বালুরঘাট হিলি রেলপ্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন আমুল বদলে দেবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার উন্নয়ন
রূপক দত্ত, বালুরঘাট, ১৪ই জুলাই, ২৪ঃ আগামী দুই বছরের মধ্যে হিলি হয়ে ট্রেন পরিষেবা শুরু হবে ভারত বাংলাদেশ এর মধ্যে। এমনকি এই ট্রেন পরিষেবা শুধু বাংলাদেশ নয়, চলা সম্ভব হবে আসাম, কোচবিহার ও মেঘালয় রাজ্যের মধ্যদিয়ে উত্তরপূর্ব ভারতে মাত্র ৬ থেকে ৮ ঘন্টায়, যা এতো দিন সময় লাগতো ২০ থেকে ২৮ ঘন্টা। এই নিয়ে ভারতীয় রেলবোর্ড বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে মোট ১৪টি রেলরুটকে ফাইনাল লোকেশন সার্ভের জন্য চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে হিলি হয়ে গড়ে উঠবে তিনটি রুট। আর এইসব রুটের মধ্যে রয়েছে এক) বালুরঘাট – হিলি – পার্বতিপুর – লালমনিরহাট – গিতালদহ- বামনহাট, দুই) বালুরঘাট – হিলি – পার্বতিপুর – লালমনিরহাট – গিতালদহ- ধুবড়ি ও তিন) বালুরঘাট – হিলি – গাইবান্ধা – মহেন্দ্রগঞ্জ – তুরা – মেহেন্দীপাথর। এইসব রুট বাস্তবায়ন করতে দুইমাসের মধ্যে সার্ভের কাজ সম্পূর্ণ করে আগামী দুইবছরের মধ্যে এইসব রুট দিয়ে যাত্রী ও পন্য পরিবহন শুরু করবে ভারতীয় রেল। এছাড়াও বাংলাদেশ রেল এই রুট দিয়ে চলে আসবে ভারত, নেপাল ও ভুটানে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশ রেলের এইসব রুটের সব রেলপথের পরিকাঠামো আমূল-পরিবর্তন করবে ভারতীয় রেল। করা হবে গেজ পরিবর্তন, আধুনিক সিগনাল ব্যাবস্থা, ডবল রেললাইন এমনকি করা হবে রেলপথ ইলেক্ট্রিফিকেশন। যার মাধ্যম দিয়ে এই প্রথম বাংলাদেশ রেলে গড়ে উঠবে বৈদ্যুতিক ট্রেন পরিষেবা।
ইতিমধ্যে বালুরঘাট হিলি রেলপথ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে অক্টোবর মাসের মধ্যেই সম্পুর্ন হয়ে যাবে জমি অধিগ্রহণ করবার কাজ। এবং আগামী একবছরের মধ্যে এই রেলপ্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করতে চলেছে ভারতীয় রেল। এছাড়াও পার্বতীপুর থেকে লালমনিরহাট হয়ে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত মিটারগেজ লাইন ব্রডগেজে রূপান্তর করবে ভারতীয় রেল। গড়ে তোলা হবে হিলি হয়ে গাইবান্ধা মহেন্দগঞ্জ তুরা নতুন ২৫০ কিমি রেলপথ। ভারত বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে মোট ১২৭৫.৫০কিমি রেলপথ যার মধ্যে বাংলাদেশে নতুন রেলপথ থেকে গেজ পরিবর্তন করা হবে ৮৬১কিমি।
ইতিমধ্যে বালুরঘাট হিলি রেলপথ বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা, যারমধ্যে জমি অধিগ্রহণ করবার জন্য ২৯৮কোটি টাকা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রসাশনের হাতে গত একবছর আগেই দিয়ে দিয়েছে ভারতীয় রেল। এছাড়াও রেলপথ নির্মান করতে বাকি অর্থ বরাদ্দ করে দিয়েছে ভারতীয় রেল।
এইনিয়ে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে সংবাদমাধ্যমে জানান এই প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছে ভারতীয় রেলবোর্ড। আগামী দুই বছরের মধ্যে যা সম্পূর্ণ করতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল। যারমধ্যে দিয়ে একটা অন্য দিগন্ত খুলে যাবে দুই দেশের রেল ইতিহাসের। এইপ্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের রেল একে অপরের রেলপথ ব্যাবহার করতে পারবে। উন্নয়ন ঘটবে দুইদেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার। উন্নত হবে দুইদেশের বানিজ্য পর্যটন থেকে যোগাযোগ ব্যাবস্থার।
এইনিয়ে জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি ফর করিডর তুরা হিলির আহ্বায়ক নব কুমার দাস আমাদের জানান এই করিডর নিয়ে আমাদের সংগঠন ২০১০ সাল থেকে ভারত বাংলাদেশ একযোগএ আন্দোলন সংগঠিত করেছিল, দুইদেশের মানুষ এই উন্নয়নের অংশীদার, উত্তরপূর্ব ভারত থেকে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সাধারন মানুষের দাবী এটা, যা পূরন হবার সম্ভাবনা তৈরি হতেই খুসির হাওয়া দুইদেশের মানুষের মধ্যে বইছে, দুইদেশের মানুষ এই রেল সংযুক্তির মাধ্যমে এক সুত্রে বাধা পরবে।
বালুরঘাটের সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার আমাদের জানান তিনি সাংসদ হবার পর থেকেই এই করিডর বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের লড়াই করেছেন, দুইদেশের সরকারের ঐক্যমতে বিবিআইএন চুক্তি বলবত হতে চলেছে যার মাধ্যম দিয়ে ভারত বাংলাদেশ নেপাল ভুটান একসুত্রে বাধা পরবে। এই করিডর বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে সব দেশের ব্যাপক আর্থিক উন্নয়ন ঘটবে বাড়বে বানিজ্যিক সহযোগিতার হার।