এ এক অন্য সকাল … ডরোথী দাশ বিশ্বাস
এ এক অন্য সকাল …
ডরোথী দাশ বিশ্বাস
এ এক অন্য সকাল,
এ এক অন্য পথ,
যে পথে কখনো পড়ে নি তোমার পায়ের চিহ্ন।
আজ যাবে নামচির পথে।
অনন্তপ্রসারী পথের দু’ধারে সারি সারি অরোকেরিয়া, ধুপিবন,
অভ্যর্থনার আঙ্গিকে দাঁড়িয়ে সতেজ সবুজ।
আজ এ পথে এঁকে দাও তোমার পদচিহ্ন।
প্রাত্যহিক কর্মব্যস্ততার জীবন,
যানযট-তুচ্ছ ক্লেদ গ্লানি-মান-অভিমান-বেদনা, ঈর্ষা ও অহংকারের দূষণ, ক্লান্তিকর সময় অতিক্রম করে
দু’দন্ড কলহাস্যে দিগন্ত-আকাশ-বাতাস হোক উতরোল।
নিজস্ব বৃত্ত ছেড়ে প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে দেখো,
সূর্য থেকে আলো কেমন ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে,
ছড়িয়ে পড়ছে অমল বাতাস,
জীবনের সব রসদই পরিপূর্ণ এখানে।
বনস্থলী ধূপের গন্ধে পবিত্রভূমি।
মন্ত্রপূত রঙ-বেরঙের সার সার ধর্মীয় পতাকা উড়ছে বাতাসে।
রঙীন পোশাকে সজ্জিত,নাকে
কাঁচা সোনার নোলক, পায়ে রূপোর ভারী মল,
গলায় রঙিন পাথরের মালা,
রৌদ্রের আঁচে আর্দ্র কুঞ্চিত ত্বক,
সহজ সরল হাসিমুখ,
অথচ কতো নির্লিপ্ত পাহাড়ি নারী পাকদন্ডী পথ বেয়ে
চলেছে মেঘবাড়ির ঠিকানায়।
ধ্যানগম্ভীর প্রকৃতির রূপ দেখো আর শুধু স্তব্ধ হও।
সমস্ত ইন্দ্রিয় একত্রিত করে
পান করো ধরার এ অমৃতরূপ।
আজই কি আসবে ফিরে,
চড়াই উৎরাই ভেঙে সমতলে, চা- বাগান, ছায়া গাছ, অরণ্য ঘেঁষা পড়ন্ত বিকেলের ঝিমধরা আলোয় ?
না হয় একরাত থেকে যাও,
টুপ্ করে জ্বলে ওঠা সন্ধ্যাতারা আর
বনজোছনার সাথে পরিচিত হতে।
তোমার উপস্থিতিতে বনস্থলী শনশন হাওয়া, অতলতম খাদে ছলছল ঝর্ণা,
কুলকুল শব্দে এঁকে বেঁকে বয়ে চলা শীর্ণ জলধারা,
ঝরঝর পাতাঝরা শব্দে মাতোয়ারা।
স্মৃতি হিসেবে নিয়ে এসো
সেখানকার মাটিসহ
অন্ততঃ একটি চারাগাছ,
স্থান দিও তাকে টবে বা উঠোনের এক কোনে,
সে হোক না সেলাজিনেল্লা,
লাইকোপোডিয়াম বা
অনিসিয়া অরাটাম।