*পুরুষ_সিংহ* ✒️✒️ *স্মৃতি মল্লিক সাহা*

*পুরুষ_সিংহ*
*স্মৃতি মল্লিক সাহা*
“ভালোবাসার জন্য না হলেও , একটু ভালো থাকার জন্য যদি পারো নিজেকে বদলে নাও”

নারী দুর্গাকে আমরা অসুরনাশিনী বা দূর্জন নাশিনী রূপে কল্পনা করি, আর রক্ত মাংসের নারীর সাথে দাসী বাঁদীর মত ব্যবহার করি! কি আশ্চর্য! সুন্দর মানসিকতা আমাদের তাই না? আসলে নারীকেে কিছু সংখ্যক পুরুষ মাটির বোবা পুতুলই মনে করে।
বৃথাই লোক দেখানো মন্ত্র উচ্চারণ করে বিবাহ আসরে। দিন বদলালেও ওদের সেই আদি পুরুষতান্ত্রিক অভ্যেস , রয়ে যায় অবস্থানে অস্তি মজ্জায়।
একবারও কি মনে পড়েনা, নারীই মা, স্ত্রী এবং কন্যা। কেমন লাগবে মা বা কন্যা বা বোনটি যদি পুরুষতান্ত্রিক লাঞ্ছনার শিকার হয়? পুরুষ তোমার অসুর সভাব , ভেবেই নিয়েছে নারীর ভালোবাসা অটুট ,অপরিবর্তিত তাইনা ? ” যা বেরিয়ে যা দুর হ চোখের সামনে থেকে ” কুকুর বিড়ালের মত তাড়ালেও তোমার সম্মান রক্ষার্থে যাবে না , জুতো মেরে একটা মিষ্টি কথায় পরিবর্তন হবে বিশ্বাস ?
কিছু পুরুষের হৃদয় পাথরে বাঁধানো , মুখে ঝরে খনিজ পদার্থ । লাঞ্ছিত অর্ধাঙ্গিনীর অশ্রু ওই পাথরকে ভিজাতে পারে না। ওদের হৃদয়ে সহমর্মিতা নেই। এটা শিংহীন সিংহ..
এই রূপ লাঞ্ছনার শিকার হয়ে কত নারী জীবন শেষ করে দেয়, তবুও ভয়ে ওদের হৃদয় গলেনা। মানবিক গুন গুলো যদি মানুষের মধ্যে নাই থাকে তাকে কি মানুষ বলা যায়?

আর কত কাঁদবি’রে বাছা
আর কত জল আছে চোখে?
এ সমাজে নারী দেবী নারী’ই দাসী
বাঁচতে হলে লড়তে হবে তোকে।

এই সুন্দর পৃথিবী অমূল্য জীবন, কেউ স্বেচ্ছায় হারাতে চায়? কতটা দুঃসহ অত্যাচারে একটা মানুষ নিজের জীবন বলি দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে ,ভেবে দেখো ভাই ? চোখ থাকতে দেখতে পায় না , হৃদয় থাকতেও অনুভব বুঝতে পারে না ?
একটা কথা আছে…
” থাকতে মর্ম বুঝিস না, না থাকলে কাঁদবি”
এমন অবস্থায় নারীর উচিৎ আর একটু সাহসী পদক্ষেপ!এসেছে পাল্টা দেওয়ার সময় দেওয়ালে পিঠ ঠেকলে আর পিছনে ফেরার জায়গা থাকে না। অতএব , সামনে ধাক্কা দিয়ে এগোতেই হবে তোকে ….
নিজেকে চিনতে হবে তুমি পারলে আমিও কেনো নই?

তোর ভিতরে অনেক গুণ , অনেক প্রতিভা। যে দেয় না দাম ,তুই ও তাকে বুঝিয়ে দে.. তুই কিছুতে নস কম..পরাজয় স্বীকার না করে মানসিকতা পাল্টা । যা ভালো লাগে তাই কর , বই কে সাথী কর, মন পাল্টে যাবে, দেখবি দূনিয়াটা কত সুন্দর।
একটু চা বা কফি করে ব্যালকনি তে বস নইলে বিকালে ছাদে একটু হেঁটে আয়। পাত্তা না দিয়ে নিজেকে পাল্টে নিজের মতো ভালো থাক। জীবনের কাছে হেরে যাওয়া, কক্ষনো নয়।
নিজের অস্থিত্ব , আত্ম মর্যাদা বিসর্জন দিয়ে নয় কেঁদে লাভ নেই ।
—–
এবার মনেও পড়ে না ? সেই যে ….
ঝড় বাদলে বৃষ্টি ভেজা রাতে , অন্ধকার গ্রামে একটা রাজ কুমারী কে দেখতে গেলে যে দিন ? এক চাকরি ছাড়া কি ছিল তোমার সেদিন ? ছিলো না ভিটে বাড়ি , সেদিন কোথায় ছিল এই ত্যেজ একরোখা স্বভাব? বুঝবে যখন সময় থাকবে না ,এই অসভ্য স্বভাবেই ভাসবে সব !
পুরানো স্মৃতি মনে পড়ে না, একটুও কি আফসোস হয় না , গালি গালাজ দিয়ে কী লাভ হয় ? ভালো থাকার জন্য চুপ থেকে একে অপরের সঙ্গ দেওয়া যায় না ? দুটো প্রাণী শেষের কটা দিন , কে জানে কবে ফুরিয়ে যায়… ?

সারা জীবন কি করলাম আর কি হারালাম এটা না ভেবে ।এটা ভাবো যা আছে এটুকুই মোক্ষম ,তাকে আগলে রাখো । চারিদিকে দেখো চেয়ে এটাই কত জনের নেই রোগ ভোগ অসুখ আর ঔষুধে কত মানুষ নিঃস্ব হয়েছে। কত প্রিয় জন হারা ভেবেছ তাদের কথা কখনো ?
কতটা অধৈর্য আর অসহায়তায় একটা প্রাণ মুত্যুর মুখে ঝাঁপায়? মুখে এমন কোনো কথা বল না যা পরে পস্তাতে হয় ? মানুষ হয়ে এটা আমার মানবিক দায়। একটু ভাব ,জীবনে কত টুকু দরকার ?
তোমার দেওয়া দুঃখের চাপে ক্ষয় না হয় কোনো প্রাণ।
বেঁচে থাকলেই তো থাকবে কীর্তি , যশ ? কি হবে আপনার চেয়ে আপন সেই প্রিয়জনের মুখের হাসি কেড়ে নিয়ে?
এক দিন আয়নার মুখোমুখি বসতেই হবে । সস্তার গালি গালাজে বাড়ে না মান! ঘটিয়া পাবলিসিটিতে নিজের স্ট্যান্ডার্ড বাড়বে কি ? সবাই মুখ ফিরিয়ে নেবে….
পুরুষ অসুর ভেবেই নিয়েছে নারীর ভালোবাসা অপরিবর্তিত,পরিবর্তন হবে না ইতিহাস ।
…✍🏽 *স্মৃতি মল্লিক সাহা*

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *