কার্ল মার্কস এর দর্শন। কলমে-ছন্দা চট্টোপাধ্যায়।
কার্ল মার্কস এর দর্শন।
কলমে-ছন্দা চট্টোপাধ্যায়।
বিখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ এবং লেখক রাহুল সাংকৃত্যায়নের লেখা দর্শন-দিগদর্শন গ্রন্থ (বাংলা অনুবাদ-ছন্দা চট্টোপাধ্যায়-আমি)থেকে রাহুলজীর কার্ল মার্কস সম্বন্ধে কিছু মূল্যায়ন আমি তুলে ধরছি।
“–কার্ল মার্কসের জন্ম হয় রাইনল্যাণ্ডের ট্রেবেজ নগরে।তিনি বন,বার্লিন এবং জেনার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করেন।জেনায় তিনি ‘ডিমোক্রিটাস এবং এপিকিউরাসের প্রাকৃতিক দর্শন’ এর ওপর নিবন্ধ রচনা করে পি-এইচ.ডি উপাধি পান।বস্তুবাদী হওয়ার আগে মার্কস ছিলেন হেগেলের দর্শনের অনুসারী।গোড়া থেকেই তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক মতবাদ ছিল উগ্র সমালোচনামূলক। অতএব কেনইবা জার্মানের কোন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে অধ্যাপক পদে নিযুক্ত করবে?!মার্কস পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনাকে অবলম্বন করে 24 বছর বয়সে “রাইনিস সাইটুঙ”পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।ফলে প্রুশিয়ান সরকার তাঁকে অত্যন্ত বিপজ্জনক ঘোষণা করেন।ফলে মার্কসকে দেশছাড়া হতে হয়।প্রথমে তিনি ছিলেন প্যারিসে,তারপর বেলজিয়ামের ব্রুসেলস্ এ।কিন্তু সেখানকার সরকারও প্রুশিয়ার অসন্তুষ্টির ভয়ে মার্কসকে চলে যেতে বলেন।শেষ পর্যন্ত তিনি 1849 খৃষ্টাব্দে লণ্ডন চলে যান এবং বাকি জীবন সেখানেই অতিবাহিত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি দর্শনেরই ছাত্র ছিলেন,এবং নিজে ছিলেন একজন প্রথম শ্রেণীর দার্শনিক।কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর সামাজিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এতো প্রখর,দৃঢ় ও মৌলিক যে,সমাজতত্ত্ব,অর্থনীতি এবং রাজনীতির একজন মহান চিন্তাবিদ হিসেবে তিনি যতটা খ্যাত,দার্শনিক হিসেবে ততটা নন।অবশ্য তার অন্য একটা কারণও আছে।শিল্পের ন্যায় দর্শনও বিত্তশালী অবসরভোগী ব্যক্তিগণের মনোরঞ্জনের বিষয়।এই শ্রেণীর ব্যক্তিগণ যে ধরণের দর্শন চান,মার্কসের দর্শন সে রকম নয়।সুতরাং কেনই বা তাঁরা মার্কসকে একজন দার্শনিক হিসেবে গন্য করবেন?”(রাহুল সাংকৃত্যায়ন)।
অনুমতি পেলে পরবর্তী অংশ গুলি কয়েকটি পর্যায়ে দেব।