তৃতীয় দিনের দ্রষ্টব্য স্হান হলো বরসানা, নন্দগাও,টেরকদম,কোকিলাবন
তৃতীয় দিনের দ্রষ্টব্য স্হান হলো বরসানা, নন্দগাও,টেরকদম,কোকিলাবন।
ছোট পাহাড়ের মাথায়-৪২০ সিঁড়ি পেরিয়ে এলাম শ্রী রাধিকার বাড়ী,বরসানা।এখানের মানুষ আয়ান ঘোষকে নয় শ্রী রাধিকাকে “মুখিয়া”করেছিল অপূর্ব এই স্হানের ছবি দিলাম। গাড়ীর রাস্তা ও আছে তাই বয়স্কদের ওঠার অসুবিধা নেই। কিছুক্ষণ বসে আস্তে আস্তে এগোতে থাকলাম “ময়ূরকুঠী”র দিকে।শ্রী
কৃষ্ণ এখানে রাধার মানভাঙগিয়ে ময়ূরের সাজে সাজিয়ে ছিলেন,নিজেও সেজেছিলেন।কাছেই আছে দানঘর,মানঘর। সেখান থেকে নেমে একটু চা পান করে গেলাম নন্দগাও। শ্রী রাধিকার বাবা বৃষভানু এই স্হান বন্ধু নন্দ রাজাকে দিয়ে ছিলেন থাকার জন্য।তখন কংসের ভয়ে নন্দ রাজা ভীত। মন্দিরের গর্ভ গৃহে যশোদা, নন্দ রাজা, কৃষ্ণ,বলরাম। দুই পাশে দ্বার রক্ষী ধনসুখা,মনসুখা। এখানে প্রতিদিন গাইসেবা হয়। ভগবানের সময় গাই য়ের সংখ্যা ছিল চার হাজার আর এখন চারশো। এখানে ও সিঁড়ির সং খ্যা অনেক আর গাড়ীতে ওপরে যাওয়া যায় না।নেমে গেলাম ।পাশেই “যশোদা ঘাট” আর তার পাশেই “চরণ-পাহাড়ি”। এই শ্রী চরণ দর্শনের জন্য বারবার ছুটে যাই।যখন শ্রী কৃষ্ণ গরু চরাতেন তখন বাঁশি বাজাতেন এই টিলার উপর।বাম পায়ের শ্রী চরণ ও ডানপায়ের বুড়ো আঙুল এখানে প্রকট হয়েছে তাই এই ছোট্ট টিলার নাম “চরণ-পাহাড়ি”।
আমাদের গন্তব্য স্থল এরপর “টেরকদম”।এখানের গাছ সব টেরা অর্থাৎ নীত হয়ে আছে শ্রী কৃষ্ণের চরণে। এখানে তিনি গাই চরাতেন আর বাঁশী র সুরে সখীদের ডাকতেন,ভোজন ও করতেন। পরবর্তী সময় রূপ গোস্বামী এখানে সাধনা করেন।সাধনকালে একবার তাঁর দাদা সনাতন গোস্বামী এসেছিলেন দেখা করতে। সেই গল্প ই লিখছি।রূপ গোস্বামীর কাছে দুই খানি বাসি রুটি ছাড়া আর কিছুই নেই।যে টুকু জোটে আর কি।রূপ গোস্বামী ভাবছেন কি করবেন এমন সময় এক ছোট্ট বালিকি পায়েস নিয়ে আসেন ও বলেন “আপনারা হাত ধুয়ে আসুন, আমি অপেক্ষা করছি”। তাঁরা যখন হাত ধুয়ে এলেন তখন কাউকে দেখতে পেলেন না।স্বাদিষ্ট পায়েস আর রুটি দিয়ে ভোজন সারলেন।পরে বালিকার রূপের বর্ণনা দিয়ে ও সেই বালিকার খোঁজ মেলেনি।রূপ-সনাতনের বুঝতে অসুবিধা হলো না কার কৃপা। সেই দিন থেকে আজও সেখানে পায়েস ভোগ হয় এবং যে যায় সে সামান্য হলেও পায়েস প্রসাদ পায়। এখানে কৃষ্ণ-বলরাম বিরাজিত। এই স্হানের ছবি দিলাম।
এরপর গেলাম কোকিলাবন। শ্রী কৃষ্ণ এখানে কোকিলের সুরে শ্রী রাধিকাকে ডাকতেন।রাধারানী ও জানতেন কার কন্ঠ স্বর। এখানে বড়ঠাকুর(শনিমহারাজের) পুজো হয় মনে করা হয়,যাদের এই ঠাকুরের দশা চলছে বা বক্র দৃষ্টি আছে তাদের পক্ষে পুজো দেওয়া মঙ্গল জনক।সারাদিন কেটে গেল পুণ্য দর্শনে।