আমি নারী, আমি গর্বিতা(অন্তিম পর্ব) কলমে-নিতু চৌধুরী
আমি নারী,আমি গর্বিতা(অন্তিম পর্ব)
কলমে-নিতু চৌধুরী,,
আমরা নারী রূপে শক্তির আধার,উৎস সৃষ্টির ,আমাদের মধ্যেই থাকে সংসারের সৃষ্টি-স্থিতি-লয়।একজন নারীই পারে সংসারের জুতো সেলাই থেকে চন্ডী পাঠ সবই সামলাতে। পাঠক গন খেয়াল করে দেখবেন হয়তো কোন সংসারের স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরি করেন কিন্ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্ত্রীকে অফিসে যাওয়ার আগে বা অফিস থেকে ফিরে সংসারের খুঁটি নাটি দায়িত্ব সামলাতে হয়।ক্ষেত্র বিশেষে ব্যতিক্রম নেই তা বলছি না তাই প্রথমেই বেশিরভাগ কথাটি উচ্চারণ করেছি। সন্তানের শিক্ষা দীক্ষার ক্ষেত্রেও দেখা যায় মাকেই বেশি দায়িত্ব পালন করতে হয় যেন কষ্ট করে সন্তান জন্ম দিয়েছে বলে সব দায় তার। বাড়ির অসুস্থ মেম্বার টির দেখাশোনা তাও তো বাড়ির মহিলা টির ঘাড়েই বর্তায় কারণ আমরা মানে মেয়েরা ছাড়া কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা আর কারই বা আছে।সংসারের সব দায়িত্ব সামলাবার পরেও বলা হয় বিশেষ করে হাউজ ওয়াইফ দের ক্ষেত্রে “ওতো সারাদিন শুয়ে বসেই থাকে, কাজ কি আছে?” কতোটা খাটুনি দিলে সংসারের দায়ভার সুন্দর করে পালন করা যায় তিনশো পঁয়ষটটি দিন বিনা ছুটিতে,বিনা বেতনে অসম্মান সহ্য করে তা কেবল একজন গৃহবধুই জানে।আমার মতে বাইরে কর্ম রতা মহিলাদের থেকে গৃহবধু নারীদের কাজ কোন অংশেই কম পরিশ্রমের নয় কিন্ত পারিশ্রমিক নৈব নৈব চঃ।মনকে বোঝাতে হয়,,,,
আমি নারী, সব করতে পারি,
ভালোবেসে সমাজ সংসার রূপী এই খেলাঘর
ভুলে যেতে পারি নিজের ব্যক্তিগত পরিসর।
ইচ্ছে শক্তি দমন করে, দুঃখ-কষ্ট ভুলে
,সামনে এগিয়ে চলি সব বাঁধা ঠেলে,
কর্ম শক্তির বলে হয়ে আত্ম নির্ভর,
হতে পারি নিজেই নিজের দোসর ,
মাতৃরূপেন সংস্থিতা,শক্তি রূপে সনাতনী, যতোই ঝড় আসুক, কখনও হবো না বিপথগামী,
আমি সম্পূর্না নারী,আমার চলার পথের দিশা, আমিই শুধু জানি।
আমি আমার সংসার ভালোবেসে, আমার সুখ বিসর্জন দিয়ে, আমার ভালোলাগা মন্দ লাগা ভুলে আত্ম ত্যাগের মধ্যে দিয়ে যে ভালোবাসার রাজ প্রাসাদ গড়ে তুলেছি তার একচ্ছত্র অধিপতি আমি। এভাবেই ভাবতে পারি আমরা মেয়েরা শুধুমাত্র নিজেদের আত্ম তুষ্টির জন্য নয়,নিজের যোগ্য সন্মানের জন্য, নিজের অধিকারের জন্য। আমরা আছি বলেই ভবিষ্যতের জন্ম, আমরা আছি বলেই আছে বিশ্ব সংসার।
আমার মতে প্রত্যেক নারী যেদিন এভাবেই নিজেকে নিয়ে নিজের সৃষ্টিকে নিয়ে মেতে উঠবে সেদিন ঘটবে সত্যি কারের নারী সত্বার বিকাশ। কোন পুরুষ দূর্বল ভাবতে পারবেনা কোন নারীকে, ঘটবে না কোন নির্ভয়া হত্যার ঘটনা।
গৃহবধুই হোক বা কর্ম রতা মহিলা আমরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে সন্মানের সঙ্গে বাঁচবো আমার অধিকারে গর্বের সঙ্গে বাঁচবো কারণ “আমি নারী, অধিকার ছিনিয়ে নিতেও পারি ” এটাই হোক নাহয় আমাদের আগামী দিনের এগিয়ে চলার মন্ত্র।।