পুষ্পবৃষ্টি’ [বৃষ্টির স্বাধীনতা] মিতা বিশ্বাস বসু
‘পুষ্পবৃষ্টি’ [বৃষ্টির স্বাধীনতা]
মিতা বিশ্বাস বসু
————–
বিকেলের হাল্কা ঝড়ে ধূলো এলো উড়ে উড়ে,
মনে করায় হিসাবনিকাশ –
আমার উত্তরের জালনা দিয়ে
সাথে কিছু জল বিন্দু, হাওয়া, ছেঁড়া শুকনো পাতা-
মর্তে এভাবেই বুঝি আশীর্বাদ আসে
ঝরে পড়ে মহামানবদের মাথায়,
গায়ে-হাতে-পায়ে।
তখন নাম হলো ‘পুষ্পবৃষ্টি’!
রূপকথায়, ইতিহাসে পড়ি
আজ আমার মাথায়ও সেই বৃষ্টি এলো
স্বর্গ থেকে শুকনো ছেঁড়া পাতায় বয়ে,
এ কম কি বলো!
ঝড়, প্রস্তুত হলো নানাভাবে, সাজসজ্জায় সমৃদ্ধ হয়ে
ঘূর্ণি হাওয়া সাথে ধূলো, আঁধি মিলে মিশে
উত্তাল রূপ নিলো।
ঢেকে ফেললো পুরো আকাশকে-
মূহুর্তেই ঝকঝকে নীলাভ-সাদা আকাশটা
প্রথমে কালচে নীল তারপর আরও গাঢ হতে লাগলো।
ঝড়ের যে আজ বড্ড বাড় বেড়েছে, তছনছ করে দেবে সবটুকু।
দূরে কোথাও শঙ্খধ্বনি বাজলো, তার ক্ষীণ আওয়াজ টা দূর থেকেও শোনা যাচ্ছে।
মানুষ ভয় পায় এই তান্ডবকে-
এ’ ধ্বনি যুদ্ধ শুরুর না শেষের!
রূপকথার গল্পের সুখী সমাপ্তি বুঝি হয় না।
এই ঝড় সাধারণের বোধের বাইরে
ঝড় উড়িয়ে নিয়ে আসে বড়োবড়ো স্বাধীন বৃষ্টি ফোঁটারা
আস্তে আস্তে কবজা করে সে ঝড়কে
আয়ত্বে আনে যুদ্ধ কে।
এই বৃষ্টির বড়ো প্রয়োজন। সাধারণের আহ্বান কে, সে নস্যাৎ করে দিতে পারে না। পৃথিবীতে নেমে আসে বৃষ্টি, স্বাধীন ভাবে।
শান্তির-বৃষ্টি!
বৃষ্টি এলো ঝেঁপে
আয় রে বৃষ্টি ঝেঁপে,
আমি ধান রেখেছি মেপে-
আমার হৃদয় ওঠে কেঁপে!
ধূয়ে যাচ্ছে মলিনতা, ধূয়ে যাচ্ছে ধূসরতা। পৃথিবী পবিত্র হয়।
আশির্বাদ আসে রূপকথার তরী বেয়ে,
শুধু আশির্বাদ।
‘পুষ্পবৃষ্টি’ নাম নিয়ে!
[©মিতা বিশ্বাস বসু ]