বিরহ মিলনের শুরুর কথা কলমে : শুভা গাঙ্গুলি
বিরহ মিলনের শুরুর কথা
কলমে : শুভা গাঙ্গুলি
বিশ্বের যে কোন জায়গার বিখ্যাত প্রেমের গল্পগুলো সর্বদাই বিয়োগাত্মক।
কারণ আমরা কি তবে প্রেমের অসফলতায় বেশি খুশি হই , ঠিক তা নয় আমাদের হৃদয় প্রেমের আসনে তাদেরই দেখতে পছন্দ করে যারা ভালোবাসার জন্য ,সারা জীবন committed থাকার জন্য আত্মত্যাগ করে প্রেমের সাক্ষর রেখে যায়,
আমরা তাদের শ্রদ্ধার আসনে বসাই, জগতে তাদের প্রেমকাহিনী অমরত্ব লাভ করে।
সে সাহিত্যর জগতেই হোক কি বাস্তব জগত, তাই শেক্ষপীয়ের লিখেছেন চিরকালের প্রেমিক প্রমিকা রোমিও আর জুলিয়েট, আমরা জানি জুলিয়েটের আগে রোমিওর আর একজন প্রেমিকা ছিলো যাকে আমরা মনে রাখিনি কারণ সেখানে এই আত্মহরণের গরিমা ছিলোনা।
জুলিয়েট কে পার্টিতে দেখার পর আর ফিরে তাকায় নি রোমিও, কালের অতলে হারিয়ে গেছে রোজালিন, কারণ হয়তো সে ভালোবাসা স্বার্থহীন ছিলো না,হয়তো সে ভালোবাসায় তীব্রতা ছিলো না , ছিলো না অসীম আন্তরিকতা।
শুধু তাই নয়,আমাদের দেশেও এমন হাজার হাজার নজির আছে,যেমন এখনই মনে আসছে সোহিনী আর মহীওয়াল , সেই একই fragrance
নির্মম সমাজের বিরুদ্ধে প্রেমিকযুগলের আত্মবলিদান,সমাজের কাছে তাদের রক্তচক্ষুর কাছে তাদের কথিত রীতিনীতির কাছে কোনরকম আত্মসমর্পণ নয়।
আমাদের সমাজের মাতব্বর গণ অতিরিক্ত dogmatic ideas পোষণ করেন কোন কোন জায়গায় , সেখানেও ভালোবাসার অভিশাপে মৃত্যদণ্ড ঘোষণা করা হয়ে থাকে,
কেন এই প্রসঙ্গ? আমি কেন এত আলোচনা করছি? কারণ প্রেম চিরন্তন প্রেমের ক্ষমতা অসীম প্রেম মৃত্যঞ্জয়ী প্রেম জীবনের জীবনধারণের মূল উপাদান।
কিছুদিনপরেই আসছে Valentine’s Day মানে ভালোবাসার দিন, আশ্চর্যের বিষয় ভালোবাসার জন্য কি কোন নির্দিষ্ট দিন থাকে? কখনই নয়, ভালোবাসার জন্য মাত্র 365 দিন কখনই পর্যাপ্ত নয়? তাহলে?
ভালোবাসাকে স্মরণ করার দিন, ভালোবাসাকে প্রতিষ্ঠিত করার দিন,
ভালোবাসার আকাশচুম্বী ক্ষমতার প্রদর্শনের দিন।
তাহলে পিছু হেঁটে ফিরে যাই এক অন্ধকারাচ্ছন্ন কারাগারে, কত সাল সেটা? বলছি , ২৬৯ খ্রীষ্টাব্দ ,
তখনও সেই দীর্ঘদেহী করুণাময়ের প্রেমপূর্ণ বাণী প্রচার সাধারণ মানুষের কাছে জীবনধারণের বার্তা প্রচারিত হয় নি।কিন্তু কোন কোন মানুষ বুঝেছেন জীবন যাপনে সেই
মরুভূমির দেশের মানুষের বার্তা বড় প্রয়োজনীয়।
যেখানে চিঠি লিখছেন একজন খ্রীষ্টন পাদ্রী যিনি ভালোবাসার বাণী শোনাতেন, সেসময় রোমের সম্রাট ক্লডিয়াস ঘোষণা করলেন কোনো সৈন্য বিবাহ করতে পারবে না, তিনি গোপনে বিবাহ দিতেন তাদের খবর পেয়ে তাঁকে কারারুদ্ধ করলেন,মৃত্যদণ্ড দেওয়া হলো, আর ঠিক আগের দিন চিঠি লিখলেন তাঁর ভালোবাসার পাত্রী কারারক্ষকের অন্ধ মেয়েকে যার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, চিঠি শেষে সই করলেন
Your valentine
তারপর কেটে গেছে দীর্ঘকাল,কখন কালের নিয়মে আমাদের জীবনযাত্রায় ফিরে এসেছেন প্রেমের দিবস হয়ে,
হেলেন কেলার বলেছেন,
The best and most beautiful things in this world cannot be seen or even heard, but must be felt with the heart.
