আরও একটি কবিতার জন্ম হোক **** শান্তময় গোস্বামী
আরও একটি কবিতার জন্ম হোক
শান্তময় গোস্বামী
আরও একটি কবিতার জন্ম হতে যাচ্ছে…
মহেঞ্জোদারোর যক্ষিণীর মতো নগ্ন-সুন্দর আর স্বাধীন।
জন্ম-স্বাধীন কবিতার মগডাল থেকে ভোরের একমুঠো আলো-বাতাস নিয়ে
আসনপিঁড়ি পেতে বসে এসে আমাদের দিনশেষের পান্তার পাতায়।
কবিকে বললাম, তোমার মন তো পড়ে আছে ধানজমি আর
লোকমুখর হাটবাজারের খেলায়…
তুমি নাগরিকতার শিকল কেনো পরো?
কবি হাসেন স্বাধীনতা হাসে যেভাবে।
উনিশ-শ’এগারোতে একবার আমি সেই হাসির বিদ্যুতে মগ্ন হয়ে
প্রবীণ কবিদের হাঁটতে দেখেছিলাম মহানগরের পথে জ্যোৎস্নাদের সাথে
জ্যোৎস্না তো আমাদের আকাঙ্খার সহোদরা,
আমাদের মনোবাসনার দীপাবলি।
আমি একটি কবিতার শরীর সৃষ্টি হতে দেখছিলাম,
আমি ভাষার দাঁতের ফাঁকে দেখতে পাচ্ছিলাম
সেই কবিতার উপাদানের রক্তাক্ত পঙক্তিমালা…
সেখানে বেদানার শাঁসে-বীজে লুকোচুরি খেলা চলছে,
ভাঙাচোরা সময়ের নাভিমূলে মাইকেল জিংসেনের
বেশ্যাদের নিয়ে গানের কলি নাচছে ত্রিভঙ্গ মুরারির মতো।
আমি দেখেছি শোষক আর শোষিতের যৌথসম্মেলন
নক্ষত্রপল্লীর মতো নিজস্ব অরবিটে ঘুরপাক খাচ্ছে,
খুঁজে পায়নি বাংলার কক্ষপথে প্রবেশের গোপন পাসওয়ার্ড।
আমরা এখনও বলতে পারি না পৃথিবী মানুষের…
সাদা বা কালোদের নয়, হতদরিদ্র শ্রমিকের নয়…
পীত ও হলুদাভদেরও নয় এ-পৃথিবী,
বাঙালি নামক মিশ্রদের কবজিতে যে স্বাধীনতা
গোত্তা খেয়ে পড়েছিলো জুলাইয়ের বৃষ্টিভেজা ঘাসে,
সেখানেও কবিতা ছিলো অজানা চেতনার ভাঁজে ভাঁজে।
আমি আরও কিছু কবিতার জন্ম দেখবো বলে
আশ্বিণ-কার্তিক-অগ্রহায়ণ-পৌষ-মাঘ-ফাল্গুন-চৈত্র-বৈশাখের মতো
চক্রাকারে ঘুরছি, খুঁড়ছি মাটি আর বুনছি বীজ…
পৃথিবীর উর্বরতম মাটিতে স্বাধীনতাই হবে সেই শ্রেষ্ঠ কবিতা।