জলতরঙ্গ / অণুগল্প গীতশ্রী সিনহা

জলতরঙ্গ / অণুগল্প
গীতশ্রী সিনহা

চোখে অচেনা ভাষা, নিবিড় অনুভূতি , সঞ্চিত তৃণ যত্নে লালিত আবেগ – তুফান সরিয়ে দিতে পারে নি তপস্যা । কথোপকথনে আদুরে প্রলেপ, মুগ্ধতা। কথা হতো ফোনে… দেখা হয়নি।
সামাজিক দুর্যোগ কে আড়াল করতে বেদ, উপনিষদ, চন্ডী, গীতার শক্তিকে সাথে নিয়ে চলতো তপস্যা । কিন্তু, কোনো শক্তির কবজ বাধা দিতে পারেনি শেষ পর্যন্ত । যে ঐশ্বর্যের বিশ্বময় খেলা চলছে … তার স্পর্শ কতজনের ভাগ্যে জোটে !
অনুভূতি -আবেগ তাড়িত চোখের গভীর ভাষা নিয়ে তুফান আজ সামনাসামনি দাঁডিয়ে …

শুধু হাতটা ধরে তপস্যা আলতোভাবে …
যে বাতাস ছুঁতে পারে না, যে বাতাসে গাছের পাতা দোল খায় না, শুধু মাত্র ওদের দু’জনের মধ্যে বয়ে চলে বীজমন্ত্র , অলীক প্রকৃতি পূর্ণতা পায়… ক্ষয়িত কষ্ট শুরু হতে থাকে।
হিমালয় আজ দুয়ারে দাঁড়িয়ে… তাও কি সম্ভব !!!
দুটি অসম মন – অদৃশ্য শক্তির সামনে স্বীকারোক্তি করে চলে … আমরা অঙ্ক বুঝি না –কবি, শিল্পীর সময়-সাগর থেকে অদৃশ্য শক্তির ভাষা উচ্চারিত হতে থাকে জন্ম তারিখ আমরা মানি না ! খুঁজে পাবে না জন্ম তারিখ ! চিহ্ন নেই শরীরে কোথাও !!!!
চোখের কিছু দেবনাগরী ভাষা রুমালের ভাঁজে সংরক্ষিত হতে থাকে … তপস্যা আজ সোহাগিনী রাধা যেন। আহা… জন্মে দেখি বাঁশবন, শালুক জলে ভাসে, ভাসে শ্রীরাধার কাঁখের কলসি… সূর্যাস্তের আবহমান দৃশ্য থেকে ফিরে আসে চোখ… কে যেন, যৌবনে তাকে নিবেদনকরে পদাবলী, তখন তার চোখে আঁতিপাঁতি জল… মরণ ঘনায় যেন তিলে তিলে ! যে বিষাদ সে লুকিয়েছে তাকে যদি অন্ধকার বলি, সে কথা কি আড়ম্বর কিংবা গোপনে অশ্রুপাত? তপস্যার শরীর চুঁইয়ে মেঘ গোধূলিলগ্নের বৈরাগী।
তুফান, যে কৌতূহলে উদ্ভাসিত আত্মমগ্ন নিঃশব্দ বিলাপ, প্রেমের দুয়ার ঘিরে ভ্রমি এক অস্থির উন্মাদ পাথাল উথালি ঢেউ।
অন্ধকার ঘনায় অলৌকিক জ্যোৎস্নায়, বাতাসে ওড়াউড়ি ঘূর্ণিপাকে সময় ছুঁয়ে বিস্ফোরণ, এতোদিনের আদুরে লালিত স্মৃতি আজ ম্লান।
তপস্যার মন জুড়ে জলতরঙ্গ বাজে নতুন গল্পের শুরু হবে আজ… ” একলা মেয়ে আর চাঁদ “…
বাকি টুকু তোলা থাক কুলুঙ্গিতে, ব্যক্তিগত যত ছিল অধ্যায় ধারাপাতে লেখা থাক অবশেষে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *