মেঘ বৃষ্টির উপাখ্যান —– বর্ণালী ভট্টাচার্য্য
কবিতা – মেঘ বৃষ্টির উপাখ্যান
বর্ণালী ভট্টাচার্য্য
বৃষ্টির যে চিঠিগুলো সেই কবে
ভাসিয়ে দিয়েছি তিস্তার জলে
এসেছে কী ফিরে আজ জলভরা মেঘ হয়ে
‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে’
আমার মেঘমিতা !
কত মরুপ্রান্তর পেরিয়ে
এখন সে নিত্য প্রসবিনী
ঝরঝর করে ঝরে বৃষ্টি বীজ
মৃত্যুর শুষ্ক উপত্যকায়
বুনে চলে নবজন্মের নকশী কাঁথা ।
ধূসর পৃথিবীর মায়াময় স্নিগ্ধ শ্যামলিমা
সবুজ বনাঞ্চল, কূলছাপা নদী
জরাগ্রস্ত ধরায় সহসা প্রাণের শিহরণ
বাদল হাওয়ার দোলা
কচি সবুজ ধানক্ষেতে
ডালে ডালে পাতায় পাতায়
নতুন প্রাণের স্পন্দন ।
আবার যখন সে বিরহিণী প্রিয়ার
অশ্রুবিন্দু হয়ে
ফোঁটা ফোঁটা ঝরে পড়ে
নির্বাসিত বিরহী যক্ষ প্রাণে
রেবা নদীর তীর থেকে আসে
সকরুণ দীর্ঘশ্বাস মেঘের গায়ে,
অনন্তকালের বিরহ বেদনা জাগে
গাঁথা হয় চিরন্তন প্রেমের
অমর বর্ষাকাব্য ‘মেঘদূত ‘
তখন আনন্দ বেদনায়
মুখরিত সমস্ত চরাচর ।
সকাল বেলা জলে ভেজা
জুঁই এর হাসি, রাতের তারায়
হাসনুহানা মধুগন্ধ ছড়ায় ।
মল্লার এর গান ভেসে আসে
যেন কোন সুদূর অলকা থেকে
বৃষ্টিকথার রূপকথা ছুঁয়ে থাকে
ঘন অন্ধকার আষাঢ় রাতে।