অণুগল্প / কলমে সাহানা
অণুগল্প / কলমে সাহানা
ফ্লেভার # 1
“বন্ধু ” শব্দটার কোনো জাতিভেদ নেই, নেই বয়সের সীমানা। এই পর্যন্ত পড়ে থামল তিতির। বই থেকে চোখ তুলেই মনে পড়ল, মা আর অমলকাকু সিনেমা দেখতে গিয়েছে। ওরা বন্ধু। অথচ এই ফাঁকা ঘরে সে একা কি করবে! ওর-ও একটা বন্ধুর দরকার, খুবই।
ফ্লেভার # 2
ঝনঝন করে একটা শব্দ। ছুটে কিচেনে গিয়ে আলোর সুইচটা… জ্বলছে না! হঠাৎ দুটো চোখ, লাল টকটকে খুব কাছেই। পেছোতে গিয়ে হোঁচট! কানের কাছে হিমশীতল স্বর, বলেছিলাম না, আমরা আছি! আমরা আছি, থাকবো
ফ্লেভার # 3
প্রতিভাদেবীর ভুরু কুঁচকে উঠলো। দেখলেন বারান্দার টবে মাটি শুকনো। অর্থাত্ জল পড়েনি বেশ ক’দিন। এমনিতেই তিনি ভীষণ নিয়মনিষ্ঠ মানুষ, অগোছালো কাজকর্ম একদম অপছন্দকে করেন না। চরম বিরক্তি সহকারে গাছে জল দেওয়ার বালতি নিতে গিয়েই নজরে পড়ল বারান্দা দিয়ে সোজা নিচের উঠোনে। ভানু কোমরে হাত দিয়ে কি যেন দেখছে!
-অ্যাই ভানু ….গলা সপ্তমে
-এই যে গো মা ঠাকরুণ…..বেড়ালটার বাচ্ছা হয়েছে…একসঙ্গে চারটে।
হাসিমুখে জানায় ভানু।
ঝটিতি শাড়ি জড়িয়ে নীচে নামার প্রস্তুতি। মাঝে কিচেনে গলা ঢুকিয়ে উচ্চস্বরে …. ওরে দুধ গরম করে আন তো….
ফ্লেভার # 4
বাড়ির নীচে একফালি জমি। বাগান করার ইচ্ছে বহুদিনের। দুকামরার ফ্ল্যাটে থেকে শখটা শখই থেকে গিয়েছে। বাস্তবে কার্যে পরিণত হয়নি।
আজ মনটা ফুরফুরে। বেশ কয়েকটা মরশুমি ফুলের চারা এনে বাগানে পুঁতে দিয়েছে সকালেই। দেখা যাক্। কেমন ফুল হয়!
বিকেলের পরে রোদ পড়ে এলে বাইরে বেরিয়ে চক্ষুস্থির!! একি!! পাশের বাড়ির কুকুরটা দুপায়ে ফুলের বেডে গর্ত খুঁড়ে চলেছে! তার পায়ের দাবানিতে সব চারাগাছ তছনছ!
কি বলবে কিছুই ভেবে পায় না! হায় কপাল!!
ফ্লেভার # 5
একটা দাপুটে হাওয়া বইলে গুমোটটা কেটে যেতে পারে। কোমরে দুটো হাত রেখে সোজা তির্যক সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকে রাজা। আজ এই নিভন্ত দিন আর গুমোট পরিবেশ ওর মাথা ধরিয়ে দিচ্ছিল। একটু ঠান্ডা হাওয়ার দরকার। মনে মনে ভাবে। এক ঝলক ঠান্ডা হাওয়া পেলেই মন জুড়িয়ে যাবে। মিলিকে ফোন করতে পারবে। মিলির মুখটা মনে করতেই বিকেলটা যেন আপনিই ঠান্ডা হয়ে ওঠে। বেশ ঠান্ডা!!