তোমার ধ্বংসস্তূপ অনিরুদ্ধ /তোমারই তিলতিল করে গড়ে তোলা সরীসৃপের ছায়া।।

তোমার ধ্বংসস্তূপ অনিরুদ্ধ /তোমারই তিলতিল করে গড়ে তোলা সরীসৃপের ছায়া।।
কবিতার আকারে মনের কথা
কবি নই।
কলমে বাবিয়া মিত্র
আমি শতবার শতক্ষণে
নবনব রূপে
শুধু তোমার আলতো ছোঁয়া
হৃদয়ে মাখতে চেয়েছিলাম।
তুমি চৈত্রের কাঠফাটা
রোদ্দুর হয়ে এসেছো
আমার মুক্ত আঙিনায়।
কথার গরলে ভাসিয়েছো নৌকা
আর দূর দেশে দিয়েছো পারি।
আমি অপেক্ষায় অপেক্ষায়
করেছি দিনযাপন।
তুমি গোধূলির শেষ বেলায়
আবারো এসেছো
বৈকালের প্রথম কালো ছায়া হয়ে
আমার একলা ছাদ পেরিয়ে,
আমার রোদবৃষ্টি ঘেরা চিলেকোঠায়।
কখনও বা তুমি শ্মশানে গেছো
মড়ার খুলি গুলো গুলো গা ঘেঁসে ঘেঁসে
গেছে তোমার শরীরের আনাচকানাচে
সেই হাড় তুমি ছুঁড়ে মারতে চেয়েছো
আমায়
তুমি শীতের বিভৎস কুয়াশায় চাদর
জড়িয়ে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়েছো
আমার সাধের গ্রীনরুমে।
ওলোটপালেট করে দিয়েছো
আমার সুন্দর সুখস্মৃতি গুলোকে।
আমি জানি প্রিয়তম তুমি বারবার ফিরে
ফিরে আসো অলৌকিক তুফান হয়ে
আর উথাল পাতাল করতে চাও আমায়।
আগে আমিও তোমার মতন অশান্ত ছিলাম।
ঠিক তোমার রক্তের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া
বুকে হাঁটা সরীসৃপের সন্ধান পেয়েছিলাম।
তুমি আমাকে শরৎ চাটুজ্জের
“অনুপমা” বানাতে পারলে না।
তুমি বেছে বেছে আমায়
অর্থের ওজনদারীতে মেপে নিলে।
রবিঠাকুরের “নীরুপমা” বানাতে চেয়েছিলে?
আমার স্বপ্নের একটা আলাদা জগৎ ছিলো।
পরমাপ্রকৃতির মতন নিটোল নিষ্পাপ
ঝলমল
করতে চেয়েছিলাম তখন তোমার চোখে।
কিন্তু ক্ষমা কোরো প্রিয়
তোমার ওই বে-আব্রু অসংযত অশ্রাব্য ভাষা
গুলো আমাকে কর্দমাক্ত করতে চাইলো
দিনের পর দিন।
আমি অমলকান্তির মতন রোদ্দুর হোতে
পারলাম না
আমি পারিনি জীবনানন্দের বনলতা হোতে।
তবে হ্যাঁ আজকের “আমি” টা আর নিরুপমা নই।
নরম সরম প্রকৃতির নরম
অংশে আমি আমার ঠাঁই খুঁজি না।
তুমি ধরালে আমার হাতে তলোয়ার।
আর আমি বেছে নিলাম কলম, প্রিয়,
আমি তোমার চাহিদা পূরণ করলাম।
ঠিক তোমারই উল্টো চালে।
এক বিদুষী নারী
হয়ে উঠলাম।
এমন একজন নারী যে নিরুপায় নয়।
অসংযমী নয়, অস্থির নয়।
শুধু প্রতিবাদ করে কলমে কলমে।
তুমি আজও হেরে গেছো।
কিন্তু বুঝতে পেরেছো কি আমার প্রিয়
অনিরুদ্ধ?
হারজিতের খেলায় তুমি
আজও ঘেঁটে “ঘ” হয়ে গেছো।।
“তোমার সাথে আমার প্রেম টা আর হল না”
শুধু পোঁতা রইলো এক পঙ্কিল সম্পর্কের
“বিষবৃক্ষ “।
আমাদের মধ্যে শুরু হল ”
প্রেম আর অপ্রেমের দোলাচলে
বইতে থাকা এক অন্তর্দহন।
শুরু হল “হারজিতের খেলা” অনিরুদ্ধ।
তুমি শুধুই প্রভূত্ব খাটাতে চেয়েছিলে
আমার উপর।
কিন্তু আফশোস ঠিক “তোমার” ছাঁচে ফেলে
তুমি আমায় গড়তে পারো নি।
নারী কে গড়তে এসো না প্রিয়
নারী শুধু মাটির প্রতিমা নয়,
তাই এখানেও তোমারই পরাজয়
বুঝলে অনিরুদ্ধ???
এবার মুদ্রার দুটো পিঠ ওলোটপালোট
করে দ্যাখো
চোখে পড়বে তোমারই
তিলতিল গড়া সেই
বুকে হাঁটা সরীসৃপের কালো ছায়া।
তোমার ধ্বংসস্তূপ অনিরুদ্ধ।।
বুঝতে পেরেছো কি?