” ছেলেটা” ************ সীমা সান্যাল

” ছেলেটা”
************
সীমা সান্যাল
——————-
রবিবাবু,
না, তোমার জন্মমাস বলে আজ তোমায় ভাবছি তা নয় কিন্তু,
তুমি তো আমার মনেই সকাল দুপুর রাতে।

সেই বছর দশেকের -” ছেলেটা” কে আজ খুব মনে পড়ছে জানো।
আহারে বাপ-মা মরা ছেলেটা যেন ভাঙা বেড়ার ধারে আগাছা — বড়ো অবহেলায় বড়ো হতে থাকে।

এতো গালাগালি, মার খেয়েও — সব কিছুর ভেতরে-” কি আছে দেখিই না”– এই স্বভাবটা আমায় বড়ো তোলপাড় করে জানো।

পাতিহাঁসের ডুব দিয়ে গুগলি তোলা, জলের তলায় নাগকন্যার সোনার চিরুনি তে চুল আঁচড়ানো, বৈঁচিডালে দাঁড়কাকের বসার ভঙ্গী—
তুমি কেমন সুন্দর করে ওর মন পড়ে নিলে।

ছেলেটা জলে ডুবে গিয়েও বেঁচে ফেরে জেলেদের ডিঙিতে।
” একবার দেখনা ডুবে কেমন লাগে”–সবাই বুঝি ওই ছেলেটা?
ওর সাথী রাজী হয়না।

আচ্ছা রবিবাবু সেই কোলাব্যাঙটা নাদুসনুদুস হয়েছিল যাকে ছেলেটা বাগানের খোঁটা পোঁতার গর্তে পুষে পোকামাকড় খেতে দিত?
আর সেই কাঠবিড়ালিটা পকেটে করে যেটা ইস্কুলে নিয়ে যেত সে কোথায় এখন?

যার নিজেরই চালচুলো নেই তার বুকে ভরা ভালোবাসা দিয়ে দিলে তুমি?

ভাগ্যিস সিধু গয়লানি ছিল। তার কাপড়ে খয়েরের রঙ লাগিয়ে, বাঁধা গোরুর দড়ি কেটে দিয়ে– সেই তার পরীক্ষা –” দেখি না কী হয়”–
গয়লানির স্নেহটুকু সব উথলে পড়তো ওর জন্য।

অম্বিকে মাস্টার যখন তোমার কাছে বলে গেলেন তোমার শিশুপাঠের কোন কবিতাই ওর মাথায় ঢোকেনা তুমি বলেছিলে সে ত্রুটি তোমার।
তা বাপু, তুমি একটা ব্যাঙ, দুটো কাঠবিড়েলি, তিনটে কাঁচ- পরানো চোঙ এসব নিয়ে ছড়া লিখতে পারলেনা ওর জন্য?

ঠিকই পারতে। তুমি লেখোনি কারণ তুমি চেয়েছিলে ও নিজে যা প্রকৃতি থেকে পেয়ে শিক্ষে পেয়েছে তা বই পড়ে হতোনা।

তোমার সে -” ছেলেটা” আজও কতো কতো ছেলের ভেতরে এমন ভাবেই আছে।
তুমি তো ফাঁকি দিয়ে চলে গেলে। কে ভাববে বলোতো তোমার মতো করে ওদের?

আচ্ছা এক কাজ করলে হয়না রবিবাবু– ” ছেলেটা ” যদি কোন পাঠ্যপুস্তকে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করা হয় এই ধরো তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণীর?
তোমাকেও তারা চিনবে ছোট্টবেলা থেকে আর তুমিও রয়ে যাবে ওদের প্রাণের ঠাকুর হয়ে। তুমি কি বলো?

1 thought on “” ছেলেটা” ************ সীমা সান্যাল

  1. זה נכון אתר לכל מי רוצה להבין נושא זה. אתה יודע הרבה שלה כמעט קשה להתווכח איתך (לא כי אני אישית הייתי רוצה כדי להשאיל). אתה בהחלט לשים חדש ספין על נושא אשר כבר דנו במשך עשרות שנים. מצוין דברים, פשוט נהדר!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *