প্রিয় প্রাক্তন রবীন্দ্রনাথ **** সঙ্গীতা কর
প্রিয় প্রাক্তন রবীন্দ্রনাথ
সঙ্গীতা কর
না, প্রথম দিকে একদমই ভালোবাসিনি তোমায়
বরং তোমার প্রতি অভিযোগ ছিলো রাশি রাশি,
তখনও তোমার রচনা সাগরে ডুব দেওয়া হয়নি
তাই তো উদাত্ত কণ্ঠে বলতে পারিনি ভালোবাসি।
নিতান্ত সাধারণ নারী মন চাহিদায় ভরপুর
তুমি দাওনি সঠিক স্বাধীনতা, দাওনি দিশা,
অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছি তাই বারবার
কাটেনি অবুঝ জীবনের ঘোরতর অমানিশা।
অবশেষে ২৩ শে শ্রাবণের ভোর এলো নিভৃতে
সেদিন সকালে ভারতের রবি উঠলো না আর,
বিশ্বময় পাঠক কেঁদেছিলো অবিশ্রান্ত ধারায়
এই নিদারুণ শোকের নেই কোনো পারাপার।
বিস্ময়ে হতবাক্ হয়ে হাতে নিলাম তোমার সৃষ্টি
একে একে পেলাম সবলা, বিমলা, দামিনীদের ,
রেখে গেছো, এক একটি তেজদীপ্ত শক্তিশেল
যাঁরা পরিবর্তন ঘটাতে পারে ক্ষয়িত সমাজের।
কাব্যের অতলে ডুবে গেলাম তোমার অনুপস্থিতিতে
তোমার নন্দিনী, মৃণালিনী, সৌদামিনী চরিত্র ঘিরে
নতুন করে শুধু বোঝার হলো শুরু হলো একান্তে
দেখলাম আছো তুমি দেশপ্রেমে, সমাজ সংস্কারে।
তোমার অসীম বিশালতা বোঝার সাধ্য নেই এতোটুকু
তবুও রোজই হাতড়ে ফিরি সেই সমুদ্রের অন্দরমহল,
অভিযোগের ঢেউ আছড়ে পড়ে তীর ভেঙে দেয় তারা
ভেসে ওঠে প্রতিটি পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় বিদ্রোহের হিল্লোল।
তারপর থেকে প্রতি মুহূর্ত কাটে তোমায় আঁকড়ে
মিলনে, বিরহে, সর্বদাই খুঁজে পাই তোমার বাণী ,
ভালোবেসে আগলে রাখি বুকে পরম অভিমানে
তুমিই আমার প্রেম, তাই তোমাকেই সর্বস্ব মানী।
সশরীরে না থেকেও আছো সবকিছুতেই মিশে
ফিরে পাওয়ার প্রবল ইচ্ছায় কাঁদে অসহায় মন,
তুমি আমার তেমন-ই প্রিয়, একান্ত আপন জন
সম্পূর্ণরূপে বুঝে নিতে না পারা হারানো প্রাক্তন।