তৃণমূলকে সরাতে বাম অস্ত্র এখন পদ্ম, এই নীতিতেই বাম ক্ষমতার পুনঃআগমনের স্বপ্নে বাম নেতারা
১৮ই এপ্রিল, বালুরঘাটঃ এক সময় এই জেলার গ্রামে গ্রামে নির্বাচনের আগে বাতাস গরম হতো বাম শ্লোগান, কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচন এই জেলায় এক অন্য বার্তা নিয়ে এলো বামফ্রন্ট। তপন থেকে বালুরঘাট, আবার কুমারগঞ্জ থেকে গঙ্গারামপুর, বাম পালে এবার লেগেছে পদ্ম হাওয়া। কিন্তু এই উল্টা পুরাণ কেন এবার একসময়ের বাম দুর্গে, এই প্রশ্নের উত্তরে গ্রাম শহরের বাম নেতাদের দাবী তারা তৃণমূলকে সরাতে পদ্ম আনতে চাইছে, যার ফলে পাঁচ বছর পরে নাকি এই রাজ্যে বাম ক্ষমতার পুনঃআগমন ঘটবে। এই ভাবনায় ভাসছেন গ্রাম থেকে শহরের নেতা নেতৃত্বরা। জেলার বাম নেতারা অবশ্য এই বিষয় একটা রটনা বলে চালাতে চাইলেও বাস্তব চিত্রটা কিন্তু অন্য, গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই জেলায় বাম ভোটের পরিমান ছিলো ২৮ শতাংশের কিছুটা বেশী, যেখানে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে ভোটের পরিমান ছিলো ২০ শতাংশের সামান্য বেশী, কিন্তু এবার সেই বাম ভোট ভাগ করে পদ্মে ফেলতে চাইছেন কিছু বাম নেতৃ্ত্ব, যাদের যুক্তি এইভাবেই নাকি এই রাজ্যে বাম শাসন ফিরে আসবে। যা নিয়ে অনেক প্রবীন বাম নেতারা কিন্তু অসন্তুষ্ট, তাদের দাবী এই পদ্ধতির সঙ্গে বাম নীতি মেলেনা, এটা কোন ভাবনায় ভাসছেন বাম দল, যেখানে শরিক সিপিআইএম তো আছেই এই জেলায় বাদ নেই খোদ আর এস পির দলের একাংশ। এই ধরনের আত্মঘাতী ভাবনার কারন জানতে আমরা গিয়েছিলাম বালুরঘাটের পতিরাম থেকে বালুরঘাটের বোল্লা তপনের বালাপুর, ভারিলা সহ একধিক জায়গা। যেখানে সিপিআই এম থেকে আরএসপি নেতৃ্ত্বদের মুখে অন্য সুর। তারা বলছে এবার তারা অন্য চিন্তা করছে, কিন্তু কেন এই ভাবনা জানতে চাইলে তারা আমাদের জানান এই জেলা থেকে তৃণমূলের শাসন সরাতে এবার তারা পদ্মের আশ্রয় নিচ্ছে। একি সুরে কথা বলতে দেখা গেলো বালুরঘাট, হিলি, তপন, কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুর সহ একাধিক জায়গার বাম নেতাদের মুখে। এই সব তথ্যের কিছুটা সত্যতা আমরা দেখেছি গত বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে। যেখানে বাম ভোটের একটা বিরাট অংশ বালুরঘাট ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় স্থানান্তর হয়েছিলো বিজেপি শিবিরে, যার ফলে এই সদর ব্লকে তৃণমূলকে হারাতে হয়েছিলো বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত। কিন্তু এবার লোকসভা নির্বাচনেও সেই সব এলাকায় শুধু নয়, এই হাওয়া ছড়িয়েছে অন্যত্র। যার ফলে বাম ভোটের প্রায় ১২ থেকে ১৫ শতাংশ কিম্বা তার বেশী হারাতে হতে পারে এই জেলায় বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও এই জেলায় তাদের দাবী এই শতাংশ যদি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হয় তবে শাসক তৃণমূলের কিন্তু একটা বড় চিন্তার বিষয় তৈরি হতে পারে। কারন তৃণমূলের গত নির্বাচনে ৩৮ শতাংশ ভোট ব্যাঙ্কের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে দলের অন্দরের গোষ্টি দন্দের ফলে, যেখানে সেই ভোটের শতাংশের হিসাবে প্রায় ২ থেকে ৩ শতাংশের মতো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাই বাম শিবিরের ভোট ব্যাঙ্ক কি আকার নেই সেটাই নির্ভর করছে এই জেলার নির্বাচনের ফলাফলে।