শিরোনাম-কিছু কথা।

কলমে-ছন্দা চট্টোপাধ্যায়।

উপন্যাসিকা-

(দীপের কথা)
আমি কাঁপছিলাম, আমি কাঁদছিলাম, আমি প্রবল ঘামছিলাম।আমি উপগত হতে পারছিলাম না।আমার শরীরে জ্বরের মাত্রার পারদ যতো তীব্র হচ্ছিলো,ততই আমার উত্তেজনার পারদ নেমে যাচ্ছিলো।আমি ডুকরে উঠলাম,-“পারছি না কেন শ্রী? আমরা কী আর কেউ ক‌াউকে ভালোবাসি না? “- শ্রীলাও আপ্রাণ চেষ্টা করছিলো। তার হলুদ দাঁড়াস সাপের মতো মসৃন, পিচ্ছিল নগ্ন তনুলতা দিয়ে বারবার আশ্লেষে পেঁচিয়ে ধরছিল আমাকে।ফিসফিস করে বলছিলো
-” ভালোবাসি তো ভীষণ ভালোবাসি! “- শঙ্খ লাগাতে চেষ্টা করছিলো।
দাঁড়াশের বিষ নেই সবাই জানে।কিন্তু কেউ কী জানে তার আলিঙ্গন শুধু গোখরোর জন্য! আমি গোখরো হতে চাই।দাঁড়াশের মধুমাখা মোহচুম্বন শুধু আমার জন্য!শ্রীলার ঠোঁট দুটি মন্ত্রোচ্চারণের মতো ছুঁয়ে যাচ্ছিলো আমার ঠোঁট থেকে আমার সম্পুর্ণ অবয়বকে। ওর অশ্রুভাসা ভিজে মুখের দিকে তাকিয়ে আমি অনুভব করলাম এই আমার শেষ নয়ন মেলা। আমি চিৎকার করে বললাম,-” তোমার এই ভিজে মুখের জলছবি একমাত্র দর্শন হয়ে র‌ইলো শ্রী। সব অন্ধকার হয়ে আসছে।তুমি আমাকে ছুঁয়ে থাকো শ্রী। আর কিছু দেখতে চাই না আমি।-“

শ্রীলার কথা।

দীপ কয়েকদিন থেকেই বলছিলো ওর বুকে একটা ব্যথা হঠাৎ বেজে ওঠে মৃত্যুঘন্টার মতো। বলে, কিন্তু হাসিঠাট্টার ছলে। ওর মুখে কোনো বেদনার ছায়া দেখিনি কোনোদিন। নেহাৎ চাতুরি ভেবে সিরিয়াসলি নিইওনি।কাল রাতে ভালোবাসার চরম মূহুর্তে দীপ ডুকরে ওঠে ‘পারছিনা!’ ও ভীষণ ঘামছিলো, ও কাঁপছিলো, ওর স্খলিত পৌরুষে ভিজে গিয়েছিলো ওর নিম্নাঙ্গ। দীপ টলতে টলতে ঘরের সংলগ্ন বাথরুমে ঢুকে গেলো। আমিও গেলাম। ওকে পরিষ্কার করে ধরে ধরে ঘরে নিয়ে এলাম। দীপ আমার মুখে হাত বুলিয়ে বললো-‘শ্রী, তুমি কাঁদছো?’ আমি অবাক হয়ে বললাম -‘দেখতেই তো পাচ্ছ! কাঁদবো না? কী হলো হঠাৎ তোমার?’ দীপ বললো-‘আমি দেখতে পাচ্ছি না। শ্রী,আমাকে হসপিটালে নিয়ে চলো। মৃত্যুঘন্টা শুনছি আমি।’ সেই রাতেই এ্যাম্বুলেন্স ডাকলাম। খবর পেয়ে এলো আমার দিদি-জামাইবাবু, দীপের দিদি।
ক্রমশ : —

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *