নিবন্ধ। শিশুদিবস। ছন্দা চট্টোপাধ্যায়।
নিবন্ধ।
শিশুদিবস।
ছন্দা চট্টোপাধ্যায়।
আজ ১৫ই নভেম্বর।শিশুদিবস অতিক্রান্ত হলো।এখন রাত ঠিক একটা।
শিশুদিবস।সব শিশু–প্রাসাদে লালিত শিশু থেকে পথশিশু,সবার জন্যেই special একটা দিন কেটে গেল।তবু হতদরিদ্র শিশুরা,যারা শুধু নিজের পেট ভরানোর জন্যেই নয়,পরিবারকে সাহায্য করার জন্যেও বাধ্য হয় কাজ করতে,ভীষণ কষ্ট হয় আমার ওদের জন্য।তাই আমার লেখা ঐ শিশু শ্রমিকদের জন্যে।ওদের নিহত শৈশবের,তামস জীবনে সূর্যোদয়ের অপেক্ষায়—-
ভয়াবহ এক অপরাধ শিশুশ্রমকে জেনেশুনে ব্যবহার করা।তাই হে কবি,শিল্পী,সাহিত্যিক,এবং সমাজসচেতন বুদ্ধিজীবী সবাইকে বলি,নিজেকেও চাবুক মেরে বলছি বড়ো অসহায় লাগে।দরিদ্র অভিভাবকেরা যে বাধ্য,হাত-পা বাঁধা যে তাঁদের দারিদ্রের শিকলে।লজ্জা এই সমাজের,রাষ্ট্রের।এক দিনের এই উৎসব দিবস মৃৎপ্রতিমার মতো রাত পোহানোর আগেই বিসর্জিত হবে।নরম মাটি গলে মিশে যাবে দৈনন্দিনতার অভ্যস্থ যাপন-স্রোতে।কিশোরের হাতে ক্রিকেট ব্যাটের বদলে উঠবে এঁটো বাসনের পাঁজা।সদ্য কিশোরী ঠোঁটে রং লাগিয়ে কুপি হাতে সন্ধ্যাবেলা দাঁড়াতে বাধ্য হবে কানাগলির মুখে!যার পিঠে দগদগে ঘা হয়ে ফুটে আছে বেল্টের মারের দাগ!!পাড়ার ভালোকাকুকে দেখেএক শিশুকন্যা বিবর্ণ,ভয়ার্ত মুখে ছুটে ঘরে ঢুকে মুখ লুকোতে চাইবে মায়ের আঁচলে!!!
কার সামনে নতজানু হয়ে ক্ষমা চাইব আমরা?যৌননিগ্রহে বোবা হয়ে যাওয়া শিশুকন্যার কাছে? শীর্ণ, অপুষ্ট,দুর্বল হাতে ধুঁকতে ধুঁকতে চায়ের দোকানে বাসন মাজতে থাকা ঐ কিশোরটির কাছে?–চোখের দৃষ্টি যার অক্ষম ক্রোধে হয়ে উঠছে ক্রমশ নিষ্ঠুর; অবলীলায় যে তার রসনায় খেলাতে পারে অশ্লীল শব্দের জাগলারি?! অপরাধ জগতের অলিগলি চিনে নিয়ে হয়তো সে একদিন হবে শিশুদের শৈশব ও ভবিষ্যৎ হন্তারকদের বিচারক।কবে আসবে এমন দিন? আমাদের দুঃখী বাপ-মায়ের সন্তান রা থাকবে–“দুধে-ভাতে”–?