আমার ভাবনায় বুদ্ধদেব বসু ……… ….✒️✒️ গীতশ্রী সিনহা
ঘটনার ঘনঘটা নয়, অর্ন্তজীবনের উন্মোচন
————————————————————-
আমার ভাবনায় বুদ্ধদেব বসু ……… ….
গীতশ্রী সিনহা
তাঁর ছেলেবেলা ও যৌবনের স্মৃতি নিয়ে বুদ্ধদেব বসু ১৯৭২ – এ ‘ আমার ছেলেবেলা ‘ ও ১৯৭৩ – এ ‘ আমার যৌবন ‘ রচনা করেন ও সে দুটি রচনা ‘ দেশ ‘ শারদীয়া সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল পরপর।
কুমিল্লা নোয়াখালি ঢাকা বাসের জীবন শেষ করে ১৯৩১ সালের ভাদ্র মাসে বুদ্ধদেব স্থায়ীভাবে কলকাতায় চলে আসেন। তখন ‘ প্রগতি ‘ পত্রিকা উঠে গেছে। বুদ্ধদেবের প্রথম উপন্যাস ‘ সাড়া ‘ (১৯৩০), কাব্যগ্রন্থ ‘ বন্দীর বন্দনা ‘ (১৯৩০),প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘ অভিনয়, অভিনয় নয় ‘(১৯৩০) ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে ও ‘ কল্লোলে ‘ প্রকাশিত বুদ্ধদেবের প্রথম ছোটগল্প ‘ রজনী হ’ল উতলা ‘ সেকালীন সাহিত্য সমাজে তথাকথিত অশ্লীলতার অভিযোগে যথেষ্ট আলোড়ন তুলেছে।
এই প্রেক্ষাপটে বুদ্ধদেব একটি মাত্র টিউশানি ও একমাত্র সাহিত্যকে জীবিকা হিসাবে গ্রহণ করার স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েকটি স্থানে অস্থায়ীভাবে থাকার পর ১৯৩৭ এ স্থায়ী ভাবে অধিষ্ঠিত হলেন ২০২, রাসবিহারী এভিনিউ এ-র ফ্ল্যাটে। ইতিমধ্যেই ‘পরিচয়’ গোষ্ঠীর আড্ডা তে অন্নদাশংকরের হাতে ‘Poetry ‘ দেখে একটি নির্ভেজাল কবিতা পত্রিকা প্রকাশের উদ্দীপনা অনুভব করেন। ১৯৩৫ সালের ১লা অক্টোবর ‘ কবিতা ‘ পত্রিকার জন্ম হয়। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ একটি চিঠিতে লিখলেন ঃ ” তোমাদের ‘ কবিতা ‘পত্রিকাটি পড়ে বিশেষ আনন্দ পেয়েছি। এর প্রায় প্রত্যেক রচনার মধ্যেই বৈশিষ্ট্য আছে। সাহিত্য বারোয়ারির দল বাঁধা লেখার মতো হয়নি। ‘ কবিতা ‘ পত্রিকা অবশ্য ‘ ২০২ ‘ – এ আসার দু’বছর আগে থেকে শুরু হয়েছিল। এই ক্ষুদ্র কবিতা – ত্রৈমাসিকটিকে ঘিরে একটি কবি সাহিত্যিক,রসিক, বিদগ্ধজনের পরিমন্ডল গড়ে উঠেছিল। বুদ্ধদেবের পরিবৃত্তে হলেন প্রেমেন্দ্র মিত্র, কামাক্ষী প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় , দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, সমর সেন, জীবনানন্দ দাশ, সুভাষ মুখোপাধ্যায় প্রভৃতি। এই সময়ে জীবনানন্দের কবিতার মধ্যে অসীম সম্ভাবনা উপলব্ধি করেছিলেন বুদ্ধদেব। তাঁকে যথেষ্ট সমাদরে পত্রিকার স্থান দিয়েছিলেন। বস্তুত জীবনানন্দের কাব্য বিকাশের ক্ষেত্রে বুদ্ধদেবের ভূমিকা অপরিমেয়। এই ‘ কবিতা ‘ পত্রিকাকে ঘিরে বুদ্ধদেবের ‘ ২০২ ‘ ফ্ল্যাটে একটি আড্ডা গড়ে উঠেছিল। সুরেন্দ্রনাথ দত্তের ‘ পরিচয় ‘পত্রিকার আড্ডার মতো। বুদ্ধদেব নিজে লিখেছিলেন ঃ ‘ পরবর্তী দশকের মধ্যে এই ক্ষুদ্র ত্রৈমাসিকটিকে কেন্দ্র করে আমর সাহিত্যিক জীবন বিচিত্রভাবে পল্লবিত ও সম্প্রসারিত হয়েছিল ‘।
বুদ্ধদেব তাঁর নিজের ফ্ল্যাটের নাম দিয়েছিলেব ‘ কবিতা ভবন ‘ এবং এই কবিতা ভবন থেকে ‘ প্রথম ডাল ‘ বেরিয়েছিল একটি প্রকাশন সংস্থা। যার নাম ‘ কবিতা ভবন প্রকাশনী ‘। এই প্রকাশন সংস্থা থেকেই জীবনানন্দ দাশের ‘ ধূসর পান্ডুলিপি ‘, ‘ বনলতা সেন ‘ প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত হয় অজিত দত্তের ‘ পাতাল কন্যা ‘ বিষ্ণু দের পূর্বলেখ ‘, স্বয়ং বুদ্ধদেবের ‘ কঙ্কাবতী ‘, ‘ নতুন পাতা ‘, ‘ দময়ন্তী ‘ ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ।
বুদ্ধদেব তাঁর নিজের ফ্ল্যাটের নাম দিয়েছিলেন ‘ কবিতা ভবন ‘। এই কবিতা ভবন থেকে একটি প্রকাশন সংস্থা তৈরি হয়, যার নাম ‘ কবিতা ভবন প্রকাশনী ‘
আগের অংশে আলোচনা করেছিলাম, কারা কারা এই সংস্থায় কি কি প্রকাশিত করেছিলেন।
সমর সেনের কবিতা, প্রতিভা বসুর বিখ্যাত ‘ মাধবীর জন্য ‘ গল্প গ্রন্থ। প্রতিদিন তরুণ সাহিত্যিক, সাহিত্য রসিক, সঙ্গীত শিল্পী, অভিনেতা – অভিনেত্রী, এমনকি সাধারণ বন্ধু – বান্ধব সম্মিলনে সান্ধ্য আড্ডা, নতুন নতুন পুস্তক প্রকাশ, আলাপ আলোচনা, নাটকাভিনয়, সাহিত্য সভা ইত্যাদি নানা প্রসারিত কর্মকাণ্ডে মুখরিত ছিল বুদ্ধদেবের এই ‘ কবিতা ভবন ‘। বুদ্ধদেব তরুণ প্রতিভা কে চিরদিনই আনুকূল্য দিয়েছিলেন, তাদের শাখা – প্রশাখা নিয়ে পল্লবিত হয়ে ওঠার পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন।
১৯৬৬ খৃঃ জুন মাসে আটান্ন বছর বয়সে বুদ্ধদেব ‘২০২’ ছেড়ে স্থানীভাবে তাঁদের নবনির্মিত নাকতলার বাসভবনে স্থানান্তরিত হলেন। যে ‘ ২০২’ – এ বুদ্ধদেবের কর্মময় জীবনের তিন দশক অতিক্রান্ত হয়েছিল, তা ছেড়ে আসতে বুদ্ধদেবের মন বিষাদ – বিধুর হয়ে উঠেছিল। সেই সময় একটি চিঠিতে বুদ্ধদেব তাঁর আমেরিকা প্রবাসী জামাতা সাহিত্যিক জ্যোর্তিময় দত্তকে লিখেছিলেন ঃ ‘ এ মাসের শেষে ২০২ এ আমাদের উনত্রিশ বছর পূর্ণ হবে। যখন এসেছিলাম আমার বয়স উনত্রিশ, মিমির দেড়। আর প্র.ব ( প্রতিভা বসু ) তখন বাইশ বছরের ছুকরি। ( কলকাতা পত্রিকা, বুদ্ধদেব বসু সংখ্যা, ১৯৭৪) ।
