আজ আমার কলমে,কিছু ব্যক্তিগত অনুভবের কথা ✍️ নিতু চৌধুরী,,
আজ আমার কলমে,কিছু ব্যক্তিগত অনুভবের কথা,
✍️ নিতু চৌধুরী,,
সৃষ্টি কর্তা চাইলে তার তৈরী এই দুনিয়ায় মাথা উঁচু করে নিজের মতো করে অবশ্যই বাঁচা যায়,সৎ পথে থেকে, পাশে কেউ থাকুক বা না থাকুক। শুধু ইচ্ছার জোর থাকা চাই আর লড়াই করার মতো মানসিকতা থাকলেই সব সম্ভব হয়। তার জন্য মিথ্যাচার,ভণিতা,বা অসৎ পথে রোজগারের দরকার পরে না।অবশ্যই তার জন্য নিজের মনকে কন্ট্রোল করতে হবে। চাহিদার থেকে রোজগার কম থাকলে অবশ্যই চাহিদা কমাতে হবে। ছোট ছোট জিনিসের মধ্যেই আনন্দ খুঁজে পাওয়ার মজাটা উপভোগ করতে শিখতে হবে।
যেমন ধরা যাক, আমার রোজগার কম তাহলে বিদেশ ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান না করে, দেশের মাটিতেই যে ঘোরার জায়গা আছে সেখানেই যাওয়া যেতে পারে। নিদেন পক্ষে নিজের সঙ্গীকে সাথী করে কিছুটা রাস্তা হেঁটে আসা ,পুরোনো স্মৃতির মধ্যে হারিয়ে যাওয়া এর কাছে কিন্ত ঘুরে বেড়ানোর মজাও কম পরে যাবে।
সঙ্গীর অসৎ পথে রোজগারের হীরের গহনার থেকে তার কম পয়সায় কেনা একটা ছোট্ট মুক্তোর দুল ও কিন্ত দুর্লভ উপহার হয়ে ওঠে ভালোবেসে গ্রহণ করলে কারণ তার মধ্যে সেই মানুষটির কষ্ট, ঘাম আর অনেক টা ভালোবাসা জড়ানো থাকে, কিন্ত মনটাকে সেভাবে তৈরি করাটা জরুরী।
অনেক বড়ো ফ্ল্যাট বা বাড়ি না থাকলেও চলে, ভালোবাসা থাকলে এক কামরার ঘরটাও কিন্ত স্বর্গ হতে পারে। কিন্ত বড়ো ঘরে একই বিছানা অথচ মন যদি থাকে এদিক ওদিক তাহলে সে জায়গা নরক হতে বাধ্য। ওই যে কথায় আছে না, “যদি হও সুজন, তেঁতুল পাতায় নয় জন “।
সন্তান মানুষ করছি মানেই বুড়ো বয়সের ভার বহন করবে এটা না ভেবে, এভাবেও তো ভাবা যায় আমরা তাকে পৃথিবীতে এনেছি তাই এটা আমাদের দায়িত্ব, কর্তব্য।যদি সত্যিই বাবা-মা হিসেবে তাকে সু শিক্ষা দিয়ে থাকতে পারি তাহলে সে তার বুদ্ধি বিবেচনার হাত ধরে যা করার করবে কিন্ত আমরা আশা করবো না কোন কিছুর। তাহলে আমার মনে হয় পরবর্তীতে যেটাই ঘটুক কষ্ট পেতে হবেনা বা আনন্দ বেড়ে যাবে। কিন্ত হতাশা আসবে না।
“বন্ধুত্ব” একটা সুন্দর শব্দ ।যেটার সঙ্গে হৃদয়ের যোগাযোগ আছে। যেকোন অবস্থায় যেকোন বয়সের দুটো মানুষ বা একাধিক মানুষ বন্ধুত্ব করতেই পারে কিন্ত রক্ষা করার দায়িত্ব টা প্রত্যেক কেই পালন করতে হবে কারণ কোন সম্পর্কই এক তরফা টেঁকেনা।
বন্ধু তাকেই করা উচিত যে আমাদের স্ট্যাটাস নয় আমাদের মধ্যের মানুষ টাকে ভালোবাসবে।বিষাক্ত আগাছার সঙ্গে বন্ধুত্ব না করে একা থাকা অনেক ভালো তাতে অন্ততঃ নিজের মতো বেঁচে থাকা যায়। আমাদের জীবনেও কখনো কখনো আশেপাশে হঠাৎই গজিয়ে ওঠা আগাছার মতো বন্ধুদের ও সময় থাকতে ছেঁটে ফেলা উচিত তা নইলে জীবনে চলার পথটা যেকোন সময় আবর্জনাময় হয়ে যায়,তখন না সুস্থ ভাবে চলা যায় না বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় শ্বাস নেওয়া যায়।
অতিরিক্ত আবেগ নামক শব্দ টিকে জীবন থেকে বাদ দেওয়া অবশ্যই দরকার না হলে জীবন বড়ই কালিমা লিপ্ত পাঁকে পরিণত হয়,আর ক্রমশই তাতে তলিয়ে যেতে হয়।অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। তা ভালোবাসা হোক, খাওয়া দাওয়া হোক বা বন্ধুত্ব হোক। কোন কিছু অতি হলেই ঝামেলার শুরু। কারণ অতিরিক্ত কোন কিছুই মানুষ নিতে পারেনা।আর উল্টোদিকের মানুষ টাকে সস্তা মনে করতে শুরু করে।তাই পরিমিতি বোধ থাকা খুব দরকার জীবনে সুস্থ ভাবে বাঁচতে গেলে।
যদি কেউ বারবার বোঝাতে থাকে যে, তোমার থাকাটা অ প্রয়োজনীয়,তবে বারবার অপমানিত হওয়া,উপেক্ষিত হওয়ার থেকে সেই কারণ বা সেই মানুষের বা মানুষগুলোর থেকে অচিরেই সরে আসা উচিত নাহলে আরো বেশি কষ্ট পাওয়ার রাস্তা নিজেই তৈরি করছো এটা নিয়ে সংশয় নেই। তাই কষ্ট অবধারিত । আনন্দে বাঁচতে গেলে এগুলো থেকে সরে একা থাকাই ভালো।
অযাচিত উপকার বা অন্যকে বেশি গুরুত্ব দিলে সেটাকে দুর্বলতা ভাবা কিছু মানুষের স্বভাব কিন্তু কিছু মানুষের কাছে সেটা মনুষ্যত্ব,তবে বোঝার বা দেখার চোখ ভিন্ন হতেই পারে।
কারোর কাছে তুমি ভালো, কারোর কাছে খারাপ কারণ একসাথে সবার মন রাখা যায় না, ভালো হওয়া যায় না। তাই দিনশেষে নিজের মতো একা থাকাই ভালো। নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার জন্য এটা খুব জরুরি।
আর একটা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা, যেকোন রকম দুঃখ-কষ্ট, দারিদ্র্যতা, হতাশা সব কিছুকেই হাসি মুখে জয় করার মোক্ষম অস্ত্র হলো প্রাণ খুলে হাসা।প্রাণ খুলে হাসলে দুঃখ-কষ্ট দূরে যেতে বাধ্য, ভয় পেতে বাধ্য কারণ সেই মানুষটির যে কোন কিছুতেই ভয় নেই সেটা বুঝলে তারাও পালাতে বাধ্য হবে। তাই যতো কষ্ট ই আসুক, হাসির অস্ত্র দিয়ে তাকে পরাজিত করাই যায় কারণ জীবনের চলার পথে কোন মানুষের হাসিমুখ টাই আমরা মনে রাখতে চাই, কারণ দুখী মানুষদের সকলেই এড়িয়ে চলে। কেন ?সে আর এক প্রসঙ্গ। পরে কোন দিন নাহয় আলোচনা করা যাবে বন্ধুরা।
আপনারা কি আমার সাথে একমত বন্ধুরা?আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম,,,,