সমুখে শান্তিপারাবার কলমে — শর্মিষ্ঠা চৌধুরী
সমুখে শান্তিপারাবার
কলমে — শর্মিষ্ঠা চৌধুরী
আকাশে এখন শ্রাবণী মেঘের ঘনঘটা।গাঢ় ছাইরঙা মেঘে আকাশ ঢেকে তুমুল বৃষ্টি শুরু হল।আবার কিছুক্ষণ পরেই বিরতি।মেঘ কেটে আকাশ পরিষ্কার। বিকেলগুলোতে জানলার পাশে বসলেই দেখা যায় আকাশ জুড়ে নানা বর্ণের শ্রাবণী মেঘ।জলভেজা কেতকী যেন মেঘের সুবাস বয়ে নিয়ে আসে জীবনের ছন্দে।মেঘ আর বৃষ্টির বেশ একটা ক্লাসিক্যাল ছন্দ চোখের সামনে ধরা পড়ে এই ইঁট কাঠ ক্রংক্রিটের শহরেও।শ্রাবণ ক্রমশঃ তার গোপন চরণ ফেলে নিঃশব্দে বাইশ তারিখের কাছে এসে পৌঁছলো।বৃষ্টি ধোওয়া মেঘে ঘনীভূত আকাশ গভীর বেদনায় ব্যক্ত করছে তার ঝরে পড়া।এমনই এক বাইশে শ্রাবণে তাঁর চলে যাওয়া অসীমের বুকে।সেদিনও বিরহিনী শ্রাবণের বুকে অনন্ত বিচ্ছেদের কাব্য রচনা হয়েছিল।তাই তাঁর কাব্যে দিঘির কালো জলে অশ্রুভরা মেঘ বিরহের ছায়া ফেলে, বকুল, যূঁথি আঁধার রাতে আকুল হয়ে সকল কাজ ভোলায়।এই শ্রাবণ যাকে তিনি জীবনের শোকে-দুঃখে মরমে মরমে গেঁথে আবিষ্কার করেছিলেন তাঁর রচনাতে।আসলে বাইশে শ্রাবণে আমরা যে মৃত্যুশোক পালন করি সেই মৃত্যুকেই তিনি অনুভব করেছেন,প্রতিদ্বন্দী ভেবেছেন,আবার অতিক্রম ও করেছেন।তাঁর অখণ্ড দৃষ্টিতে জীবন ও মৃত্যু একাকার হয়ে যায়।বাইশে শ্রাবণ তাই অন্ধকারের বুকে জেগে থাকা অসংখ্য জোনাকের আলো যাকে ছোঁয়ার জন্য রবীন্দ্রনাথ নামে আকাশের দিকে আমাদের হাত বাড়াতেই হয়………