নীলা সুনীলের আজন্ম প্রেম -ডিএস সুজিত মজুমদার

নীলা সুনীলের আজন্ম প্রেম
-ডিএস সুজিত মজুমদার
—
দু’টি হৃদয়ে নিগূঢ় ভালোবাসার জন্ম হয়েছিল
তারা গভীর বন্ধুত্ব হতে প্রেমান্ধ হয়ে পড়েছিল
অতঃপর
রক্ত সিঁদুরে দৃঢ় বন্ধনে জড়িয়েছিল।
একদিনও তারা নিজেদের স্পর্শবিহীন মানতে পারতো না
একদিনও তারা কথা না বলে থাকতে পারতো না!
দু’জন দু’জনার ধ্যান জ্ঞান ছিল
দু’জনে যেভাবেই হোক
দিনের এক চতুর্থাংশ সময় একত্রে ছিল
দিনের পর দিন, মাস, বছরের পর বছর।
একসাথে হাত ধরে পায়ে পা মিলিয়ে
বহু জায়গা চোখে চোখ রেখে বেড়িয়েছে,
যখন কোন যানে উঠতো
ওরা এমন ভাবে বসতো যাতে সমস্ত পথ ছুঁয়ে থাকা যায়।
শত রাত কাটিয়েছে সারারাত
কখনও মনে করেনি তারা ফোনে রয়েছে,
পাশাপাশি ছিল বছরের পর বছর
সর্বদা ওদের অনুভূতি ছিলো জীবন্ত।
প্রতিনিয়ত ঝগড়া ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার
কিন্তু যা ছিলো অপার তৃপ্তিদায়ক,
ভালোবাসার ছাপ ছিল সর্বদা,
মিটমাট না হওয়া অব্দি ঘন্টার পর ঘন্টা যেতো
কিন্তু ফোন রাখার কথা আসতো না।
ওরা নীরবতায় শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ শুনেই
কাটিয়ে দিতো ঘন্টার পর ঘন্টা,
হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হতো দু’জনেরই,
উভয়ে কাঁদতে কাঁদতে সময় বয়ে যেতো
একসময় সুনীল বলতো “রাখি সোনা”
নীলা বলতো,
“তুমি না হাসলে ফোন রাখবো না সোনা”।
অতঃপর
হেসে হেসে দু’জনে কিছুক্ষণ কথা বলে
ভালোবাসা মিশ্রিত বাইসোনা বলে ফোন রাখতো।
উভয়ের অশ্রুপাত নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার ছিল
প্রতিদিন চব্বিশ ঘন্টা কাছে না পাবার তরে।
সুনীল নীলাকে
নিগূঢ় প্রেমান্ধতায় ভালোবেসেছিল
তার জন্য আয়ুষ্কাল বিসর্জন দিয়ে দেবার মতো
ভালোবাসায় মজেছিল
নীলা যে ভালোবাসার মহারাণী ছিলো তার,
সুনীল ছিল নীলার জমিদার বাবু
যাকে সে প্রতিনিয়ত হাস্যরসে সুখে রেখেছিল।
তাকে একেবারে না পাওয়ার তরে চোখের জলে
প্রতিরাত বালিশ ভিজাতো বিনিদ্রতার প্রহরে,
আলুথালু বেশে পাগলীনির মতো হয়ে গিয়েছিল।
প্রথমদিন হতে একই অনুভূতিতে ভালোবাসার
উচ্ছ্বলতায় ব্যাকুল ছিল হৃদয়ের প্রকোষ্ঠগুলি,
জীবদ্দশার শেষ মুহূর্ত অবধিও থাকবে,
এটাই উভয়ের নিগূঢ় উপলব্ধি ছিল।
ক্রমশ —-