নাকতলার বাড়িতেও সাহিত্য পরিমন্ডল, আড্ডা, বন্ধু – সমাবেশ অব্যাহত ছিল, কিন্তু ‘ ২০২’ — এর সেই পরিবেশ পূর্ন সৃষ্ট হবার কোনো প্রশ্নই ছিল না। ১৯৭৪ সালে বুদ্ধদেব তাঁর কর্মবহুল জীবনের ‘ উত্তেজনা পর্ব ‘ ‘ ২০২’ – এর কাহিনী রচনা করতে শুরু করেন, কিন্তু মৃত্যুর পূর্বে তা সম্পূর্ণ করে যেতে পারেন নি। যেটুকু রচনা করেছিলেন, তা ১৯৭৪ সালেই ‘ শারদীয়া দেশ ‘ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। বুদ্ধদেব বসুর এটিই শেষ লেখা, সুতরাং ঐতিহাসিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই , তাছাড়া এটি একজন আত্মনিমগ্ন, যাঁর জীবনবীক্ষণ, সাহিত্য – অভিজ্ঞতার নানা বিচ্ছুরণে সমৃদ্ধ, অন্তমুখী অথচ সাহিত্য শিল্প সংস্কৃতির পরিমন্ডলে ঘূর্ণায়মান নানা ব্যক্তিত্বের নিয়ত সহবাসে সমৃদ্ধ। উদার প্রাজ্ঞ, অথচ কিশোর স্বভাব একজন মানুষের স্মৃতি – আলেখ্য স্বভাবতই ঘটনার ঘনঘটা যত না আছে , তার বেশি আছে তাঁর অর্ন্তজীবনের ‘ হয়ে ওঠার ‘ কাহিনী, বুদ্ধদেব বসুর জীবনীকার সমীর সেনগুপ্তের মন্তব্য প্রনিধান যোগ্য ঃ ‘ তাঁর জীবন ঘটনা বহুল নয়। মোটা তথ্যগুলি হয়তো দশ বিশ তিরিশ পৃষ্ঠার মধ্যে বিশ্বাস্যভাবে ধরিয়ে দেওয়া যায়, কিন্তু তাঁর মতো একজন অর্ন্তমগ্ন মানুষের ভিতরের অহংটির বিকাশের ইতিহাসই তাঁর আসল জীবনচরিত । ‘ ( বুদ্ধদেব বসুর জীবনঃ সমীর সেনগুপ্ত )
‘ আমাদের কবিতা ভবন ‘ স্মৃতিকথাটির অনেক খানি জুড়ে আছে ‘ কবিতা পত্রিকা প্রকাশ ও তার পল্লবিত হয়ে ওঠার ইতিহাস। বন্ধুদের মধ্যে চাঁদা তুলে কবিতা পত্রিকা প্রকাশের অর্থসংস্থান করা তখনকার দিনের পরিপ্রেক্ষিতে চমকপ্রদ। ‘ কবিতা ‘ পত্রিকার ঐতিহাসিক গুরুত্ব এই সামান্য বির্তক থাকলেও, ‘ কবিতা ‘ কেই আমরা সমগ্র ভারতে প্রথম প্রকাশিত নির্ভেজাল কবিতা পত্রিকা বলে ভেবে নিতে পারি। রবীন্দ্রনাথ কবিতা পত্রিকাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং ‘ কবিতা ‘ তে প্রকাশিত জীবনানন্দ দাশের কবিতাকে ‘ চিত্ররূপময় ‘ বলে অভিহিত করেছিলেন। ‘ কবিতা ‘ কে ঘিরে যে কবি পরিমন্ডল গড়ে উঠেছিল — যাঁর মধ্যে ছিলেন, জীবনানন্দ দাশ, বিষ্ণু দে, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, অমিয় চক্রবর্তী, সমর সেন, সুভাষ মুখোপাধ্যায় , নরেশ গুহ, অরুণকুমার সরকার, প্রেমেন্দ মিত্র — বলা বাহুল্য, এঁরা সকলেই পরবর্তীকালে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে স্থায়ীভাবে স্থান দখল করে নিয়েছিলেন।
বুদ্ধদেব তাই তাঁর স্মৃতিকথায় মন্তব্য করেছেন ঃ ‘ এঁদের বিষয়ে এখানে কিছু বলার প্রয়োজন করে না। আমার বরং মনে পড়ছে এমন দু’ চারজনকে,যাঁরা একটি দুটি ফুলকি তুলেই মিলিয়ে গিয়েছেন ।… ‘ বুদ্ধদেব তাঁর স্মৃতিকথায় ‘ একটি দুটি ফুলকি তুলে মিলিয়ে যাওয়া দুজন তরুন স্বপ্লভাষী, মলিন বসন স্কুল শিক্ষক সুরেশ চন্দ্র সরকার ‘ ও ‘ ঝাঁকড়া চুল, সুন্দর চেহারার সদ্যযুবক ‘ মুকুল ভট্টাচার্যের কথা পরম মমতায় উল্লেখ করেছেন… ‘ এঁরা সকলেই বুদ্ধদেবের চেতনায় স্পন্দন তুলেছিলেন। এই একুশ শতকের সাহিত্য – পরিমন্ডলে তরুণ প্রতিভার প্রতি এমন সশ্রদ্ধ সন্মননা ও তাঁদের অর্ন্তনিহিত প্রতিভার প্রজ্জ্বলে অতন্দ্র ভূমিকা গ্রহণ করা… এমন দৃষ্টান্ত আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
বুদ্ধদেব পরিবারের সেইসব বিদগ্ধ, আপন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বের ভেতরের বৈশিষ্ট্যগুলিকে তিনি উজ্জ্বল করে তুলেছেন তাঁর অসাধারণ ভাষায়। কবি ও পন্ডিত অমিয় চক্রবর্তী সম্বন্ধে বুদ্ধদেব লিখেছেন ঃ ‘ সর্বদাই কোনো নতুন খবর শুনি তাঁর মুখে, প্রাপ্ত হই কোনো নতুন উদ্দীপনা। কখনও মধ্যরাত পর্যন্ত চলে অবিরল তাঁর আলাপন। সুগঠিত, সুসম্পর্ণ কাব্য কথা বলেন তিনিও একটি বিশেষ পরিশীলিত উচ্চারণে মুখে, দেহে ভঙ্গি তাঁর অল্প,তাঁর কন্ঠে কখনো উচ্ছাসি ফোটে না, শুধু মাঝে মাঝে ভেসে ওঠে কৌতুক, অমিয় চক্রবর্তীর খাদ্য – অভ্যাস সম্বন্ধে বুদ্ধদেব লেখেন ঃ ‘ চা তিনি গ্রহণ করেন, কিন্তু পেয়ালা শেষ করেন না। তাঁর স্বল্প আহারিতা তখনই প্রবাদ বাক্যে পরিণত হয়েছে। শোনা যায় দু’ চামচ ভাত আধখানা ডিম সেদ্ধই তাঁর তৃপ্তির পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু পরিপূরক স্বরূপ বর্নাড শ ‘র নাটকে বর্ণিত সৈনিকের মতো, তিনি পকেটে রাখতেন চকোলেট, যা চলাফেরার পথে অলক্ষ্যে অন্তঃস্থ করা যায়, সাহিত্য বিষয়ক মূল্যায়নে তাঁকে কখনো কখনো ঈষৎ ‘ পিউরিটনিক ‘ মনে হয়েছে