আন্নার কথা/ বানী চন্দ দেব
আন্নার কথা/ বানী চন্দ দেব
*********
আমি রান্নামাসি থুড়ি আান্নাকালি মন্ডল। সবাই আমাকে আন্না বলে ডাকে। এ বাড়ি ও বাড়ি দো বেলা রান্না ঘরে ডিউটি দে বেড়াই। কড়ায়ের ঝোল ডাল স্যুপ সারাদিন আমার সাতে কতা কয়, আঙুলের ডগায় ওট বোস করে। তা যায় বলো বাপু, মেস বাড়িতে কাজ করে বড়ো সুক। ছেলে পুলে গুলো কিচু বোজেও না, আবার আন্টি বলে ডাকে। আমার তো ভাই মজা লাগে রে। খানকয় রুটি আর সব্জি নে যাবে টিপিনে, আপিসে যাবে একমুট ভাত ডাল আর মাচ খেইয়ে, রইবার চিকেন ব্যস হই গেলো। অমন সাধের কাজ ফেলে ফেমিলি বাড়ি কে কাজ করে রে? সাতবার সব্জি ধোও, এঁচোড় কোটো, মোচা কোটো, চান্নি রাঁধো, হুঁঃ! নিকুচি করিচে। আর টাকার বেলায় তাও মেসবাড়িই ভালো বাবা। তা একটা রেকিচি ফেমিলি বাড়ি, দাদা বৌদি ভালো মানুষ দেয় থোয়। মেয়েটার সামনে বিয়ে, মেসবাড়ির ছেলেপুলেরা সাহায্যের বেলায় নেই, তবে দাদা বৌদি না করে না। কিন্তু একি দিন কাল এলো দেকো দিকিনি? করুনা না কি বলে একটা রোগ বেড়োয়চে, সব্বাই এক কতায় কাজ ছাড়ায়ে দেলে? দাদা বৌদি তাও ক’মাস মাইনেটা দে গেলো। মেসবাড়ি বন্দ করে ছেলেরা বাড়ি চইলে গেল। ঘরে বসে নাকি কাজ করবে। বুচা নাকি চিনারা নাকি এ রোগ ছড়াইছে…তাই? কি জানি বাবা অত বুজি না, কেবল বুজি আামাদের মতো অনেক লোকের কাজ নাই। ঘরের লোকটার চায়ের দুকান বহুদ্দিন বন্দ ছেলো। একন চলচে ঐ আর কি। সকাল বেলা বাসন মাজছিলাম কলতলায়, ছেলেটা এসে ফোনটা দেলে, বৌদি কল করিচে।
– কেমন আছিস? কাজ করছিস কোথাও? দেখনা ১ তারিখ থেকে আবার অফিস শুরু হচ্ছে। আমার আর সময় কোথায়? এতদিন তো চালালাম। তুই পারবি?
আনন্দে চোকে জল চলে এলো।
– হ্যাঁ বৌদি কেন পারবো না, তোমরা হলে আমার আপনার জন, কালই যাবো গো। বৌদির কতা কটা শুনে মনে হলো অনেক দিন নাইতে না পারা শুখো শরীরে কে যেন ঠান্ডা জল ঢেলে নাইয়ে দিলে, কি আরাম!
***