#পুনর্জন্ম কলমে : গীতালি ৫. মৃত্যু :
#পুনর্জন্ম
কলমে : গীতালি
৫. মৃত্যু :
” আত্মা কখনও কোনো অস্ত্র দ্বারা খণ্ডিত হয় না। অগ্নিতে দাহ্য হয় না,জলে ভিজে যায় না, বায়ুতে বিশীর্ণ হয় না।”— ভাগবত গীতা ২ : ২৩
সাধারণত দেখা যায়, মৃত ব্যক্তির শোকে পৃথিবীর লোক শোক প্রকাশ করে। সেই ব্যক্তির শরীর ত্যাগী আত্মা চেষ্টা করে জীবিত পরিজনের সঙ্গে কথা বলতে, কিন্তু ব্যর্থতায়, হতাশায় অধীর হয়।
সেই আত্মা বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বর্ণনানুযায়ী, সে এক অপূর্ব আলোকিত সুড়ঙ্গ দেখতে পায়, যা এক অনাস্বাদিত আনন্দদায়ী স্বাধীনতাকে নির্দেশ করে। এগুলি সবই তাকে উজ্জ্বল দীপ্তিতে পরিপূর্ণ করে দেয়।
যখন সেই আলোকের স্পর্শ সে পায়, তখন সে সন্ধান পায় অপরূপ সৌন্দর্যের, দিব্য সুরের এবং অপূর্ব নিসর্গ প্রকৃতির শোভাময় দৃশ্যের। সে তার মৃত পরিজনদের ভাস্বর রূপের দ্বারা সম্ভাষিত হয় সাদরে এবং তাদের দ্বারা নির্দেশিত হয়।
আরো জানা যায় যে, যে ব্যক্তিরই মৃত্যু হয় তার (আত্মার) স্বাধীনতা থাকে, সে কেমন ভাবে এবং কোথায় তার অন্য জন্ম কাটাবে, সেটি স্থির করার।
মৃত্যুর পূর্বে যদি সেই ব্যক্তির আত্ম দেহত্যাগ করতে রাজি না হয়, তবে সেই আত্মা তৎক্ষণাৎ পার্থিব জগতে ফিরে যায়। আর সেই আত্মা দেহত্যাগে সম্মত হলে অচিরেই এক আধ্যাত্মিক রাজ্যে সে বিচরণ শুরু করে। এক রূপালী সূত্র যাকে তেজসূত্র বলা যেতে পারে, পার্থিব শরীরের সঙ্গে আত্মাকে সম্পৃক্ত করে রাখে, যখন আত্মা দেহত্যাগে অসম্মত হয়।
এটিকে বলা যেতে পারে মৃত্যুর নৈকট্য অভিজ্ঞতা (Near Death Experience)। সময় এবং ঘটনা পরম্পরায় মৃত্যু সর্বদাই সঠিক হয়, কারণ পৃথিবীর সময় সম্পূর্ণ হলেই মানুষ মৃত্যু মুখে পতিত হয়, যখন তার পার্থিব কর্ম শেষ হয়। যে পার্থিব অভিজ্ঞতালাভের জন্য পৃথিবীতে আসা, তা শেষ হলেই তবে মৃত্যুর দ্বারে যেতে হয়।
অনেক ‘বিষয়’ বা ব্যক্তি বিশেষের অভিজ্ঞতালব্ধ বর্ণনায় জানা যায় যে পরিজনদের থেকে মৃতব্যক্তির আত্মা ততক্ষণ পর্যন্ত দূরে যায় না, যতক্ষণ তার পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হয়। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, এটিই তার অস্থায়ী বাসস্থান হয়, তার যাত্রা শুরুর পূর্বে, যাকে নাম দেওয়া হয়েছে ‘পিতৃলোক’।।………………………..(চলবে)