~” ঘড়ির কাঁটা “~ ~ তরুণকুমার পাল

কবিতা~” ঘড়ির কাঁটা “~
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
তরুণকুমার পাল

ইংরেজি কুড়িএকুশ সমাপন- ওই ঘড়িতে নিশি বারোটা- ঘটলো তোমার আগমন- স্বাগতম এসো এসো- কুড়ি বাইশ -নব অতিথি-
আমরা তোমারে সাদরে করি বরণ সম্ভাষণ-
আমরা সবাই তোমার পথ চেয়ে-
তুমি আসবে সবার জন্য কিছু শুভ বার্তা লয়ে –
হে নব অতিথি তোমার উপর আজ অনেক আশা ভরসা –
ওইযে হাঘরে মানুষগুলোর নিদারুণ কষ্টে – তুমি কি পারবে দিতে ওদের কিছুটা কষ্ট- ভুলিয়ে কিছুটা শুভ সুখ উপহার দিতে?
যা পেলে ওই মানুষগুলো পাবে একটুখানি শান্তি ও স্বস্তি-
স্বার্থপর মানুষগুলোর মন হবে স্বার্থহীন- থেমে যাবে এতো এতো অসহায় মানুষের হাহাকার-
যদিও দুঃখ কষ্টগুলো সঙ্গে নিয়ে আজ ওরাও অভ্যস্ত-
নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারতো? তার মধ্যেও- নতুন আশার স্বপ্ন নিয়ে ওরা বেঁচে থাকে, একএকটি বছর আসে নব অতিথি হয়ে ঘড়ির কাটার সাথে-
আবার সময় শেষে ফিরেও যায়-
অসহায় দুস্থ মানুষগুলোর সেইতো দেখি আশাহত শুকনো মুখ, হাসি বিষন্নতার ছায়ায় ঢাকা –
ভুখা উদরের জ্বালা কি সহজে ফুরায়? আচ্ছা সুখের দিন !- সেতো শুধুই ওই বিত্তবানদের?গাড়ি, প্রাসাদ, স্বাদু ভোজ‍্য সবই ওদের।
আর দুস্থদের জন্য কিছুই নেই -সেইতো অন্ন শূণ্য –
ওদেরতো পোড়া ললাটে জোটে শুধুই বঞ্চনা, হতাশার মুঠো মুঠো ভস্ম-
ওগো নব অতিথি তুমি কি শুনতে পাচ্ছো? পাশে পথের ঝুপড়িতে!
ওইযে শোনা যায় কোন এক ক্ষুধার্থ শিশুর ক্রন্দন নিনাদ!
শুনতে পাচ্ছো? পাবে-ভালো করে কান পেতে শোনো-
আর একটু বোঝার চেষ্টা করোতো–
ওদের তীব্র ভুখার জ্বালা কতখানি?
আর ওইযে একটু দূরে ঝিকিমিকি আলো গগনচুম্বী ইমারত দেখছো?
ওখান থেকে যে গানের সুর ঝংকারের সাথে ভেসে আসছে অট্টহাসি?
ওটা কি জানো! ওটাই বিলাসবহুল ফাইভ স্টার নাইট ক্লাব,
বিত্তবানদের উন্মথিত যৌবনের আমুদে বিনোদনের জন্য –
ক্ষণিক মধ‍্যরাতের খেয়ালি খুশ মস্তি চলে-
এখন ওখানে চলছে সুন্দরী অপ্সরা- রূপসী নটিনীদের আধুনিক ডিস্কো নৃত্য –
সুরবাদ‍্যের তালে তালে নানা অলংকার- সজ্জিতা উন্মুক্ত কটি দোলন লহরী- হাওয়ায় উড়ছে গোছায় গোছায় টাকা আর রঙিন সুরার ফোয়ারা-
নব অতিথি রূপে আজ সবার ঘরে ঘরে তোমার শুভ পদার্পণ-
অনেক আশা আস্থা তোমার উপর মনে সবার হে নব অতিথি –
তুমি কি দিতে পারবে তোমার ঘড়ির কাটার সময়ের সাথে ওই দুঃখীদের কিছুটা হলেও দুঃখ কষ্ট মেটাতে? ফোটাতে পারবে কি ওদের শুষ্ক ঠোঁটে একটু তৃপ্তির হাসি – খুশিতে ভরবে ওদের উদ্ভাসিত নয়ন?
হে নব অতিথি ওদের মনেতো শুধু এই টুকুই চাওয়া!
তোমার ঘড়ির সময়সীমার মধ্যে ওদের প্রত্যেকের ভুখা উদরে-
দুবেলা দু’মুঠো ভাতের সুরাহা হবে কি?
তুমি কি সত্যিই আস্থাভাজন হয়ে ওদের করতে পারবে কিছু স্বপ্ন পূরণ?
নাকি তুমিও শুধুই নিছক ঘড়ির কাঁটা হয়ে ভাতের বদলে কাঁটাই বিঁধিয়ে যাবে ওদের কণ্ঠনালীতে উদরে???

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *