সম্পাদকের কলমে গীতশ্রী সিনহা

সম্পাদকীয়
বিতর্কের বিষয় অবশ্যই… শৈশবের পয়লা বৈশাখ আর বর্তমানের মধ্যে কি বিস্তর ফারাক?
কিছুটা আলোকপাত করি।
টিভিতে একটা অনুষ্ঠান দেখছিলাম…পয়লা বৈশাখের বৈঠকী আড্ডা। পুরাতনী গান, পুরনো দিনের গল্পগুজব, রীতি নীতি….অবাক কান্ড! সবাই বলছেন, ছোটবেলায় সবকিছু ছিল, এখন নাকি কিছুই আর নেই! উন্নত প্রযুক্তি আর মহামারীর প্রকোপ কি আমাদের সতেজ, সাবলীল এবং অনাড়ম্বর জীবনযাত্রা কেড়ে নিয়েছে? শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রীতি-সম্ভাষণ আর বার্তা বিনিময়েই কি নতুন বছরের সীমাবদ্ধতা? আসুন, ভালো করে ভেবে দেখি। আমাদের শৈশব বা বাল্যকালের সুপরিচিত ছবিটি এখন শুধুই স্মৃতি ছাড়া আর কিছু নয়। পয়লা বৈশাখের দিন ভোরবেলায় স্নান, নতুন জামাকাপড়, পুজো পাঠ… বাবার হাত ধরে দোকানে গেলেই একহাতে ক্যালেন্ডার আর অন্য হাতে মিষ্টির প্যাকেট…..
বাবার মৃদু প্রতিবাদ, আহা, ও ছেলেমানুষ, ওসব থাক্!
সন্ধ্যায় পাড়ায় জলসা, ক্লাবের ফাংশান। সব মিলিয়ে জমজমাট!
বড়োবেলায় বড় শহরের আদবকায়দা….কতরকমের স্মৃতি! কিছু আন্তরিক, কিছু কর্তব্যচ্ছলে নিয়মরক্ষা। সবকিছুর মাঝে যখন দেখি, পয়লা বৈশাখের সকালে এখনও “বর্ষবরণ” অনুষ্ঠান…নব আনন্দে জাগো অথবা এসো হে বৈশাখ…এখনও কালীঘাট কি দক্ষিণেশ্বরে উপচে পড়া ভিড়, পুজোর ডালা…এখনও বাজার থেকে মিষ্টির প্যাকেট….ক্যালেন্ডার বাড়িয়ে ধরে চেনা গলা….এই যে দিদি, এদিকে….তখন হঠাত্ হালকা গরম বাতাসের ঝলকে মনে হয়, এই তো সব আছে, কিচ্ছু হারায় নি! আসলে হারায় না কিছুই, মনের কোঠায় মণিমুক্তোর মত মুহূর্ত সঞ্চিত থাকে শুধু পুরনোকে নতুনের মোড়কে আবিষ্কার করতে হয়। চির পরিচিত সেই বৈশাখের উষ্ণ হাওয়া আজও বইছে, শুধু বন্দী হয়েছে মুঠোফোনের আন্তর্জাল দুনিয়ায়! ঘরে বসে সারা দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার সময় মিষ্টি শৈশবের অনাড়ম্বর স্মৃতিতে ডুবতে কার না ভালো লাগে? বলুন তো, আপনারাই বলুন।
নতুন বছরের পথ সুগম্ভীর সুন্দর হোক এই কামনা করি সকল পাঠক, কবি সাহিত্যিক বন্ধুদের জন্য।
এবারের সম্পাদকীয় কলমে ছিলেন আমার প্রিয় মানুষ Sahana Nanda। দিনাজপুর ডেইলি ওয়েবসাইট ম্যাগাজিনের তরফ থেকে সাহানা – এর প্রতি রইল সাহিত্য শুভেচ্ছা।
নমস্কার শুভকামনা ভালোবাসা নিয়ে আজ এই পর্যন্ত। আগামী সংখ্যায় দেখা হচ্ছে নতুনভাবে, নতুন লেখায়।
আমি আপ্লুত