অর্থই অনর্থ ✒️✒️ নিরঞ্জন ঘোষ
অর্থই অনর্থ
নিরঞ্জন ঘোষ
ব্যাগটা বাড়িয়ে দিতেই কাটা মাছগুলো ব্যাগের মধ্যে চালান করে দিল মাছওলা। একটা একশ টাকার নোট বাড়িয়ে দিল প্রশান্ত। লোকটা দুটো দশ টাকার নোট আর একটা সোনালি রঙের পাঁচ টাকার কয়েন ফেরৎ দিল। হাত বাড়িয়ে টাকাটা নিল প্রশান্ত, কিন্তু সোনালী কয়েন টা হাতের ফাঁক দিয়ে নীচে পড়ে গেল। নীচু হয়ে দেখল খুব একটা দূরে যায়নি কয়েন টা। গড়িয়ে একটু দূরে কাদায় আটকে গেছে। বাঁ হাত বাড়িয়ে তুলে নিল। মেছোবাজারের কাদা, একটু গা টা ঘিন ঘিন করে উঠল। ধুতে হবে। এখন সময় নেই, অফিস বেরোনোর তাড়া আছে, বাড়ীতে গিয়ে ধোয়া হবে। বাঁ হাতের মুঠোয় কয়েনটা নিয়ে বাড়ী চলল প্রশান্ত।
বেসিনে কয়েনটা ধোবার সময়ই ধরা পড়ল নগদ চার টাকা আশি পয়সা সক্কাল বেলাই গচ্চা গেছে। ডাহা ঠকিয়েছে মাছওলাটা। এই কয়েন টা ২০ পয়সার। বছর তিরিশ আগে চলত। এখন দেখতেই পাওয়া যায় না। সোনালী রঙের, মধ্যে পদ্মফুল। একদম আজকালকার সোনালী রঙের পাঁচ টাকার সাইজের। কাল বেটাকে বাজারে ধরতে হবে।
পকেট থেকে বাকী খুচরো টাকাগুলো বার করে সোনালী কয়েনটার সঙ্গে টেবিলের উপর রাখা একটা প্লাস্টিকের বাক্সের মধ্যে চালান করে দিল প্রশান্ত। এটি প্রশান্ত গিন্নী পারমিতার অনেক দিনের সিস্টেম। বাজার থেকে যা কিছু খুচরো ফিরবে, সবই ঐ বাক্সে পড়বে। ছোট খাট খরচার জন্য।
সন্ধ্যেবেলা অফিস থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বড়বাজারে চলে এল প্রশান্ত। কয়েকটা জিনিষ সে পাড়ায় কেনে না, এখান থেকে নিয়ে যায়। একটু চা ও কিনতে হবে। কেনাকাটি করে এসে হাওড়ায় সাড়ে সাতটার ট্রেণ টা পেয়ে গেল।
বাড়ীতে এসে জামাপ্যান্ট ছেড়ে পকেট থেকে খুচরোগুলো নিয়ে যথারীতি প্লাস্টিকের বাক্সের মধ্যে রাখতে গিয়ে দেখল বাক্সটা খুচরো টাকাতে ভর্ত্তি, ঢাকাটা পর্যন্ত দেওয়া যায় নি। ওখানে আর হাতের খুচরো গুলো রাখা হল না। পারমিতা কোন খরচা করেইনি, উল্টে কোথাও খুচরো পেয়ে এখানেই রেখেছে।
পরদিন সকালবেলা বাজারে বেরোবার সময় প্লাস্টিকের বাক্স থেকে একগাদা খুচরো আর সেই কুড়ি পয়সার কয়েন টা নিয়ে বাজারে বেরোল প্রশান্ত। সবজি কেনার সময় শুধু খুচরো টাকা দিয়েই প্রায় সব কিছু কেনা হয়ে গেল। তারপর মাছের বাজারের দিকে এগিয়ে গেল প্রশান্ত।
