাদের মহিলা কর্মীরা ওদের ধাক্কা দিলেও মারধর করেনি। আমরাও পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিলাম। দু’পক্ষকে বসিয়ে পুলিশই মিটমাট করিয়ে দেয়।’ পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভি এস নেসাকুমার জানান, ‘ব্যক্তিগত ভাবে এই বিষয়ে খোঁজ নেব।’
দীঘা-শংকরপুর হোটেল মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সচিব বিপ্রদাস চক্রবর্তী অবশ্য জানিয়েছেন, ‘ওই হোটেলের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ এসেছে। এখানকার পর্যটনের জন্য এটা খুবই খারাপ বিষয়। হোটেলের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’