ঝড় ✒️✒️✒️ কলমে —- গীতশ্রী সিনহা

অণুগল্প —- ঝড়
কলমে —- গীতশ্রী সিনহা
হৃৎস্পন্দনের ঝংকার তুলে আকাশ তখন উগ্র মূর্তি। বিদ্যুতের ঝলকানি তে টুপুর দৌড়ে এসে আশ্রয় নেয় বাবার বুকে। রূপকবাবু অলীক কল্পনার সুখে টেনে নেন টুপুর কে। সম্বিত ফেরে নিশ্চিন্তে ঘুমন্ত মুখের দিকে চেয়ে। টুপুরের জীবনটা ছিল পেন্সিলে আঁকা একটি ছবি – হঠাৎ করে রাবারের স্পর্শে মুছে যায় সব কিছু… সদ্য সন্তানহারা পিতা ভাবেন, আজ হয়তো-বা টুপুরের বাবা বেঁচে থাকলে এইভাবেই মেয়েকে আশ্রয় দিতেন। স্বর্গীয় শান্তির ঘ্রাণ জড়িয়ে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে… স্বপ্নের ভিতর স্বপ্ন … যেন শিশির ঝরা নরম পালক…
২) অণুগল্প —- সিঁড়ি
কলমে —– গীতশ্রী সিনহা
বাঃ দারুণ ! একদম অন্যরকম স্বাদ ! গোগ্রাসে খেতে থাকেন রাধারানী, যেন গান্ডেপিন্ডে গিলছে লোভার্ত তার দৃষ্টি। ইস ! আজ কার মুখ দেখে উঠেছিলাম !
বউমা… ও বউমা… শুনছো বউমা ! তুমি তু তুমি খাবে না মা ?
কলঘর থেকে গলা উঁচিয়ে বলে —- আমি খেয়েছি মা, ভালো লেগেছে তাই আপনার জন্য অফিস ফেরত নিয়ে এলাম।
বউমা — সব টাই আমি খাবো বউমা ? বউমা, রূপ খাবে না ?
অফিসে আপনার ছেলে রোজ ভালো – মন্দ খায় মা…
খাবারের স্বাদ যেন আরও তৃপ্তি এনে দিলো ! দুমড়ানো আটপৌরে হতচ্ছাড়া মলিন জীবনে তামাটে সময়ের দাগ লাগতে লাগতে… সময় ঝুঁকে পড়েছিল দাঁত খিঁচানো সিঁড়ির ভাঁজে… স্যাঁতসেঁতে উচ্ছিষ্ট চিলেকোঠার গন্ডিতে। আধপাকা অগোছালো জটপাকানো চুলের গোছা, শীর্ণ দেহের পান্ডুলিপি শরীরের আনাচে-কানাচে উঁকি মারছে, জ্বলজ্বলে চোখ – বিষাদের ঠোঁটে আজ ফাগুনের ছায়া।
সে-ই দশ বছর আগে মেয়ে দেখতে গিয়ে কিছু অসংলগ্ন কথা বলে ফেলেছিল রাধারানী…
পরে বুঝেছিল মেয়েরা কোনো বাজারি প্রোডাক্ট নয়… সব যাচাই করা যায় না।
তাই আজ শীর্ণ হাত দেয় হাতছানি…