কবিতা : *মিলাবে মিলিবে* 🖊 নীহার কান্তি মন্ডল
![](https://www.dinajpurdaily.com/wp-content/uploads/2023/10/ed78f722-2428-45bd-a32f-e5b49c7e4eab.jpg)
কবিতা : *মিলাবে মিলিবে*
🖊 নীহার কান্তি মন্ডল
“দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে”
বিশ্বকবির এ চিরন্তন বাণী
কখন কিভাবে — না জানি
তারই উত্তরসূরির
এ যুগের হাজার কবির
অভীষ্ট লক্ষ্য হয়ে দেখা দেবে
হয়তো কবি নিজেও দেখেন নি ভেবে।
একটা সময়ে
কবিরা ছিলেন সাধারণের চেয়ে
একটু হলেও আলাদা।
তখন পাঠক ছিল অগন্য
তুলনায় কবির সংখ্যা ছিল নগন্য।
আর এখন –?
আজকের গণমাধ্যমের এই
অপরিমেয় উন্নতির যুগে
কবিও পাঠকের সংখ্যা
সমান সমান প্রায়
হয়তো বা পাঠকই সংখ্যালঘু
কবি-সংখ্যার তুলনায়।
কবি ও কবিতা আজ
ফেসবুকের অপার সহযোগিতায়
অনায়াসে মুঠোফোনের পাতায়।
কবিরাই অন্য কবির কবিতা বেশি পড়েন
কেউ বা না পড়েই বুড়ো আঙ্গুলে
টিপ-ছাপ ইমোজির দস্তখতে
আপন উপস্থিতির চিহ্ন আঁকেন।
কবিতার আঁতুরঘর ছিল এক কালে
স্কুল কলেজের কোনো নির্দিষ্ট দেয়ালে
অলঙ্কৃত দেওয়াল-পত্রিকা
ছিল কবিতার বাঁধানো খাতা
অথবা বার্ষিক ম্যাগাজিন,
আজ পাল্টে গেছে দিন
ফেসবুকে সাহিত্য-চর্চার ফলে
সকলেরই নিজস্ব “ওয়ালে”।
বোর্ডের ‘পরে তুলি কলমের
বালাই নেই অলঙ্করণের
আছে মোবাইলের কী-বোর্ড
যেখানে যথেষ্ট আঙুলের ছোঁয়াই।
হাজার কয়েক সাহিত্য-গ্রুপের
কয়েক শত কবি-সম্মেলন
ঘুরে ফিরে সহস্রাধিক কবির মেলা।
(আমিও তাদেরই একজন)
শুধু পারমুটেশন-কম্বিনেশনের খেলা।
স্বঘোষিত সাহিত্যিকও নয় তো বিরল।
সবই সাহিত্যে উদারীকরণের সুফল।
কবিতা লেখাটাও আজ সোজা
নেই সেই হরেক নিয়মের বোঝা
সহজ হয়েছে দু’চারটে কবিতা লিখে
কবি হিসেবে স্বীকৃতিও পাওয়া
‘কাব্যতীর্থ’ ‘কাব্য-ভারতী’
কিংবা ‘কাব্যশ্রী’ শিরোপা
না লিখেও বিশেষ কোনো কাব্য
সাহিত্য গ্রুপের বদান্যতায়
আজ হয়েছে সহজলভ্য।
“সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে”
আজকের সাহিত্য-বাসরে
— কবির এই অমোঘ বাণী
সাফল্যেরই অন্যতম চাবিকাঠি
সকলে নিয়েছি আমরা মানি’।