বিষণ্নতা ❤️ লেখক -শাহবাজ ❤️
Depression
বিষণ্নতা
❤️ লেখক -শাহবাজ ❤️
সকালে ঘুম থেকে উঠেই রিমোটটা নিয়ে টিভিটা অন করতেই টিভির পর্দায় ভেসে উঠে মরদেহ,হয় প্রেমের মায়াজালে আবদ্ধ কিশোর কিশোরীর লাশ,নয়তো বা বেকার যুবকদের নিথর শরীর। তারপর যখন রোজকার কাগজের পাতা উল্টাই, সেখানে দেখি সাদা কাপড়ে মোড়া মরদেহ,হেড লাইনে লেখা দরিদ্র কৃষকের আত্মহত্যা। ছবি দেখে হৃদয় কেঁপে উঠে বুকের পাঁজর মড়মড় করে।কাগজ পড়তে পড়তে দুচোখের কোণে জল জমে, মন ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। এইসব আত্মহত্যা কী আদৌও আত্মহত্যা?নাকি খুন?এই গুলি আসলে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা, আর আমাদের সিস্টেম এই নিরীহ মানুষ গুলিকে খুন করেছে।আমি জানি দরিদ্রতা,বেকারত্ব মৃত্যুর চেয়েও বেশি যন্ত্রণাকর।তার পরেও বলব মৃত্যু কখনোই কোনো কিছুর সমাধান হতে পারে না।আমি এটাও মনে করি মরে যাওয়ার চাইতে সহজ কিছুই হতে পারে না। আপনি একবার ভাবুন সহজ উপায় অবলম্বন করে কখনো কেহ সফলতা পেয়েছে কিনা?কখনোই সহজ পথে সফলতার দেখা মেলে না। জীবনের বৈচিত্র্য হলো কষ্ট যন্ত্রণা সুখ দুঃখ।তাই দুঃখের পথ অতিক্রম করেই সুখের ঠিকানায় আপনাকে পৌঁছাতে হবে।একটা কথা মনে রাখবেন রাত্রি যত কালো অন্ধকারই হোক না কেন, ভোরের আলো ফুটবেই,আর সব আঁধার দুর হবেই নতুন সূর্যের আগমনে।আর একটা কথা আমরা সবাই ভাবি জীবনটা আমার,তাই জীবনের উপর পুরো অধিকারটাও আমার। কিন্তু এই ভাবনাটা ঠিক নয়, জীবনটা আপনার ঠিকই, কিন্তু আপনার জীবনের উপর শুধু মাত্র আপনার অধিকার নয়। আপনার জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে, আপনার মা,বাবা,ভাই বোন,স্ত্রী বন্ধু বান্ধব,ও আত্মীয় স্বজনদের অধিকার, আপনাকে নিয়ে সবাই একটা আলাদা আলাদা ভাবে স্বপ্ন সাজিয়ে রেখেছে,তাই জীবনটা আপনার বলে, আপনি সবার স্বপ্ন এক ঝটকায় শেষ করে দিতে পারেন না, আপনি আত্মহত্যা করলে ভাবছেন আপনি শান্তি পাবেন। কিন্তু আপনি এটা একবার ভেবে দেখুন, শুধু মাত্র আপনার চলে যাওয়ার কারণে, কত গুলো মানুষ সারাজীবন কষ্ট ভোগ করবে,আর সারাদিন আপনাকে স্মরণ করবে, আর চোখের জল ঝরিয়ে যাবে। একবার ভাবুন এর চাইতে দরিদ্রতা বেকারত্বের সাথে লড়াই করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাই শ্রেয় নয় কী। আমি জানি বেকারত্ব আপনাকে অস্থির ব্যাকুল করে তুলে, বিষণ্নতা আপনাকে জড়িয়ে ধরতে চাইবে সব সময়।এই সময় আপনার ক্লান্ত হয়ে পড়লে চলবে না, বিষণ্নতায় ডুবে গেলে হবেনা। আপনাকে জীবনের মানে খুঁজতে হবে, জীবনকে ভালোবাসতে শিখতে হবে, নেগেটিভ ভাবনা ছেড়ে পৃথিবীর সুন্দরতা অনুভব করতে শিখতে হবে, শিশুর আঙুল ধোর অঙ্গনে হেঁটে দেখুন, আপনার গৃহ আপনার পরিবার কত সুন্দর দেখতে পাবেন। নিজেকে প্রজাপতি করে,ফুলকে ছুঁয়ে দেখুন, তখন বুঝবেন আপনার চারিপাশ কতটা মধুর, বনের পাখি হয়ে খোলা আকাশের নিচে উড়ে দেখুন, কোকিলের বেশ ধোরে বাউলের সুরে ছন্দে কোনো মিষ্টি মধুর গান গেয়ে দেখুন,দেখবেন তখন, কতটা সুন্দর এই ধরণি। শেষে একটা কথা বলব যেদিন আপনি অনুভব করতে শিখে যাবেন যে এই পৃথিবীটা কতটা সুন্দর, নির্মল, জীবনটা কতটা মধুময়, কতটা মূল্যবান,সেই দিন থেকে কোনো কষ্ট কোনো বিষণ্নতা,আর কোনো ভাবেই জড়িয়ে ধরতে পারবে না আপনাকে,আর আপনার মনে কখনোই আত্মহত্যার মতো মহাপাপের চিন্তা ভর করবে না।
বিনীত