স্মৃতি -খেয়া ✒️✒️ সুনৃতা রায় চৌধুরী
স্মৃতি -খেয়া
সুনৃতা রায় চৌধুরী
জন্মাবধি ভাসমান জীবন আমার
ভেসে থাকা, ভাসিয়ে রাখার দায় অহর্নিশ
ডুব দিলে সমূহ সর্বনাশ!
অযুত চরণচিহ্ন বুকে ধূলা পঙ্কে ক্লিন্ন জীবনে
শুনি যেন দূরাগত নোনা জলের আহ্বান….
ভুলে যাই বাঁধা আছি রজ্জুডোরে কর্মডোরে
খেয়া পারাপার চলে সারা দিনমান
সেই চেনা ঝুরি নামা বুড়ো বট,ভাঙা ঘাট…
নদী জল ছলছল,বৈঠার তালে তালে মাল্লার গান
ব্যাপারীর হাঁক ডাক , পাওয়া আর হারানোর আনন্দ বেদনা
,মাঝি শুধু বুঝে নেয় পারানির কড়ি।
অতীতেরা ছায়া ফেলে এ জীর্ণ শরীরে,ক্ষিণ্ণ মনে
যখন তারারা ফোটে সন্ধ্যা নিবিড়ে,
সেই যমুনার ঘাটে এক চতুর কিশোর
রঙ্গ ভরে পার করে আহিরিনীদের
এক মন বড়ো লঘুভার… মেতে উঠি সে স্মৃতিচারণে।
এই তো সেদিন এক তরুণ কবি
শ্রাবণ গগনে মেঘ গরজন দিনে
ভরে দিয়েছিল বুক সোনার ফসলে থরে বিথরে
নিজেকে শূন্য করে… মনে জাগে সেই দিন!
ক্ষয় হয়ে যাওয়া এই ঝাঁঝর পাঁজরে
সেই চরণের আশা যুগ যুগ ধরে
যে চরণ বুকে ধরে সোনা হয় কাঠের সেঁউতি
সন্তানের দুধে ভাতে থাকার আশ্বাসে
গাঙ্গিনীর তীর ছুঁয়ে সুখ জাগে সারা বাংলায়।