খোলা চিঠি ✒️✒️✒️ কল্যানী ব্যানার্জ্জী
খোলা চিঠি।
প্রিয়,
জানিনা এই সম্বোধনটা তোমাকে করার অধিকার আছে কিনা। তাও এটা ছাড়া কিছু মনে এলোনা।
খুব ইচ্ছে হল তোমাকে একটা চিঠি লিখি। এ চিঠি কোনদিন তোমার কাছে পৌঁছবে না আমি জানি। কারণ তুমি তো তোমার ঠিকানাটাই রেখে যাওনি।
শুধু বলেছিলে ভালো থেকো। ভালো আছি আমি খুব ভালো আছি।
তুমি তো জানো আকাশ দেখতে আমি খুব ভালোবাসতাম। আকাশের রঙের খেলায় আমি মুগ্ধ হয়ে যেতাম। আজকাল না সেই আকাশ টাই কেমন বেরঙ লাগে আমার। গোলাপ যে আমার ভীষণ প্রিয় ফুল তাও তুমি জানো । কিন্তু আজকাল সেই গোলাপ বাগানেই যাই না আমি।
কারণ গোলাপের সেই রুপ এবং সুগন্ধ এখন আর আমি অনুভব করিনা। যে পাখি গুলোর নানা রকম আওয়াজ শোনার জন্যে আমি বাগানে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম ভোরবেলা ও সন্ধ্যা বেলা, এখন সেই আওয়াজ আমার কর্কশ লাগে।
যে সুর্যোদয়ের রঙ দেখার জন্যে আমি ভোরবেলা উঠে মর্নিং ওয়ার্ক করতে যেতাম, এখন আর খুঁজে পাইনা সেই রঙ।
জানো, যে গোধূলির রঙ আমাদের দুজনকে একসাথে রাঙিয়ে দিয়ে যেত নদীর তীরে, এখন সেই রঙ আমার চোখে জ্বালা ধরায়। ভিজে সবুজ পাতাগুলো যখন রোদ্দুর পড়ে চিকচিক করতো, আমি ছবি তোলার জন্যে ছোটাছুটি করতাম, তুমি বলতে পাগলি একটা। সেই পাতাগুলোও এখন হলদেটে পাংশু লাগে আমার। এখন বর্ষার মুশলধারে বৃষ্টিতে ভিজলেও ভিতরটা আমার শুকনোই থেকে যায়।
আর আমার কবিতা ;যেটা ছিল আমার প্রাণ, তুমি ঠাট্টা করে বলতে আমি নাকি বড় লেখিকা হব,
সেই কবিতাও এখন আমার কাছে আসেনা।
পড়ে থাকে খোলা ডাইরিটা পেনটাকে বুকে নিয়ে।
খুব ভালো আছি গো আমি। শুধু জীবনের সব অনুভূতি গুলোই হারিয়ে ফেলেছি।
ইতি আমি —-
কল্যানী ব্যানার্জ্জী।