#নির্ঘুম রাতে জেগে থাকে যারা #রত্না_রায়
#নির্ঘুম রাতে জেগে থাকে যারা
#রত্না_রায়
কিছু কষ্ট আছে বড্ডো নিজস্ব। আলমারির গোপন খোপে নরম রেশমি রুমালের বালিশে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে আছে তারা। সেদিন হঠাৎই কলিংবেলের সশব্দ আওয়াজে জুঁইফুলের গন্ধমাখা সকালটা জেগে উঠেছিলো। জাফরনী কুরিয়ার সার্ভিসের ইউনিফর্ম পরা একটা ঝকঝকে ছেলে দরজার সামনে। মুচকি হেসে সে আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে যায় একটা ময়ূরকন্ঠী পার্সেল। সন্তর্পনে ঘরে নিয়ে আসি পার্সেলটা। কোলের কাছে গুছিয়ে নিয়ে অসীম কৌতুহলে খুলে বসি তাকে। একটুকরো ঝিকিমিকি রামধনু রোদ্দুরের খিলখিলানি হাসি ঝাঁপিয়ে পরে আমাকে চমকে দিয়ে যায় আচমকাই। সমস্ত শরীর জুড়ে ছড়িয়ে পরে ইমনের মূর্ছনা । গোপন অসুখ সেরে যাওয়া এক সোনালী সুখে বাতাসে ভেসে বেড়ায় স্বপ্ন স্বপ্ন ধূলিকণা। সোনার কাঠি ছুঁয়ে থাকা মন মূহুর্তে ভুলে যায় সকাল, বিকেল, দুপুর ঢেকে দেওয়া ঈশান কোণে বিষন্ন সেই রাত্রিরঙা মেঘটার কথা। একটু একটু করে বড় হচ্ছে সে। ঝড় আসছে, বিপন্নতার সীমানা ছুঁয়ে এক তছনছিয়া তুফানী ঝড়। আগ্রাসী ক্ষিদের লেলিহান শিখা চেটেপুটে সাফ করে দেবে সব। খেয়াল হতেই আমি দরজা জানালা গুলোয় ছিটকিনি তুলে দি। রঙবেরঙের পুরু পর্দা এক নিমেষে শুষে নেয় সবটুকু রোদ্দুর। আর পরমূহুর্তেই ডাকাতিয়া কষ্টগুলো ঘোড়ার খুরের শব্দে পুরোপুরি দখল নেয় আমার। ছোট্ট ঘরটার অবুঝ কোণগুলো ঝঙ্কার দিয়ে ওঠে মালকোষের আলাপে। মনখারাপের দেশ থেকে ঝাঁক বেঁধে উড়ে আসতে থাকে জলজ মেঘেদের গুঁড়ো গুঁড়ো গন্ধ। বড়ো চেনা তারা। বড়ো আপন। আমি নিজেকে রাখি তাদের কান্নাভেজা আবদেরে ঠোঁটে। গুনগুনিয়ে উঠি ভুলে যাওয়া ঘুমপাড়ানি সুর। চুলে বিলি কেটে দিতে দিতে ফিসফিসিয়ে বলতে থাকি, ঘুমিয়ে পড় সোনারা। ঘুমিয়ে পড় আবার। এই তো আমি আছি তোদের কাছে, তোদের পাশে……
কিছু কষ্ট বড্ডো নিজস্ব……সমুদ্রের মতো, অতল, অন্তর্লীন…..
্্্্্্্্্্্্্্