জীবনের চাওয়া **** মৌসুমী মিত্র
জীবনের চাওয়া
মৌসুমী মিত্র
**। ।**
বাবু মু তো মইরেই আছি বটেক ।মুর মতো মেইয়ের কথা লিখে আর কি মারবি বল তো !
জন্ম ইস্তক সবাই ডাকে “মা- খাগী” ,
মা টা যে জন্মের ব্যথা লিতে লারলো না ,,,,
চইল্যেই গেল।
মুই আপদ না কি চিল চিৎকারে কাঁদন লাইগছিলাম।
মাঠের হুউই পারে এক চাচী,হে মোরে কোলে তুইল্যে নিছিল।
অর বুকের দুধের দাম তরা কেউ বুঝবি লা রে !
মরা মায়ের দুখে বাপট ও বিবাগী হইন গেলা।
মা গেলা ,বাপ ও গেলা ,
মুই তো বেওয়ারিশ।
কামের লিইগ্যা যে যহন ডাক পারে ,অদের কাম কাজ কইরে দিই দু মুইঠ্যা ভাতের লাগি ।
বাবু ,
বয়স তো বইস্যা থাহে না,
জীবনের ধম্মে যৌবন আহে।
পিঁপড়ার মতো যৌবন জ্বালা কুটকুট কইরা কামড়াইতে লাইগলো।
আমারে কামড়ায় ,তার সাথে আশপাশের যোয়ান মদ্দা আর বুড়া ঢ্যামনাদেরও কুটুস কুটুস কইরা কামড়াইতে লাইগলো ।
মু তো খারাপই আছি , কিন্তুক ভদ্দরলোকরা ?
সুযোগ পাইলেই ছোঁক ছোঁক করে আশপাশে।
চরিত্তির কারোও ভালো লাই রে ।
না – না ,বাবু ভুল বইল্যাম,,,,,,
হুউই যে দিদিমুনি আছে না , ইস্কুলে ট পড়ায় ,উয়ার মরদ দাদাবাবু এক্কেরে দ্যাবতা মানুষ।
উয়াদের ভাবভালোবাসা দেহি ,আর হামার ও খুব সাধ যায় জানিস তো —–কেউ হামারে ভালোবাসুক ,এক্কেরে বুকের মঝে চেইপ্পে ধরে রাখুখ।
কুথাকে মুই যেতে দিবেক লাই। খুব সাধ যায় ।
হুইই দ্যাখ ,,,,, কি আবোলতাবোল বইকত্যে লারছি। হামাদের আবার ভালোবাসা!
জানিস তো বাবু হামি ও একজনারে ভালোবাইসতাম, অন্যের মরদ আছিল হে ।
তবুও তারে খুব ভালোবাসইতাম ,,,,, হয়তো হে ও বাসইত।কত্ত সুন্দর সুন্দর কথা কইত ,কত্ত সোহাগ করত।,,,,,,,,
উয়ারে হামার সবটুকু দিয়া, সবটুকু দিয়া ভালোবাইসতাম।
একদিন বুইঝ্যলাম ঐ মানুষটা ঠিক আগের মত হামার লাই।
না না
হে কুনো কতা কয় লাই , কিন্তু হামি তো উয়ার প্রতিটা শ্বাস বুঝি ।
বুইঝত্যে পারলাম হে আর হামার লাই ,
পাখি উইড়ে গেছে তার দাঁড়ে।
ভালো থাহুক অরা ভগবানের পায়ে মাথা কুটি।
তু কাগজের লোক আছিস ,একটো কথা রাখিস মোর—-
কুথাও হামার কথা লিখিস লা রে ।
হামাদের জীবন ,হামাদের ভালোবাসা সব পথেই পইরে থাহে। পথেই হারায়ে যায় সব ।
কথা ট রাখিস বাবু।