ক্ষুদ্রতম শব্দের দীর্ঘতম অনুভূতি “মা” ******* গীতশ্রী সিনহা

ক্ষুদ্রতম শব্দের দীর্ঘতম অনুভূতি
“মা”
গীতশ্রী সিনহা

পূর্বজন্মের চেনা নিয়তি, জন্ম-কবচ আজও চোখ মারে…!
বেপরোয়া নিঃশব্দ ভ্রুকুটি শীর্ণ ছায়ার হাতছানি দেখতে পাই !
এতো দেখি মৃত্যুর চেয়েও সাচ্চা !
অতিরিক্ত বিস্ময়ে… মুখচ্ছবি অস্পষ্ট !
রূপালী চক্ষুর আড়ালে এক হিম নিঃসঙ্গ অরণ্যে নিজস্ব গ্লানি ছুঁতে চায় … !
বাজ – বিদ্যুতে একলা দাঁড়িয়ে দেখি উঁকি মারা অসময় !
ঠিক তখন-ই… তখন-ই …
অজস্র মায়াময় শব্দ দংশন করে নির্জনতার অছিলায় !
কাঙ্ক্ষিত গোপন ফাটলে লজ্জার ছবি দেখিনা আজকাল আর!
সময়কে আয়নায় ফেলে কখনো জীবন জাগাতে চেয়ে ক্ষতবিক্ষত হয় !
তবু আজও… আজও…
অন্ধকারে তোমার হাত ছুঁয়ে বুঝে গেছি, নদীর স্রোতের কিনারে আমি… শুধু এক আঁজলা জল… এক আঁজলা জল মাথায় ছুঁইয়ে রাখি… !
বড় অতৃপ্তি -লম্বা দীর্ঘশ্বাস… শ্বাসরুদ্ধ করে না আর আজকাল, চেটে খেতে শিখেছি বালিয়াড়ি জীবন !
হেলেঞ্চা লতায় জড়িয়ে রাখি বিদায়ী রোমশ স্তব্ধতা !
মৃত্যুকে কোলে নিয়ে বসে আছি… শুধু বলে যাই — বলে যাই,
আর নগ্ন হয়ো না…
মা তোমায় নগ্ন এনেছে, মা’র সামনে নগ্ন হয়ো না !
যা খুশি করো পথেঘাটে — মা’র সামনে দিগন্ত দেয়াল এঁকো না —-
আঁতুড়ের স্তন পান আজ যেন রক্তের শ্লোগান !
খুঁজে দেখেছো কী ?
আজও আদরের দাগ ফুটে ফুটে আছে আষ্ঠেপৃষ্ঠে শরীরে পরতে পরতে… !
বৃষ্টি – ঝড়ে আশ্রয়ে তুমি সাবালক !
দিনকানা অপোক্ত রিফিউজি শরীর দিনাবসানে হাত পাতে যদি !
অনেকটা সময় নিয়ে প্যান্টের পকেটে খুচরো খোঁজো ——
বুঝি এইভাবেই…
এইভাবেই ক্ষমতা থেকে ক্ষমতার পালাবদল হয় !
অধিকার এসে দাবি করে নির্ভরতা টুকুর গায়ে কালো দাগ পড়ে,
এখনও সময় আছে,
সাত সমুদ্র ছুটে বেড়াতে হবে, কৌপীনে তুমি ভিক্ষুক!
ভালোবেসে তুমি মা’র হাত ধরো,শেষবেলা সেইটুকু সুখ।
মৃত্যু… জন্ম… ক্ষুধা চিৎকার… ভ্রুক্ষেপহীন ক্রমাগত নৈঃশব্দ…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *