গীতশ্রী সিনহা। সম্পাদকীয় কলমে।
সম্পাদকীয়
সূর্যমুখীর মতো মেলে ছিলে শিকড়ে শিকড়ে যত ক্ষুধা অপরূপ সাহিত্য আসরে। সময়ের আগে সময় চলে আসে কালের প্রেক্ষাপটে। নিবিড় ঘুমে মৌনতা গ্রাস করে নিস্পন্দ অন্ধকারে মিশে যায় অন্তিমকাল। অনাড়ম্বর জীবন কাটিয়ে অনাড়ম্বর ভাবেই সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। বলে গিয়ে ছিলেন প্রয়াত সাহিত্যিক। তিনি আচার – অনুষ্ঠানে বিশ্বাসী ছিলেন না। তাই তাঁর কন্যা দোয়েল মজুমদার বাবার আদেশ পালন করেন।
সাহিত্য জগতের বটবৃক্ষ থেকে গেলেন অগণিত পাঠকের দরবারে সিংহভাগ আসন অর্জন করে। মাত্র ৭৯ বছর বয়সে তিনি রেখে গেলেন অনেক অসমাপ্ত কাজ, যা নাকি পাঠকের অপ্রাপ্তি থেকে গেল। সাহিত্যিকের স্ত্রী ধীরা মজুমদার ২০২১ সালে দ্বিতীয় বার করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সমরেশ মজুমদার পাঠকদের উপহার দিয়ে গেলেন জনপ্রিয় বেশ কিছু উপন্যাস।তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা জলপাইগুড়ি জেলায়, ষাটের দশকের গোড়ায় তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। স্কটিশ চার্চ কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক স্তরে।এরপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। দেশ পত্রিকায় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দৌড় ‘প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের কথা বলতে গেলেই মনে পড়ে গর্ভধারিণী, সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অগ্নিরথ ইত্যাদি ইত্যাদি… উপন্যাসের চরিত্রদের সাথে আমরা একান্তভাবে রয়ে গেছি, পাঠকদের জয় করেছেন তিনি কলমের উপলব্ধিতে। আবার পেয়েছি কিশোর গোয়েন্দা চরিত্র ‘ অর্জুন ‘, বাংলা সাহিত্যের প্রাঙ্গণে অনাবিল মগ্নতা খুঁজে পেয়েছি আমরা।
এমন বিপুল জনপ্রিয় সমৃদ্ধশালী নাম সমরেশ মজুমদার ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন, পেয়েছিলেন আনন্দ পুরস্কার তারও আগে ১৯৮২ সালে। ‘ কলকাতায় নবকুমার ‘ – এর জন্য বঙ্কিম পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারকে ২০০৯ সালে।
পাঠক মহলে শোকের ছায়া ফেলে চলে গেলেন অন্তরালে । তাঁর প্রতি রইল পরম শ্রদ্ধা। লেখার মধ্যে তাঁকে পাঠক ফিরে পাবে বারবার।
ইচ্ছে রইল আগামী সংখ্যায় নিয়ে আসবো সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের অন্য আর একটি দিক।
শুভকামনা শুভেচ্ছা নিয়ে আজ এই পর্যন্ত… ফিরে আসছি আগামী সংখ্যায়।
গীতশ্রী সিনহা। সম্পাদকীয় কলমে।