জর্জ বিশ্বাস ও নিঃসঙ্গ চিমনি ********* শান্তময় গোস্বামী
জর্জ বিশ্বাস ও নিঃসঙ্গ চিমনি
শান্তময় গোস্বামী
বন্ধ কারখানা শহরে এখনো একটা চিমনি নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে।
অঝোর বৃষ্টিতেও এ শহরের পৃথিবী আজ শুকনো।
ঘরগুলোর দরজা, জানালা এখনো খোলা।
মানুষ থাকে না এখানে। শরীর থেকে ইট, কাঠ, লোহা
উপড়ে খুলে নেওয়ার আর্তনাদ প্রতিধ্বনিতে থাকে।
দুর্ভেদ্য আগাছা সবুজে সেজেছে রক্ষাকবচ।
এখানে কেউ যেন কখনো ভেজে নি, কেউ কখনো ভেজে না।
এ শহরে তবু এখনো কিছু ছাদখোলা-ফাঁক দিয়ে চেয়ে থাকে আকাশ।
সেই আকাশ থেকে ঝরে পড়ে শেকড় চোয়ানো বৃষ্টি!
হু হু জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেয় কিছু হাসি। কথা-গরম প্রতিশ্রুতি …
কিছু ব্যথা। কিছু ইস্তাহার। পাশের শহরেই রোজ বৃষ্টিপাত।
মানুষ- ভেজানো বৃষ্টি।
আহা, সবাই যদি আজ এমন বৃষ্টিতে ভিজতাম।
সজীব খরিশের ফেলে যাওয়া খোলস, শ্যাওলা সাজানো
নিরাভরণ ক’টি কুকুর করোটি, প্রচুর অভিশম্পাত শুধু
জেগে থাকে নিয়ত প্রহরায়।
আশা নিরাশার দ্যোতনায় আকাশের দিকে ঠায় চেয়ে থাকে
অজস্র সুগভীর অ্যাসফাল্ট-ক্ষত পথ।
নবীন খুড়োর ভাঙ্গা চায়ের দোকানে
আপনমনেই জর্জ বিশ্বাস গেয়ে চলেন …
“মহারাজ, একি সাজে এলে হৃদয়পুরমাঝে!
চরণতলে কোটি শশী সূর্য মরে লাজে ॥
গর্ব সব টুটিয়া মূর্ছি পড়ে লুটিয়া,
সকল মম দেহ মন বীণাসম বাজে ॥”