এমা, আজ তো লোকটা নেই। রোজই তো থাকে। পাশের লোকটাকে জিজ্ঞাসা করাতে সে বলল, কে জানে, বলতে পারছি না। জ্বর-টর হয়েছে বোধ হয়। ওর থেকেই মাছ নিয়ে বাড়ী ফিরল প্রশান্ত। বাড়ী ফিরে খুচরো টাকাগুলো যথাস্থানে রেখে স্নান করতে চলে গেল।
জামাপ্যান্ট পরে তৈরী হয়ে অফিস বেরোতে যাবে, হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠল। শান্তনুর ফোন।
“আজ আর অফিস বেরোসনি, এন.আই এ্যাক্টে ছুটি ডিক্লেয়ার করেছে।“
সঙ্গে সঙ্গে মনস্থির করে ফেলল প্রশান্ত। পারমিতা কে ডেকে বলল, “ছেলে যেমন কলেজের দিকে যাচ্ছে যাক, আজ তুমি আমি চল কোথাও ঘুরে আসি”।
“চল, সীমাদের বাড়ী যাওয়া যাক। ও তো সারাদিন প্রায় একা একাই থাকে। দাঁড়াও একটা ফোন করি আগে”।
সীমা বাড়িতেই ছিল। হৈ হৈ করে বলে উঠল চলে আয়, চলে আয়।
সারাটা দিন খুব মজা করেই কাটল তিনজনের। বিকেল বেলা সীমাদের বাড়ী চা খেয়ে প্রশান্ত আর পারমিতা ঘরে ফিরল।
ঘরে ঢুকেই হঠাৎ টেবিলের উপর চোখ গেল প্রশান্তর। প্লাস্টিকের বাক্সটা ভর্ত্তি খুচরো টাকায়। টেবিলেও অনেক খুচরো টাকা পড়ে আছে।
প্রশান্ত পারমিতা কে বলে উঠল, “টাকাগুলো একটু ঠিক করে রাখ। টেবিলের উপর খুব বাজে ভাবে পড়ে রয়েছে”।
“আরে আমি কোথায় রাখলাম। সকালবেলা তুমিই তো বাজার করে এসে খুচরোগুলো ওখানে রাখলে”।
“সে তো দু চার টাকা। অত টাকা তো আমি রাখিনি”।
“তার মানে”।
দুজনে দুজনের মুখের দিকে তাকাল। প্রশান্তর কি মনে হল, খুচরো টাকাগুলো গুনতে শুরু করল।
মোট দুশো ছ টাকা।
“আরে আমি তো এখানে চার না পাঁচ টাকা রেখেছিলাম”।
“আর আমি তো ওখানে কোন টাকাই রাখিনি। তোমার সঙ্গেই তো বেরোলাম, না কি। দেখো বোধ হয় বাবাই রেখেছে”।
হতভম্ব হয়ে গেল প্রশান্ত। বাবাই। বাবাই টাকা পয়সা কোনদিনই রাখবে না। যদিও না বলে সে টাকাকড়িতে হাত দেয় না, তবুও টাকা এখানে রাখার পাত্র সে নয়। তাহলে কে রাখল।
চুলোয় যাক। টাকা তো, অন্য কিছু নয়তো। ঠিক আছে। কৌটো থেকে বাড়তি কয়েন গুলো নিয়ে কৌটোর ঢাকা বন্ধ করে দিল প্রশান্ত। রান্না ঘর থেকে একটা স্টীলের বাটী নিয়ে এসে বাড়তি টাকাগুলো তার মধ্যে রেখে দিল।
আজ দিনটা ভালই কেটেছে। দুই মহিলাই তার খুব প্রিয় – পারমিতা আর সীমা। সেই কলেজ থেকেই ওরা বন্ধু। প্রশান্ত অনেকদিন ধরেই মনস্থির করতে পারেনি কার দিকে ঝুঁকবে। একদিন সীমাই পারমিতার সামনে বলে, তুই পারমিতাকে প্রপোজ করছিস না কেন? ও কি মেয়ে হয়ে আগ বাড়িয়ে প্রপোজ করবে?
তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। সীমারও বিয়ে হয়েছে। বাবাই হয়েছে। বাবাই স্কুলের পড়া শেষ করে কলেজে ভর্ত্তি হয়েছে। সীমার ছেলে দেরাদুনে একটা নামী স্কুলে পড়ে। দিনগুলো ভালভাবেই কেটে গেছে।
আজ খাওয়াটা একটু বেশী হয়ে গেছে। সীমা দু রকমের মাছ আর খাসীর মাংস রেঁধেছিল। প্রশান্ত বলল, রাতে আমার খুব একটা খেতে ইচ্ছে করছে না। এ্যান্টাসিডের শিশিটা কোথায।
শিশিটা চেবিলের উপরেই আছে, পারমিতা বাথরুমের দিকে যেতে যেতে বলল।
রাতের বেলায় একটা চাপা অস্বস্তিতে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল প্রশান্তর। কি একটা আওয়াজ হল যেন।
নাঃ, বয়স হচ্ছে, আর লোভীর মত খাওয়া চলবে না। আর একটু এ্যান্টাসিড মেরে দিই। হাত বাড়িয়ে বেড সুইচ টিপে আলো জ্বালিয়ে খাট থেকে নামল তারপর টেবিলের উপর থেকে শিশিটা নিতে গিয়ে হতবাক হয়ে গেল। যে স্টীলের বাটিতে সন্ধ্যাবেলা বাড়তি খুচরো টাকাগুলো রেখেছিল, সেটা যেমন রেখেছিল, সেইরকমই আছে। কিন্তু প্লাস্টিকের কৌটোর ঢাকা খোলা, খুচরো টাকার কয়েন উপচে পড়ছে। টেবিলের উপরেও অনেক টাকা পড়ে আছে।
শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ঠান্ডা ভাব নেমে গেল। পায়ে পায়ে বিছানার দিকে সরে এল প্রশান্ত। আলোটা নেভাল না। পারমিতা পাশ ফিরে অঘোরে ঘুমুচ্ছে। বিছানায় আধশোয়া হয়ে টেবিলের দিকে তাকিয়ে রইল। এটা কি হচ্ছে। মাথাটা ঠিক আছে তো। এক সময় জানলা দিয়ে ভোরের আলো দেখা গেল। পারমিতা পাশ ফিরে হঠাৎ জেগে গিয়ে বলল, “তুমি ঘুমোও নি? জেগে বসে আছ, শরীর ঠিক আছে তো?
প্রথমে ভাবল পারমিতাকে বলে কি হয়েছে। তারপরেই ভাবল না, সকালবেলাই ঘাবড়ে দেওয়া ঠিক হবে না. আবার অফিস বেরোতে হবে। ঘুম না হওয়াতে, একটু গা ম্যাজ ম্যাজ করছে। মুখে বলল, “না কাল অতটা খাওয়া উচিৎ হয়নি”।
টিফিন আওয়ার্স পর্যন্ত কাজের চাপে মুখ তোলার সময় পায়নি প্রশান্ত। দুপুর বেলায় ক্যান্টিন থেকে দু পিস টোষ্ট আর চা খেয়ে এসে নিজের সিটে বসতে না বসতেই পারমিতার ফোন। “তুমি অফিস থেকে যে রকম ভাবেই হোক ছুটী নিয়ে এক্ষুনি বাড়ী চলে এস, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। আমার খুব ভয় করছে”।
কিছু বলার আগেই ফোনটা কেটে গেল।
ঘন্টা খানেকের মধ্যেই বাড়ী চলে এল প্রশান্ত। পারমিতা বাড়ীর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
“কি হল, তুমি বাইরে দাঁড়িয়ে কেন?”
“বাবাই কলেজ গেছে, আমি একা বাড়ীর মধ্যে থাকতে পারছি না, ভয় করছে”।
“বাড়ীর মধ্যে ভয় কিসের?”