বুদ্ধদেবের এবং বুদ্ধদেবের কোনো প্রিয় লেখা বিষয়ে তিনি উদাসীন। কিন্তু এসব তুচ্ছ মতবাদের আতসকাচের মধ্য দিয়ে জীবন বা বিশ্ববীক্ষা বুদ্ধদেবের স্বভাব বিরুদ্ধ ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্যাসী – বিরোধী লেখক সংঘে যুক্ত হয়েও অচিরেই বুদ্ধদেব উপলব্ধি করেছিলেন ঐ প্রগতির ব্যাপারটা একটা ট্রেডমার্ক, তরুণ ও তরুণতর লেখকদের পক্ষে সহজ একটা কৃতকার্যতার উপায়। বিশুদ্ধ শিল্পী বুদ্ধদেব ‘ উদ্যমের অপব্যয় ও আবেগের অনেক ব্যর্থতা পেরিয়ে মায়াবী টেবিলে সংকীর্ণ আলোর চক্রে মগ্ন হতে পেরেছিলেন, যে আলো ‘ জন্ম দেয় সুন্দরীর ‘। বুদ্ধদেবের স্মৃতিকথায় জীবনানন্দের ‘ বিখ্যাত লাজুকতা ‘ র কথা এসেছে। কবিতা ভবনের এক কবিতা পাঠের আসরে লাজুক জীবনানন্দ কবিতা পাঠ না করে ‘ আমার দাঁত ব্যথা ‘ বলতে বলতে ‘ শমক পদক্ষেপ ‘ উঠে চলে গিয়েছিলেন, ঈষৎ কৌতুক মিশ্রিত ভাষায় জানিয়েছেন বুদ্ধদেব।
যামিনী রায় – বুদ্ধদেব প্রসঙ্গটিতে যামিনী রায়ের ব্যক্তিত্বের একটি মনোরম আলেখ্য ফুটে উঠেছে। বুদ্ধদেবের একটি বাক্যে যামিনী রায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটি যথার্থভাবে পরিস্ফুট হয়েছে ঃ ‘ আমার সমকালীন যাঁদের আমি ব্যক্তিগত সংসর্গে পেয়েছি, তারই সঙ্গে আমার মতভেদ সবচেয়ে গভীর এবং মানুষ হিসেবে তাঁরই প্রতি আমি অনুভব করেছি অপরিমান বিষ্ময়। বুদ্ধদেবের স্মৃতিসিক্ত রবীন্দ্রনাথের মহাপ্রয়ানের চিত্রটিও আমাদের বিধূর করে তোলে। রবীন্দ্র – রচনা বিশেষজ্ঞ ‘ বিশুদ্ধ ‘ পুলিন বিহারী সেন, প্রণয়ে ব্যর্থ, পরবর্তীকালে অসাধারণ সুরস্রষ্টা হিমাংশু দত্ত, কবিতা ভবনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগে ও তাঁর নিঃশব্দ বিদায়, সাহিত্যিক ‘ উদয়ের পথে ‘ র কাহিনীকার, ‘ পরবর্তীকালে বর্ধিঞ্চু চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক,… যাঁর উত্থানের দিনেই অকষ্মাৎ ছেদ টেনে দিলো মৃত্যু ‘… বুদ্ধদেবের স্মৃতির মিছিলে অল্প আঁচড়ে এঁরা হয়ে উঠেছেন এক একজন জীবন্ত মানুষ। এইসব ব্যক্তিত্ব,ঘটনা, কিভাবে কবি – সাহিত্যিক বুদ্ধদেবের অর্ন্তজীবনকে ধাপে ধাপে সমৃদ্ধ করেছে, তার আভাস স্মৃতি কথাটি থেকে আমরা পেতে পারি এবং সেইখানেই বইটির যথার্থ সার্থকতা।
আমাদের কবিতা ভবন ঃ বুদ্ধদেব বসু
সূত্র ও সংকলন ঃ দময়ন্তী বসু সিং
———————————————————————