শাংগ্রীলা – একটি ম্যাজিক্যাল উপত্যকা – পর্ব-১ শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায়
শাংগ্রীলা – একটি ম্যাজিক্যাল উপত্যকা – পর্ব-১
শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায়
গহিন হিমালয়ের কোলে গিরিখাতের দুর্গমতম প্রদেশে গিরিবর্ত্মের আড়ালে একটি চিরসবুজ উপত্যকা ফুলের মত ফুটে আছে।সাধারণের কাছে নিষিদ্ধ, রহস্যে ঘেরা এই উপত্যকায় আজও পর্যন্ত কেউ পৌঁছতে পারেনি। সেনা-নায়ক, গুপ্তচর, প্রকৃতিপ্রেমিক সবাই নাকি ব্যর্থ। ৪৫ থেকে ৫০ ডিগ্রী উত্তর অক্ষরেখার মাঝে অবস্থিত এই আশ্চর্য ভূমি – যার নাম শাংগ্রীলা [সাংগ্রীলা] ঘাঁটি
দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে লেখা হিলটনের ‘দ্য লষ্ট হরাইজন’ উপন্যাসটি এই আশ্চর্য উপত্যকার প্রেক্ষাপটে রচিত। ১৯৩৩ সালে উপন্যাসটি চলচিত্রে রূপায়িত হওয়ার পর [যদিও কাহিনি কাল্পনিক ছিল] শাংগ্রীলাকে নিয়ে মানুষের কৌতূহল তুঙ্গে ওঠে। বার বার একটি রাষ্ট্র ভারতের ওই অঞ্চলকে আক্রমণ করেছে , শাংগ্রীলা অধিকারই ছিল বা আছে তাদের গোপন এজেণ্ডা- অসমর্থিত সূত্ররা একথা বলে।এর নক্সাটিও অতি গোপনে রাখা, কেউ আজও খুঁজে পায়নি।
অরুনাচলের সীমা থেকে তিব্বতের উত্তরপূর্ব থেকে পশ্চিমাংশ যে অঞ্চল-সেটিই শাংগ্রীলা। এই এলাকাটি ভূ-শূন্য এবং বায়ুশূন্য। চতুর্থ আয়াম [ফোর্থ ডাইমেনশন] দ্বারা প্রভাবিত, দেশ, কাল এবং নিমিত্তের ঊর্ধ্বে মহাযোগীদের তপ:প্রভাবে সৃষ্ট।৩য় এবং ৪র্থ আয়ামের সংযোগ স্থলে থাকায় এটি অদৃশ্য থাকে। এই রকম এলাকায় ব্ল্যাক হোলও থাকে। এইসব কৃষ্ণসুরঙ্গের মাধ্যমে অতীন্দ্রিয় লোকের সঙ্গে শাংগ্রীলা নাকি যুক্ত। ভূমি সংস্থানের মাহাত্মে যোগীরা হাজার হাজার বছর অফুরন্ত প্রাণশক্তি নিয়ে বেঁচে থাকেন ,আমাদের কাছে অদৃশ্যও থাকেন। ৩য় আয়ামের বাসিন্দা আমরা ওখানে যেতে পারিনা ,অক্সিজেনের অভাব বোধ হয়। ওখানে ৪০০বছর পার করা এক যোগী আছেন,কায়াকল্প যোগে এটি তাঁর ৪র্থ শরীর।
ছবি বা নাম দেবার সুযোগ আমি নিলুমনা। সিদ্ধযোগীরা আকশচারী, অবিশ্বাস্য ক্ষমতার অধিকারী। তিব্বতি ভাষায় লেখা ‘কালবিজ্ঞান’ এই জগতের কথা বলে। কেউ বলেন এটি বৈদিক যুগে সৃষ্ট, কেউ বলেন পৌরাণিক যুগে।পুরাণে এটির বানান দেখা যায়-শ্রাংগ্রীলা। স্বর্গীয় বাতাবরণে ডুবে থাকা এই অঞ্চল নাকি ২১কিমি লম্বা, সংকোচন-প্রসরণশীল এই এলাকা সময়ানুসারে গুটিয়ে ১কিমি পর্যন্ত রূপ নেয়। এই স্থান মহাযোগীদের চরম ইচ্ছাশক্তির প্রকাশ। মননশক্তির পূর্ণপ্রকাশ হোল বিজ্ঞান,ইচ্ছাশক্তির পূর্ণ বিকাশ হোল যোগ।পৃথিবীর বিজ্ঞানসাধনায় ইচ্ছে ও মনন আছে, কিন্তু শক্তি নেই, তাই এই বিজ্ঞান বিনাশের কারণ হবে ,ভবিষ্যৎবাণী এঁদের । ১১টি সিদ্ধমঠ নিয়ে এই ঘাঁটি। তাদের মধ্যে সবচেয়ে অলৌকিক মঠ যেটি,তাকে নিয়েই এবার লিখব ।
চলবে …