পারমিতার মুখ থমথমে। ঘরের মধ্যে ঢুকে টেবিলের দিকে আঙুল তুলে দেখাল।
যুগপৎ বিস্ময়ে আর ভয়ে প্রশান্তর মুখ হাঁ হয়ে গেল। খুচরো টাকার স্তুপটা প্লাস্টিকের কৌটোটা ঢেকে দিয়েছ। গুনলে মনে হয় হাজার খানেক পেরিয়ে যাবে।
“কখন দেখলে?”
“আমার খেয়াল হল স্নান করে বেরিয়ে। মনে হল ঘরের মধ্যে খুচরো পয়সার আওয়াজ। টেবিলের দিকে চেয়ে দেখি এই ব্যাপার। সঙ্গে সঙ্গে তোমাকে ফোন করেছি। খাইনি পর্যন্ত”।
“ঠিক আছে, তুমি খেয়ে নাও। অনেক দেরী হয়ে গেছে। আমি দেখছি কি করা যায়? খেয়ে উঠে আমাকে এক কাপ চা করে দিও”।
চা নিয়ে টেবিলের কাছে চেয়ারে বসল না প্রশান্ত। খাটে বসে ভাবতে আরম্ভ করল, কি হচ্ছে, কেন হচ্ছে এসব? অবাস্তব ব্যাপার। কাউকে বললে উপহাস করবে। কিন্তু নিজের চোখকে কি করে অবিশ্বাস করে।
হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকের মত একটা কথা মনে এল প্রশান্তর। গত পরশু, না না, তার আগের দিন থেকে শুরু হয়েছে এসব। মনস্থির করে নিল প্রশান্ত। কাল অফিস ছুটী নেবে। যত খুচরো টাকা আছে নিয়ে বাজারে গিয়ে বাজার করবে। একটাও খুচরো টাকা ফেরৎ আনবে না।
সারা রাত আলো জ্বেলে পারমিতা আর প্রশান্ত বসে রইল। মাঝে মাঝে দেখতে থাকল কোন কিছু হয় কিনা।
একসময় সকাল হয়ে গেল।
না, রাতে কোন আওয়াজ হয়নি, টাকাও বাড়েনি। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল প্রশান্ত। তবে কাল যেটা ভেবেছিল সেটা করবে স্থির করেই বাজারে চলল।
এক জায়গায় এত খুচরো দিয়ে মাল কেনা যাবে না। এ দোকান, সে দোকান করে প্রায় আটশো টাকার মত খুচরো জিনিষ কিনল প্রশান্ত। যে দোকান থেকে মশলাপাতি নেয়, তার দোকানদার তো বলেই দিল সকালবেলাই এত খুচরো গোণা যায়? বেশীর ভাগই এক টাকা দু টাকা।
প্রশান্ত বলে উঠল, “কি করব বলুন। সকালবেলাই মাটীর লক্ষীর ভাঁড় টা পড়ে ভেঙ্গে গেল। এগুলোর গতি করতে হবে তো?”
গজগজ করতে করতে টাকা গুণে নিয়ে দোকানদার মালটা দিতেই হাঁফ ছাড়ল প্রশান্ত। যাকগে, অনেকটা নেমে গেছে।
একটা চায়ের দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে একটা চায়ের অর্ডার দিয়ে খুচরো টাকা গুলো গুনতে আরম্ভ করল। মোট ২৭২ টাকা আর সেই পদ্মফুল মার্কা সোনালী ২০ পয়সাটা। চা খেয়ে মাছের বাজারে ঢুকলো প্রশান্ত। আজকেও সেই লোকটা আসে নি। পাশের মাছওলার সামনে গিয়ে দাঁড়াল।
“কত করে?” বড় কাৎলা মাছটা দেখিয়ে বলল প্রশান্ত।
“২৪০ করে বাবু”।
“কেটে দেবে তো। আর একটা কথা, সব খুচরো টাকা কিন্তু”।
“সকালবেলা খুব অসুবিধে হয় বাবু, ঠিক আছে দিন”।