Helen Keller
সেদিনের প্রায়ান্ধকার ঘরে অকারণে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন অমর হলেন দুনিয়ার তাবৎ প্রেমিযুগলের কাছে,
তা হলে দেখছি প্রেম অমরত্ব প্রাপ্ত হলো সেন্টের মৃত্যুবরণে,
এখন যা হয় উৎসব উচ্ছাস আর আডম্বরের তলায় হারাতে বসেছে সেদিনের পবিত্র মধুর ভালোবাসার fragrance.
আজকের উৎসব মুখর সাত দিনে শুধুই কেনা বেচার উপাখ্যান শুধুই লাভ ক্ষতির পঞ্চনামা, ভালোবাস এখানে গৌণ, কথা দেওয়া নেওয়ার প্রতিশ্রুতি উহ্য,
কথা হলো কিকরে কখন Valentine’s Day সাতদিনে বিভক্ত হয়ে ছডিয়ে পড়লো,সে কথা য় বলতে হয় আবেগ উচ্ছাস নিয়ে নিলো আরো কিছুদিন ভালোবাসার দিন হিসাবে,
সাত দিনকে ভাগ করা বলো propose,Rose, kiss, hug , teddy bear, chocolates,and valentine day, যদিও ভালোবাসার খাতিরে মেনে নেওয়া যায় যে দিনগুলো সত্যিই meaningful তবুও মনে হয় commercial platform এ এরা ভালোই ব্যবসা করবে, তা হলে বলতে হয় ভলোবাসার প্রকাশ কি
আতিশয্য বহির্ভূত হতে পারে না।
হতে তো পারেই, সবাই তো আর অনেক অনেক উপহার দতেনার ক্ষমতা রাখে না ,তাই commercially লাভ ক্ষতি যাই হোকনা কেন , valentine dayর ভালোবাসার দিন চিরকাল অক্ষয় অমর হয়ে থাকবে।
ভালোবাসার দিনের সাথে আর একটা দিন কে যুক্ত করা হয়তো ঠিক হবে না , তাও জেনে রাখা ভালো , ২১ সে ফেব্রুয়ারী বলো breakup day. কোন কারণে যদি প্রমিক যুগল একে ওপরের সাথে যে কোন কারণেই হোক থাকতে অপারগ হয় তাহলে তারা এঁকে অপরের সাথে সৌহার্দ বজায় রেখেও দু জনের পথ আলাদা হতে পারে, ২১ শে ফেব্রুয়ারীকে তাই break up day বলা হয়ে থাকে।
ভালোবাসা এক স্বর্গীয় ঝরণা যা মেঘলা দিনে দৃশ্যমান নয় উজ্জ্বল সূর্যালোক যেখানে প্রতিফলিত হয়ে হাজার চকমকির আলো ছডায়, পূর্ণিমার রাতে যা ঝলমল করে ঝরে পড়ে, যা পবিত্র প্রেমের প্রতিক, এই ঝর্ণার জলে অবগাহন করলে মানুষ কলুষতাহীন হয় স্বার্থপরতা বিলাস হয়, ভালোবাসার এটাই তো মূলমন্ত্র।
পছন্দ হলে নিও