।। চাঁদের বুড়ি ।। অণুগল্প ।। কলমে – মনোজ দাশ
।। চাঁদের বুড়ি ।। অণুগল্প ।।
কলমে – মনোজ দাশ
ভারতের চন্দ্রযান চাঁদে যাচ্ছে। চাঁদের চারপাশে তার ঘুরপাক খাওয়া শেষ হয়ে এসেছে প্রায়। আজ তার নামার পালা। এই নিয়ে দেশ জুড়ে খুব হৈচৈ। টিভি খবরের কাগজ সব জায়গায় সেই ছবি। সবাই যাতে দেখতে পায় সেই দৃশ্য, তার জন্য স্কুলে আজ ছুটি। স্কুলের ক্লাস টিচার ক্লডিয়া মিস বাচ্চাদের বলে দিয়েছেন ছবি এঁকে নিয়ে যেতে। চাঁদ আর চন্দ্রযানের ছবি। বিকেলে পার্কে খেলতে না গিয়ে কুহু তাই বসেছে সেই ছবি আঁকতে।
পাতার পর পাতা ছবি আঁকছে। কিন্তু কোনোটাই ভাল লাগছে না। চাঁদ যেন ঠিক চাঁদ হচ্ছে না। সবসময় কেমন গোল্লা মতন হয়ে যাচ্ছে। চাঁদ কেন গোল্লা হবে?
ভেবে ভেবে যখন অস্থির কুহু, তখন দাদু বলল — চাঁদের বুড়ি না থাকলে চাঁদকে তো গোল্লা মনে হবেই। তুমি বুড়িকেও আঁকো দেখি।
অম্নি চাঁদের মধ্যে বুড়িকে আঁকতে বসল কুহু। চাঁদের বুড়ি চরকায় সুতো কাটছিল, চন্দ্রযানকে দেখে হাত তুলে ডাকছে — এরকম আঁকল। এবার চাঁদকে খুব পছন্দ হল কুহুর।
মায়েরও খুব ভাল লাগল ছবিটা। তবু বলল, বিজ্ঞানের মধ্যে রূপকথার গল্প দেওয়াটা কি ঠিক হল? সবাই হাসবে না তো? চাঁদের বুড়ি তো কল্পনা। মিথ্যে।
কুহুর দাদু হেসে বলল, কল্পনা কেন মিথ্যে হবে! কুহুর পৃথিবীতে যে চাঁদ আছে সেখানে চাঁদের বুড়িটাই তো সত্যি। সুকান্তর কাছে চাঁদ ঝলসানো রুটি হতে পারলে কুহুর কাছে কেন চরকায় সুতো কাটা বুড়ি হতে পারবে না?