প্রশান্ত অর্ধেকটা নিয়ে নিল। কিলোখানেকের একটু বেশীই হল। ২৫৫ টাকা।
“তোমার পাশের লোকটাকে আর দেখছিনা”।
“ও তো পরশু রাতে রেল লাইন পেরোতে গিয়ে ট্রেণের ধাক্কা খেয়েছে। একটা পা কাটা গেছে। বাঁচবে না মনে হয়। হাসপাতালে আছে”।
মানুষের জীবন অনিত্য – মনে এল প্রশান্তর।
চায়ের দাম পাঁচ টাকা দিয়েছিল প্রশান্ত। হাতে এখন ১২ টাকা আর ২০ পয়সা।
দুটো সিগারেট কিনল একটা দোকান থেকে। ধরানো যাবে না, দু হাতে ব্যাগ।
দু টাকা আর ২০ পয়সা।
সব টাকা খরচা করবে আজ, একটা টাকাও বাড়ী নিয়ে যাবে না।
দুটো এক্লেয়ার্স চকোলেট কিনে ফেলল। হাতে পদ্মফুল মার্কা সোনালী ২০ পয়সা।
এটা দিয়ে কিছু কেনা যাবে না, কেউ নেবে না। ডান হাতের বড় ব্যাগটা পায়ের কাছে নামিয়ে সামনের খোলা নর্দমায় কয়েনটা ছুঁড়ে ফেলে দিল প্রশান্ত।
প্রায় সঙ্গে সঙ্গে একটা মোটর সাইকেলের হ্যান্ডেল প্রশান্তর কোমরের কাছে সজোরে খোঁচা মারল। দুম করে পড়ে গেল প্রশান্ত। বড় ব্যাগটা মুখ খোলা নর্দমায় ছিটকে পড়ল আর প্রায় সাথে সাথেই ডুবে গেল।
ধর ধর করে দু চার জন প্রশান্তকে উঠতে সাহায্য করল। মোটর সাইকেলওলা পালিয়েছে।
ছোট ব্যাগটা দেখল প্রশান্ত। সেই ব্যাগের মধ্যে কয়েকটা শাকসব্জী আছে। মাছের টুকরোগুলো যে পলিথিনের ব্যাগে মাছওলা ভরে দিয়েছিল, সেটাও দেখতে পেল না।
খোঁড়াতে খোঁড়াতে বাড়ী ফিরে এল প্রশান্ত।
মনটা খারাপ হয়ে গেছে। অত টাকার জিনিষ নিমেষে ভোজবাজীর মত চলে গেল। পকেটে খুচরো টাকা নেই, তাই প্লাস্টিকের বাক্সে রাখার প্রশ্নই নেই।
মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল। সভয়ে টেবিলের দিকে তাকাল। না সেখানে কিছু অস্বাভাবিকত্ব নেই। পাশে পারমিতা অকাতরে ঘুমুচ্ছে।
একটা সিগারেট ধরিয়ে দরজা খুলে বারান্দায় এসে দাঁড়াল প্রশান্ত। নিস্তব্ধ রাত।
হঠাৎ কানের কাছে ফিসফিস আওয়াজ শুনল। “তুই ফিরিয়ে দিলি কেন। তোর কোনদিন আমি অভাব রাখতাম না রে।
আমি ভিক্ষে করে অনেক অনেক টাকা জমিয়ে ছিলাম। সব খুচরো টাকা। ঐ শয়তান মাছওলাটা কি করে জানতে পেরেছিল। রাতে আমার ঘরে ঢুকে আমাকে গলা টিপে মেরে দিয়ে সব টাকা নিয়ে চলে গেল। ও কে আমি মারিনি, শাস্তি দিয়েছি। তুই ফেরৎ দিলি বলে আমার টাকায় কেনা জিনিষগুলো আমি নিয়ে নিলাম।
যাকগে, ভাল থাকিস, আমি যাচ্ছি। আর আসব না”।
– সমাপ্ত –
দিনাজপুর ডেইলি ডেস্কে ২৬শে অক্টোবর ২০২৪ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে আমার লেখা ” অর্থই অনর্থ” রূপক গল্প টি।
গল্প টিতে একটি সহজ বার্তা দিতে সচেষ্ট হয়েছি।